হাসান দ্বিতীয় মসজিদ
আরবি নাম :
مسجد الحسن الثاني
সাধারণ নাম : ক্যাসাব্লাঙ্কা হজ্জ।
ভৌগোলিক অবস্থান : ৩৩.৬০৮৫০৮
° উত্তর দ্রাঘিমাংশ ৭.৬৩২৫৮° পশ্চিম অক্ষাংশ।

মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কায় অবস্থিত একটি মসজিদ। মসজিদটি গড়ে তোলা হয়েছে আটলান্টিক সাগরের তীর ঘেঁষে। এটি মরক্কো  সর্ববৃহৎ এবং পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম মসজিদ।

এই মসজিসদটির নকশা করেছেন ফরাসি স্থপতি
Michel Pinseau এবং তৈরি করেছে Bouygues নামক প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুলাই এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ আগষ্ট নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে সিডার কাঠ আনা হয়েছে মরক্কোর মধ্য আটলাস পর্বতমালা থেকে, মার্বেল আনা হয়েছে মরক্কোর আগাডির প্রদেশ থেকে এবং মার্বেল আনা হয়েছে মরক্কোর তিজনিত প্রদেশ থেকে।

পুরো মসজিদ প্রকল্পটি ২২ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মিনার রয়েছে এই মসজিদে। এর উচ্চতা ২১০ মিটার (৬৮৯ ফুট)। এই মিনারের উপর থেকে একটি লেজার নির্দেশিত রয়েছে মক্কার দিকে। এই রশ্মি প্রায় ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল)অবধি যায়। এর গম্বুজ আছে একটি।

এর মূল নামাজ পড়ার ঘরটি নিচতলায়। ৬ হাজার মরক্কোর গুণী শিল্পীরা এর ভিতরের কারুকাজ করেছেন। এই ঘরের দৈর্ঘ্য ১০০০ মিটার (৩,৩০০ ফুট) এবং প্রস্থ ২০০ মিটার (৬৬০ ফুট)। পুরো কক্ষটি তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যভাগের উচ্চতা ৪০ মিটার (৩০ ফুট) এবং পাশের দুটি ভাগের উচ্চতা ২৭ মিটার (৪৯ ফুট)।

এই মসজিদের ভিতরে প্রায় ২৫ হাজার লোক এক সাথে নামাজ পড়তে পারে। তবে এর বাইরে নামাজ পড়ার জন্য বাড়তি ব্যবস্থা রয়েছে। এই অংশে প্রায় ৮০ হাজার লোক নামাজ পড়তে পারেন। এই হিসাবে এই মসজিদে এক সাথে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার লোক নামাজ পড়তে পারে।

মূল মসজিদের অংশ হিসাবে রয়েছে ৫২,১০০ বর্গফুট জায়গার উপর দু্‌ই তলা বিশিষ্ট ১টি মাদ্রাসা। এছাড়া আছে ১টি স্নানাগার, মরক্কোর ইতিহাসের সাথে সম্পৃক্ত ১টি যাদুঘর, ১টি সম্মেলন কক্ষ

এই মসজিদটি তৈরিতে খরচ হয়েছিল প্রায় ৫৮ কোটি ৪০ লক্ষ ইউরো। মরক্কোর মতো দরিদ্র রাষ্ট্রের জন্য এই বিপুল অঙ্কের ব্যয় প্রায় অসম্ভব ছিল। এই কারণে মরক্কোর প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে অর্থ নেওয়া হয়েছিল। এই অর্থ সংগ্রহের জন্য পুলিশ বাহিনীকে চাঁদাবাজি বাহিনীর মতো ব্যবহার করা হয়েছিল সে সময়। এই কারণে এই মসজিদ তৈরির সময়কার স্মৃতি, মরক্কোবাসীর কাছে সুখকর নয়। তারপরেও প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ না হওয়ার কারণে আরব, কুয়েত ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছিল।


সূত্র
http://en.wikipedia.org/wiki/Hassan_II_Mosque