রাশিয়ার আন্তর্জাতিক ফুটফল দল

উল্লেখ্য, ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সোভিয়েতের রুশীয় প্রজাতন্ত্র রুশ ফেডারেশন হিসেবে গঠিত হয় এবং একক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হয়। এই রাষ্ট্রটি বর্তমানে সাধারণভাবে রাশিয়া নামে পরিচিত।

রাশিয়ার জাতীয় ফুটবল দলের নাম রুশ ভাষায় Национа́льная сбо́рная Росси́и по футбо́лу)। রাশিয়ার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ফুটবল দল প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। দলটির পরিচালিত হয় রাশিয়ার ফুটবলে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা রুশ ফুটবল ইউনিয়ন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর লুঝনিকি স্টেডি য়াম ও লোকোমোটিভ স্টেডিয়াম এবং সেন্ট পিটার্সবার্গের পেট্রোভস্কি স্টেডিয়াম এ দলের নিজস্ব মাঠ।

রাশিয়া এ পর্যন্ত মোট তিনবার বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে জয় লাভ করে, বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। যোগ্যতা লাভের এই তিনটি বৎসর ছিল ১৯৯৪, ২০০২ এবং ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ। এছাড়া ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজক দেশ হিসেবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার অধিকার লাভ করে।

ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপে রাশিয়ার জাতীয় দল চারবার খেলেছে। এই খেলার বৎসর গুলো হলো- ১৯৯৬, ২০০৪, ২০০৮ এবং ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে। এই প্রতিযোগিতায় রুশ দলটির বড় কোনো সাফল্য নেই। কেবল ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপ গ্রুপ-পর্বের বাঁধা অতিক্রম করাটাই হলো- তাদের বড় সাফল্য।

১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের পরে রুশ ফেডারেশন বা রাশিয়া নামে রাশিয়ার জাতীয় ফুটবল দল প্রথমবারের মতো মেক্সিকোর বিপক্ষে আন্তর্জাতিক খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই আগস্ট মস্কোতে অনুষ্ঠিত এই খেলায় দলটি ২-০ ব্যবধানে বিজয়ী হয়। অবশ্য এই খেলায় অন্যান্য প্রজাতন্ত্রে জন্মগ্রহণকারী সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের খেলোয়াড়গণ অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাইপর্বের ৫নং গ্রুপে গ্রিস, আইসল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করে। উল্লেখ্য এই সময় যুগোস্লাভিয়া ফুটবল দলের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ গ্রুপে ৫টি দল ছিল। ৬টি জয় ও ২ ড্র করে গ্রিসের সাথে রাশিয়াও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল।

২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে রুশ দল সাতটি জয়, দুটি ড্র এবং একটিমাত্র পরাজয় নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে। এই বছর দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যৌথভাবে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করেছিল। এই প্রতিযোগিতায়  রাশিয়া ১নং গ্রুপে ছিল। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল স্লোভেনিয়া, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড, ফারো দ্বীপপুঞ্জ এবং লুক্সেমবার্গ। বিশ্বকাপের মূল পর্বের এইচ গ্রুপে বেলজিয়াম, তিউনিসিয়া ও জাপানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তারা। গ্রুপটি প্রতিযোগিতার সর্বাপেক্ষা দূর্বলতম গ্রুপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়ী হলেও জাপানের বিপক্ষে তাদের ০-১ ব্যবধানে পরাজয়ের ফলে মস্কোর রাস্তায় দাঙ্গা বেঁধে যায়। শেষ খেলায় ড্র হলেই পরবর্তী পর্বে উত্তোরণ ঘটবে। এ অবস্থায় বেলজিয়ামের বিপক্ষে খেলতে নেমে ৩-২ ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় রাশিয়ার।