চুনা পথার
চুনাপাথর এক ধরনের পাললিক শিলা।
চুনাপাথর রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জৈবিক উপায়ে গঠিত হয়। চুনাপাথর রাসায়নিকভাবে
ক্যালসাইট নামক পলির উপাদান দ্বারা গঠিত। আগ্নেয় কিম্বা পাললিক শিলার পরিবর্তনের
মাধ্যমে গঠিত হয় রূপান্তরিত শিলা। পরে জৈবিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় চুনাপাথর গঠিত
হয়। আর চুনাপাথরের তাপ-চাপ ও রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপান্তর ঘটলে মার্বেল নামক
রূপান্তরিত শিলা গঠিত হয়। স্তরায়ন তরঙ্গ ছাপ কর্দম ও জীবাশ্মের উপস্থিত চুনাপাথরে
দেখা যায়। কিন্তু চুনাপাথর রূপান্তরিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয় তার দানা সাধারণত বড় ও
কেলাসিত হয়। চুনাপাথর সিমেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
চুনাপাথরের মতই আগ্নেয় ও পাললিক শিলার রূপান্তরের মাধ্যমে গঠিত স্লেট মার্বেল
কোয়াটজাইট প্রভৃতি তৈরি হয়।
ভূ-পৃষ্ঠে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উপায়ে বিচূর্ণীভবন প্রক্রিয়া কাজ
করে। এসব প্রক্রিয়া কার্যকরণের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের বহিরাবরণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এ ক্ষয়িত
পদার্থসমূহ-ই পলি নামে পরিচিত। যান্ত্রিক বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয় প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট
চূর্ণ পলি থেকে সৃষ্টি হয় যান্ত্রিক পাললিক শিলা। যেমন কর্দম বেলে পাথর, নুড়ি পাথর
ইত্যাদি। রাসায়নিক বিচূর্ণীভবন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পলি থেকে উদ্ভব হয় রাসায়নিক পাললিক
শিলার। যেমন চুনাপাথর। আর উদ্ভিদ ও পানিতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণীর দেহাবশেষ
জৈবিক পলি সঞ্চিত হয়ে এবং জমাটবদ্ধ হয়ে গঠন করে জৈবিক পাললিক শিলার। যেমন কয়লা,
চুনাপাথর ইত্যাদি।
সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে নুড়ি পাথর, বেলে পাথর, কর্দম প্রভৃতি পাললিক শিলার
পাশাপাশি সমুদ্র নদী বা হ্রদের তলদেশে সঞ্চিত পলি দীর্ঘকাল ধরে জমাট বেঁধেও পাললিক
শিলা গঠন করছে। তাই বলা যায়, ভূ-পৃষ্ঠে প্রতিনিয়তই পাললিক শিলার গঠন প্রক্রিয়া
বিদ্যমান।