উল্লেখ্য পৃথিবী সূর্যকে আবর্তনের সময়, অক্ষরেখার বিচারে হেলে থাকে। সূর্য-পরিক্রমার সময় অর্ধেক সময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে বেশি সময় সূর্যের আলো ও তাপ পায়। একইভাবে বাকি অর্ধেক সময় দক্ষিণ গোলার্ধে বেশি সময় সূর্যের আলো ও তাপ পায়। ফলে পৃথিবীতে ঋতুর পরিবর্তন ঘটে। কর্কটক্রান্তির নিকটবর্তী বলে, বাংলাদেশকে কর্কটক্রান্তীয় দেশ বলা হয়।
সূর্যের এই তাপ ও আলো বেশি পাওয়ার বিচারে
দেখা যায়, একটি বিশেষ দিনে সূর্য উত্তর গোলার্ধে একটি বিশেষ অক্ষাংশ বরাবর সবচেয়ে
বেশি সময় তাপ ও আলো দেয়। এর অর্থ হলো, ওই দিন ওই সময় দিন সবচেয়ে বড় হয়। উত্তর
গোলার্ধের এই বিশেষ দিনটি হলো ২১শে জুন। এই দিনে দিবাভাগ হয় ১৪ ঘণ্টায় আর রাত্রি হয়
১০ ঘণ্টায়। এই দিনে সূর্য যে অক্ষাংশ বরাবর অবস্থান করে, সেই রেখাটিই হলো
কর্কটক্রান্তি রেখা।
২৩ ডিগ্রী ২৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড উত্তর অক্ষাংশ রেখাটিকে কর্কটক্রান্তি রেখা বর্তমানে
মান্য করা হলেও এটা বদলায়। প্রতি ৪১,০০০ বছরের একটি চক্রাকার পর্যায়ক্রমে ২১.৫
থেকে ২৪.৫ ডিগ্রীর মধ্যে এর অবস্থান বদলাতে থাকে। সেই হিসাবে বর্তমান পর্যায়ে
কর্কটক্রান্তি রেখার অবস্থান প্রতি বছর আধ সেকেন্ড করে কমে আসছে। এছাড়া ধীর
পরিবর্তন ছাড়াও আহ্নিক অক্ষটি ঘুর্ণনরত লাট্টুর মতই স্থায়ী না থেকে প্রিসেশন নামে
একটি বলয়াকার গতি এবং ন্যুটেশন নামে একটি দোদুল্যমান গতি পায়। এটা গ্রহের জন্য
স্বাভাবিক ব্যাপার। বিভিন্ন গ্রহে এর মান নানা রকম হয়। এই ন্যুটেশনের পর্যায়কাল
পৃথিবীর ক্ষেত্রে ১৮.৬ বছর এবং কৌণিক পরিমাণ প্রায় সাড়ে নয় সেকেন্ড।