কাস্পিয়ান সাগর
Caspian sea
মধ্য এশিয়ার একটি ভূবেষ্টিত সাগর। আয়তনের বিচারে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম আবদ্ধ জলাশয়।
এর উত্তরে কাজাখস্তান, পশ্চিমে আজারবাইজান,
দক্ষিণে ইরান এবং দক্ষিণ-পূর্বে তুর্কমেনিস্তান।
অনেক সময় একে পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এই সাগর এশিয়া ইউরোপের মাঝে, ককেসাস পর্বতমালার পূর্বে এবং স্তেপ ও মধ্য এশিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত। কারাবোগাজগল উপহ্রদ বাদে, এর পৃষ্ঠতলীয় ক্ষেত্রফল ৩৭১,০০০ বর্গ কিলোমিটার (১৪৩,২৪৪ বর্গ মাইল) এবং আয়তন ৭৮,২০০ ঘন কিলোমিটার (১৮,৭৬১ ঘন মাইল)। এর লবণাক্ততা প্রায় ১.২% (১২গ্রাম/লিটার) যা অন্যান্য সাগরের এক তৃতীয়াংশ।
এই সাগর উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ১,২০০কিমি (৭৫০মাইল)
জুড়ে বিস্তৃত, এর গড় প্রশস্ততা ৩২০কিমি (২০০মাইল)।
এছাড়া এর পানির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭মিটার (৮৯
ফুট) নিচু এবং দক্ষিণাংশের সমুদ্রতল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,০২৩
মিটার (৩,৩৫৬ ফুট) নিচু।
কাস্পিয়ান সাগর সামুদ্রিক মাছের ডিম ও তেল শিল্পের জন্য
বিশেষভাবে পরিচিত। তবে তেল শিল্পের বর্জ্য সাগরে
ফেলার কারণে এখানকার জীবের উপর খারাপ প্রভাব পড়ছে।
২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিকভাবে কাস্পিয়ান সাগর দিবস পালিত
হওয়া শুরু হয়েছিল। এই দিবসের মূল আয়োজকরা ছিলেন এই সাগরের তীরবর্তী দেশসমূহের দ্বারা
কাস্পিয়ান চুক্তি
এই সাগরের অধিকার নিয়ে এর তীরবর্তী দেশসমূহের, দীর্ঘ দিনের
বিতর্ক ছিল। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগষ্ট, কাস্পিয়ান সাগরের ‘আইনগত অবস্থান’ নিয়ে ইরান, রাশিয়া, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও আজারবাইজান একটি
চুক্তি সই করে। এর আনুষ্ঠানিক নাম-
‘কাস্পিয়ান সি কনভেশন’
এই চুক্তির মূখ্য বিষয়গুলো হলো-
- সাগর-সংলগ্ন
দেশসমূহের নিজস্ব জলসীমা নির্ধারণের অধিকার রাখা হয়েছে, উপকূলরেখা থেকে ১৫ নটিক্যাল মাইল। এর সঙ্গে আরো ১০ নটিক্যাল মাইলকে স্বতন্ত্র মৎস্য শিকার এলাকা অভিহিত করা হয়েছে।
সাগরের বাকি অংশ সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে উপকূলীয় দেশগুলো তাদের জলসীমার বাইরের প্রান্ত থেকে ৫০০ মিটার পর্যন্ত নিরাপত্তা অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
- চুক্তি স্বাক্ষরকারী পাঁচটি দেশ সম্মতির ভিত্তিতে সাগরের তলদেশ দিয়ে পাইপলাইন ও তার (কেবল) বসাতে পারবে। সাগরের তলদেশের সম্পদ আনুপাতিক হারে ভাগ হবে। চুক্তির নিরিখে দেশগুলো কাস্পিয়ান অর্থনৈতিক ফোরাম গঠন করবে।
এই সাগরে বাইরের কোনো দেশের সামরিক উপস্থিতি থাকতে পারবে না।
এছাড়া এ সাগর দিয়ে বাইরে কোনো দেশ কোনো সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করতে পারবে না। পাশাপাশি সদস্য দেশগুলোর কেউ কাস্পিয়ান সাগরে অবস্থিত নিজেদের কোনো সামরিক ঘাঁটি বাইরের কোনো দেশের কাছে হস্তান্তর করতে পারবে না।