অ (তদ্ধিত প্রত্যয়)
১। স্বার্থে বা অনাদরে শব্দের সাথে অ প্রত্যয় যুক্ত হয়। যেমন- কালকাল্ +অ।
২। অট বা ট প্রসারে এর সাথে অ প্রত্যয় যুক্ত হয়। যেমন- দাপ-ট্=দাপট্ +অ =দাপট।

 
 

অ (সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়)
অ (অচ্)। অস্ত্যার্থে যুক্ত আছে এমন অর্থ প্রকাশে এই প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়। যেমন- পাপ +অ (অচ্)=পাপ।
অ (অণ্)। সমাসযুক্ত পদের শেষে এই
প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়। যেমন- বৈমাত্র, সৌভ্রাত্র ইত্যদি। বিমাতৃ +অ (অণ্) =বৈমাত্র।
অ (টচ্)। সমাসযুক্ত পদের শেষে এই
প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়। যেমন- মহান যে রাজা=কর্মধারয় সমাস, সমাসান্তে অ (টচ্)>মহারাজ।
অ (ডট)। সংখ্যাবাচক এই
প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়। যেমন- বিংশতি +অ (ডট্)=বিংশ।
অ (ষ)। সমাসান্ত পদের শেষে ব্যবহৃত। যেমন- ত্রি মূদ্ধা যাহার=ত্রিমূদ্ধা সমাসান্তে অ (ষ)>ত্রিমূদ্ধ।
অ (ষ্ণ)। এই প্রত্যয়টি বিভিন্ন গ্রন্থে বিভিন্নভাবে লিখা হয়ে থাকে। যেমন-

অ (অণ্)ভাষা-প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ/সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়; বঙ্গীয় শব্দকোষ/হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
অ (অণ্, ষ্ণ)বাঙ্গালা ব্যাকরণ/ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
অ (ষ্ণ)সরল বাঙ্গালা অভিধান/সুবলচন্দ্র মিত্র।
অপত্যার্থে, গোত্রাপত্য অর্থে এর আরও একটি প্রকরণ পাওয়া যায়, এটি হলো অ (অণ, অঞ্)। সকলক্ষেত্রেই বর্তমানে প্রচলিত বাংলা ব্যাকরণগুলোতে এই প্রত্যয়টি অ (ষ্ণ) বা অ (ষ্ণ, অণ) লক্ষ্য করা যায়। অ (অণ্) নামে একটি প্রত্যয় অস্তার্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই এই প্রত্যয়কে বিশেষভাবে নির্দেশিত করার জন্য এই গ্রন্থে অ (ষ্ণ) গ্রহণ করা হয়েছে।

 এই প্রত্যয়টি যুক্ত হয়ে যখন কোন নূতন শব্দ সৃষ্টি হয়, তখন কিছু বিধি অনুসৃত হয়। এই কারণে এই প্রত্যয়জাত শব্দের অর্থ-নির্দেশ বাঞ্ছনীয়

১। বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। ।

মনু +অ (ষ্ণ, অপত্যার্থে) =মানব
বিরাগ +অ (ষ্ণ, ভাবার্থে) =বৈরাগ
পরিষদ +অ (ষ্ণ, সক্বন্ধার্থে) =পারিষদ।

২। শব্দের সাথে অ (ষ্ণ) প্রত্যয় যুক্ত হলে- আদ্য স্বরধ্বনির বৃদ্ধি ঘটে। যেমন-

অ স্থানে আ কশ্যপ +অ (ষ্ণ, গোত্রাপত্য অর্থে) =কাশ্যপ
ই স্থানে ঐ বিরাগ +অ (ষ্ণ, সম্বন্ধার্থে) =বৈরাগ
উ স্থানে ঔ সুরভি +অ (ষ্ণ, সম্বন্ধার্থে) =সৌরভ
ঋ, ঋৃ স্থানে আর্ স্মৃতি +অ (ষ্ণ, সম্বন্ধার্থে) =স্মার্ত
এ স্থানে ঐ হেমন্ত +অ (ষ্ণ, সম্বন্ধার্থে) =হৈমন্ত
এ্যা স্থানে ঐ ব্যাকরণ +অ (ষ্ণ, সম্বন্ধার্থে) =বৈয়াকরণ

৩। যে সকল পদের শেষ বর্ণটি উ-কার যুক্ত থাকে, সেসকল শব্দের উ-ধ্বনি আব ধ্বনিতে পরিণত হয়। এছাড়া এ্যা ধ্বনি ঐ ধ্বনিতে পরিণত হয়। যেমন-

মনু +অ (ষ্ণ, অপত্যার্থে) =মানব
যদু +অ (ষ্ণ, অপত্যার্থে) =যাদব
কুরু +অ (ষ্ণ, অপত্যার্থে) =কৌরব
ব্যাকরণ +অ (ষ্ণ, সক্বন্ধার্থে) =বৈয়াকরণ

৪। সমাসবদ্ধ শব্দের সাথে এই প্রত্যয় যুক্ত হলে- উক্ত শব্দের উভয় পদের আদ্য স্বরধ্বনির বৃদ্ধি ঘটে। যেমন-

পর যে লোক =পরলোক (কর্মধারয় সমাস)।
পরলোক + অ (ষ্ণ, সম্বন্ধার্থে) = পূর্বপদ পর>পার- পরপদ লোক>লৌকিক =পারলৌকিক