ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণ প্রকৃতি
ইংরেজি : Manner/Nature of Articulation
পূর্ব-পাঠ : ব্যঞ্জনধ্বনি

মানুষ বাগ্-প্রত্যঙ্গের সাহায্যে ধ্বনি তৈরি করে বটে, কিন্তু এতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে বাতাস। আর এই বাতাসের প্রবাহকে কার্যকরী করে ফুসফুস। এক্ষেত্রে ধ্বনি উৎপন্ন হতে পারে ফুসফুস দ্বারা তাড়িত বহির্গামী বায়ু প্রবাহ দ্বারা, কিম্বা ফুসফুসের সাথে ঊর্ধ্ব-কণ্ঠের বায়ু সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণের দ্বারা।

ফুসফুসের বাতাস স্বরতন্ত্রীর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং এর সাহায্যেই ধ্বনি তৈরি হয়। এই উৎপন্ন ধ্বনিসমূহ অন্যান্য বাগ্-প্রত্যঙ্গ দ্বারা সাধিত হয়ে থাকে। এই সাধিত ধ্বনিগুণের বৈচিত্র্যতার ভিতর দিয়েই উৎপন্ন ধ্বনিসমূহের পার্থক্য নিরুপিত হয়। স্বরধ্বনির ক্ষেত্রে বাগ্-প্রত্যঙ্গের বাধা হয় আংশিক, কিন্তু ব্যঞ্জনবর্ণের ক্ষেত্রে ঘটে সম্পূর্ণ বা সম্পূর্ণের মতো। ফুসফুসের চাপে মুখবিবরের দিকে প্রবাহিত বাতাসে বাধা সৃষ্টি করে যে ধ্বনি তৈরি করা হয়, তার সাধারণ নাম
ফুসফুস পরিচালিত বায়ুপ্রবাহ-জাত ধ্বনি (Pulmonic Airstream Sound)। পক্ষান্তরে কিছু ধ্বনি তৈরি করা হয় ফুসফুস-বিচ্ছিন্ন বায়ু প্রবাহের দ্বারা। স্বভাবতই এই ধ্বনিগুলিকে বলা হয়- ফুসফুস বিচ্ছিন্ন বায়ুপ্রবাহ-জাত ধ্বনি (Non-Pulmonic Airstream Sound)। ব্যঞ্জনধ্বনি উৎপন্নের ক্ষেত্রে বায়ু প্রবাহের দুটি ধরনই ব্যবহৃত হয়। তবে ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাগুলোতে এ দুটির ফুসফুস পরিচালিত বায়ুপ্রবাহ-জাত ধ্বনির ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি। যা হোক, ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণ প্রকৃতি বিশ্লেষণের দ্বিতীয় পর্যায়ে এই বিভাজনটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারি। এর ফলে নূতন যে বিভাজিত রূপটি দাঁড়ায় তা নিচের ছকের মতো।