অব্যয়ীভাব সমাস
বাংলা ও সংস্কৃত ব্যাকরণে বর্ণিত সমাস
বিশেষ। পাণিনি ব্যাকরণ থেকে এই সূত্র বাংলাতে গৃহীত হয়েছে।
সাধারণভাবে
বলা যায়- পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
সুনীতি চট্টোপাধ্যায় এই সমাসকে প্রাদি সমাসের পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর
প্রধান বৈশিষ্ট্য- এই সমাসের শুরুতে অব্যয় থাকে। তবে সকল
ক্ষেত্রে অব্যয়ের অর্থটি প্রাধান্য পায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপসর্গবাচক অব্যয় ব্যবহৃত
হয়।
অর্থের বিচারে অব্যয়ীভাব সমাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন-
- সামীপ্য (উপসর্গ উপ):
উপকণ্ঠ, উপকূল ইত্যাদি।
- সাদৃশ্য (উপসর্গ উপ):
উপগ্রহ, উপবন ইত্যাদি
- অভাব (উপসর্গ
নিঃ ): নির্ভাবনা, নিরুৎসাহ ইত্যাদি
- পর্যন্ত (উপসর্গ
আ): আসমুদ্রহিমাচল, আপাদমস্তক ইত্যাদি।
- অনতিক্রম্যতা (অব্যয়
যথা): যথারীতি, যথাবিধি
- অতিক্রান্ত [উপসর্গ
অতি]: অতিক্রান্ত, উদ্বেল
- বিরোধ [উপসর্গ প্রতি]:
প্রতিবাদ, প্রতিকুল
- সহায়ক [অনু]:
অনুকূল।
- পশ্চাৎ [উপসর্গ অনু]:
অনুগমন, অনুধাবন
- ক্ষুদ্রার্থে [উপসর্গ
অনু]: অনুচ্ছেদ
- ঈষৎ [উপসর্গ আ]:
আনতম আরক্তিম
- পূর্ণ [উপসর্গ
পরি্]: সম্পূর্ণ
- পূর্ণ [উপসর্গ সম্]:
সম্পূর্ণ
- অনুরূপ [উপসর্গ প্র):
প্রতিচ্ছায়া, প্রতিবিম্ব।
বীপ্সা অর্থে অব্যয়ীভাব হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কোনো শব্দ দুই বার ব্যবহৃত হয়ে সমাসবদ্ধ পদ তৈরি করে। এক্ষেত্রে শব্দের পূর্ব অব্যয় যুক্ত হয়। যেমন-
- প্রতি উপসর্গ : দিন দিন/প্রতিদিন
- অনু উপসর্গ: দিনে দিনে/ অনুদিন
- ফি উপসর্গ: বছর বছর/ফিবছর