কর্মধারয় সমাস

বাংলা ও সংস্কৃত ব্যাকরণে বর্ণিত সমাস বিশেষ। পাণিনি ব্যাকরণ থেকে এই সূত্র বাংলাতে গৃহীত হয়েছে। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে  এর ইংরেজি সমার্থক শব্দ হিসাবে বলা হয়েছে  Appositional Determinative Compound বা Descriptive Compounds। এর সাধারণ সংজ্ঞা হলো- পরস্পর অর্থ সম্বন্ধবিশিষ্ট বিশেষণ ও বিশেষ্য পদে কিংবা বিশেষ্য-বিশেষণ ভাবাপন্ন পদে সমাস হয় এবং যাতে উত্তরপদের অর্থ প্রধানরূপে প্রতীয়মান হয় তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন
         সৎ যে লোক= সৎলোক;   
মহান যে রাজা= মহারাজা ইত্যাদি।

বিষয়গত ও ভাবগত অর্থের বিচারে কর্মধারয় সমাস ৫ প্রকার। এই প্রকারগুলি হলো

. সাধারণ কর্মধারয়

পরস্পর অর্থ সম্বন্ধবিশিষ্ট বিশেষণ ও বিশেষ্য পদের সাধারণ অর্থে উৎপন্ন সমাস। যেমন
          নীল যে আকাশ=নীলাকাশ।
. মধ্যপদলোপী কর্মধারয়

ব্যাসবাক্যের মধ্যস্থিত পদ লোপ পেয়ে কর্মধারয় সমাস হলে তাকে মধ্যপসলোপী কর্মধারয় সমাস বলে। যেমন
         ছায়া প্রধান যে তরু= ছায়াতরু

         আয়ের উপর যে কর=আয়কর ।

৩. উপমান কর্মধারয়

উপমান পদের সাথে সাধার ধর্মের যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে। এই সমাসে বিশেষণ ও বিশেষ্য পদের মধ্যে অন্বয় ঘটে থাকে। যেমন
       রক্তের মতো লাল=রক্তলাল।

. উপমিত কর্মধারয়

উপমান ও উপমেয় পদের যে সমাস হয় তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে। এক্ষেত্রে সাধার ধর্মের উল্লেখ থাকে না। যেমন
        নর সিংহের ন্যায়= নরসিংহ;

        ফুলের ন্যায় কুমারী= ফুলকুমারী ।

. রূপক কর্মধারয়

উপমান ও উপমেয়কে অভিন্ন কল্পনা করে উপমান পদের সঙ্গে উপমেয় পদের যে সমাস হয়, তাকে রূপক কর্মধারয় সমান বলে। যেমন-
         বিদ্যা রূপ ধন= বিদ্যাধন;

         মন রূপ মাঝি= মনমাঝি।