তৎপুরুষ সমাস
বিভক্তির প্রকৃতি এবং ভাবগত অর্থের বিচারে এই সমাসকে ১০টি ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন- |
|
১. |
দ্বিতীয় তৎপুরুষ সমাস |
পূর্বপদের দ্বিতীয়া বিভক্তি ( কে, রে)
লোপ পায় বা ব্যাপিয়া অর্থ প্রকাশ করে এমন সমাসকে
দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলা হয়। |
|
তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস |
|
পূর্ব-পদের
তৃতীয়া বিভক্তি স্থানীয় অনুসর্গ (দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক) লোপ হয়ে যে তৎপুরুষ
সমাস হয়, তাকে তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- |
|
৩ |
চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস |
যে সমাসের পুর্বপদের চতুর্থী বিভক্তির(কে, রে) লোপ
হয় এবং নিমিত্তার্থ ভাব প্রকাশ করে তাকে চতুর্থী
তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- |
|
৪ |
পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস |
পূর্বপদের
পঞ্চমী বিভক্তি স্থানীয় অনুসর্গ (হতে, থেকে, চেয়ে) লোপ হয়ে যে সমাস হয় তাকে
পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- |
|
ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস |
|
পূর্বপদের ষষ্ঠী
বিভক্তির ( র, এর) লোপ পেয়ে যে সমাস হয় তাকে ষষ্ঠী
তৎপুরুষ সমাস হয়। যেমন-
|
|
৬ |
সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস |
পূর্বপদের
সপ্তমী বিভক্তি (এ, য়, তে) লোপ পেয়ে যে সমাস হয়, তাকে সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- |
|
৭ |
অলুক তৎপুরুষ সমাস |
পূর্বপদের
বিভক্তি লোপ না পেয়ে যে তৎপুরুষ সমাস হয় তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- |
|
৮. |
নঞ তৎপুরুষ সমাস |
যে তৎপুরুষ সমাস
পূর্বপদে নঞ (নয়, নাই, না) এই নিষেধার্থক অব্যয় থাকে
তাকে, নঞ তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন-
|
|
৯. |
উপপদ তৎপুরুষ সমাস |
উপপদের সাথে
কৃদন্ত পদের যে সমাস হয় তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- |
|
১০. |
প্রাদি সমাস |
তৎপুরুষ সমাসে
যদি প্র, প্রতি, উৎ প্রভৃতি উপসর্গ বিশেষ অর্থে পূর্ব পদ হয়ে বসে তবে তাকে
প্রাদি সমাস বলে। যেমন-
|
|
১১. |
সুপসুপা সমাস |
বিভক্তিযুক্ত পদের সাথে অন্য
বিভক্তিযুক্ত পদের সমন্বয়ে সৃষ্ট সমাসকে সুপসুপা সমাস বলে।
এই সমাসে ব্যাসবাক্যে ব্যবহৃত শব্দ সমস্তপদে ভিন্নরূপ লাভ করে।
যেমন-
পূর্বে ভূত ভাত= ভূতপূর্ব। |
তৎসম
‘তৎসম’
একটি প্রতীকী শব্দ। কারণ এই নামের সাথে ‘সংস্কৃত’
শব্দের কোনো সম্পর্ক নেই, কিন্তু পরিভাষা হিসাবে ‘তৎসম’
শব্দের মূল্য আছে। এখানে তৎ হলো তার, এই ‘তৎ’
দ্বারা
‘সংস্কৃত’
ভাষাকে নির্দেশিত করা হয়ে থাকে। তৎ (সংস্কৃত) এর সম (সমান)
–
এই অর্থে, তৎসম শব্দের
অর্থ দাঁড়ায় সংস্কৃতের সমান।
যে সকল শব্দ সংস্কৃত থেকে সরাসরি বাংলাতে প্রবেশ করেছে, তাদেরকে তৎসম শব্দ বলা হয়।
যেমনো–
চন্দ্র, সূর্য, সমুদ্র, পৃথিবী ইত্যাদি।
উচ্চারণ, শব্দ নির্বাচন ও বাক্য রীতির বিচারে সংস্কৃত ও বাংলার মধ্যে বিস্তর ফারাক
থাকলেও, সংস্কৃত শব্দ বাংলার সাথে স্বচ্ছন্দে খাপ খেয়ে যায়। তাই এখনো বিদেশী শব্দকে বাংলা মোড়কে আনতে গেলে
প্রথমে সংস্কৃত শব্দ ভাণ্ডারের দিকেই হাত বাড়াতে হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে- আমরা
শব্দ-সংগ্রহে বিমুখ হই না।