[শূন্য]
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্তা | সত্তা |}

বাংলাতে এর উচ্চারণ শূন্য। এছাড়া অনেকক্ষেত্রে একে গোল্লা বলা হয়। এটি
গণিতে ব্যবহৃত একটি পূর্ণঅঙ্কবাচক চিহ্ন। আধুনিক গণিতে যে ০-মান দশমিক গণিতের সৃষ্টি করেছে- তা ভারতবর্ষে বিকশিত হয়েছিল খ্রিষ্টীয় ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শতাব্দীর ভিতরে। গোড়ার দিকে ভারতবর্ষের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শূন্যমান বলতে 'খ' ধ্বনি ব্যবহার করতো। এই বিচারে মহাকাশীয় গোলক বা মণ্ডলকে নাম দেওয়া হয়েছিল খ-মণ্ডল। পরবর্তী সময়ে ভারতীয় গণিতবিদেরা এই শুন্যমানকে নাম দেন বিন্দু। এক্ষেত্রে একটু মোটাসোটা বিন্দু ব্যাবহার করা হতো। কালোক্রমে এর বিন্দুর ভিতরে শূন্যতা সৃষ্টি করে শূন্য চিহ্নের সৃষ্টি হয়েছিল। ভারতীয় শূন্য নামক গাণিতিক চিহ্ন এবং ধারণা প্রথমগ্রহণ করে আরবীয় বিজ্ঞানীরা। পরে তা স্পেন হয়ে ইউরোপ তথা সমগ্র বিশ্বে ছাড়িয়ে পড়ে।  নিচে কতিপয় উল্লেখযোগ্য লিখন পদ্ধতিতে শূন্যের জন্য নির্ধারিত চিহ্ন দেখানো হলো-

আরবি  চীন দেবনাগরী থাই বাংলা রোমান
٠ 〇,零 0

বাংলা শূন্য চিহ্নটি ভারতীয় আদ্য বিন্দুচিহ্নর রূপান্তর থেকে গৃহীত হয়েছে।

১ মানের পূর্ববর্তী পূর্ণ অঙ্কমান। ধনাত্মক ১ এর পরে ঋণাত্মক যে অঙ্কমান শুরু হয়, তার পূর্বে ০-এর অবস্থান। এই বিচারে ০ হলো- অ-ধনাত্মক ও অঋণাত্মক অঙ্ক। যেমন-

    -১  ০  +১

০-এর কোন ভগ্নাংশ হয় না। বীজগণিতে এর সাথে যে কোন রাশির যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করলে- ০-এর অবস্থান অনুসারে যে ফলাফলগুলি পাওয়া। তা হলো--

  n=যে কোন মান হিসাবে
  ০ +n=n  n+০=n 
  ০ -n=-n  n-০=n 
´n=০ n´০=০। এই বিচারে-  ০, ০, ০ ইত্যাদি =০
  /n=০ n/০= অনির্দেশিত।
  n=১  
 
দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতির দুটি অঙ্কের একটি ০, অপরটি ১। এর মূল অবস্থান এককের ঘর কিন্তু মানশূন্য। কিন্তু যে কোন অঙ্কের ডানে এই চিহ্ন বসলে তা ভিন্ন ভিন্ন মান প্রদান করে। যেমন-
  দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতি : ১০ = অষ্টক =২, দশমিক ২, ষোড়শাঙ্কিক=২
অষ্টক ১০= দশমিক=৯, ষোড়শাঙ্কিক=৯
দশমিক=১০, ষোড়শাঙ্কিক=১৭

মূলত গণনার ক্রমধারায় প্রতিটি অঙ্কের সাথে ১ যোগ করলে পরবর্তী অঙ্ক পাওয়া যায়। গণপদ্ধতির প্রকৃত অনুসারে অঙ্কমান ফুরিয়ে গেলে, নূতন সমন্বয় হয়ে আদ্য অঙ্ক হতে। যেমন- দশমিক পদ্ধতিতে অঙ্কের বিন্যাস হবে নিম্নরূপ-

০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ৯। এর পরে এই পদ্ধতিতে নূতন কোনো অঙ্ক যুক্ত করা যাবে না এবং সেই কারণেই এই পদ্ধতিতে আর কোনো প্রতীকও নেই। এই ক্ষেত্রে- ৯ এর পরে 'দশ' লিখার জন্য প্রথম আনা হয় '১'-কে কারণ আদ্য '০'-এর কোনো অর্থ নেই। এর পরে- আদ্য অঙ্ক '০'-কে বসান হয়। এবং দশমিক পদ্ধতির প্রথম সংখ্যা ১০ তৈরি হয়।

 
২. কোনো কিছুর অভাব, রিক্তদশা, অবর্তমান, ফাঁকা, খালি ইত্যাদি অর্থে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শূন্য হয়। তবে তা ০- শূন্য প্রতীকে ব্যবহার করা পরিবর্তে বর্ণমালায় লিখিত হয়ে থাকে। এই শব্দটি বিশেষ্য বা বিশেষণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যেমন- শূন্যহাত, শূন্যস্থান, জনশূন্য ইত্যাদি।  দেখুন : শূন্য
 

১.[এ্যাক] [Qk]
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

গণিতশাস্ত্রের বর্ণিত গণনা-নির্দেশক একটি উপাদান। এটি অঙ্কবাচক, বাংলা
চিহ্ন ১। বাংলাতে এর উচ্চারণ এ্যাক হলেও লিখা হয় এক। এই চিহ্নটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন রূপে লক্ষ্য করা যায়। নিচে কতিপয় উল্লেখযোগ্য লিখন পদ্ধতি অনুসারে 'এক' চিহ্নের নমুনা  দেখানো হলো-

আরবি  চীন দেবনাগরী থাই বাংলা রোমান ল্যাটিন
١ 一,弌,壹 I 1

আদি ব্রাহ্মীলিপিতে '১' চিহ্নটি ছিল আনুভূমিক রেখা।  চীনে এখনো এই চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। ৪০০-৫০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে,   বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লিপিতে এর দিক এবং আকার পরিবর্তিত হয়েছে। নিচে ব্রাহ্মীলিপি থেকে আধুনিক বাংলালিপিতে ১-এর জন্য ব্যবহৃত চিহ্নগুলি দেখানো হলো।

ব্রাহ্মী লিপি
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০- অব্দ
 গুপ্তলিপি
৪০০-৫০০ খ্রিস্টাব্দ
নেপালি রূপ
৮০০ খ্রিস্টাব্দ
দেবনাগরী বাংলা
,

অঙ্কবাচক ১ এর সর্বাধিক ব্যবহার গণিতে। এক্ষেত্রে বর্ণ-লিখিত রূপ, অর্থাৎ 'এক' ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু বর্ণ-লিখিত বিবরণের ভিতর উভয় ধরণের রীতিই ব্যবহৃত হয়। উভয় ক্ষেত্রে এই চিহ্ন যেমন- একটি আম বা ১টি আম ব্যবহৃত লিখা হতে পারে। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে এই সুনির্দিষ্ট অঙ্কবাচক চিহ্নটি একক ভাবে বা অন্য সংখ্যার গাঠনিক উপকরণ হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন- টেলিফোন নম্বর (০১৯১১০১৯৫৬৩)। গাড়ি নম্বর- ঢাকা মেট্রো ১২১, হোটেল, কক্ষ নম্বর- ১১।  পূরণবাচক শব্দ বা তারিখবাচক শব্দের সংক্ষেপ হিসাবে ১ ব্যবহৃত হয়। যেমন= প্রথম =১ম, পহেলা=১লা। এই জাতীয় পরিচয় জ্ঞাপক বিশেষ বা সুনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক বিশেষণে '১' ব্যবহৃত হলেও বিবরণমূলক লিখনে 'এক' ব্যবহৃত হয়। যেমন- এক দেশে এক রাজা ছিল। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে গণিতে ব্যবহৃত ১ চিহ্নটি অনেক সময় সাধারণ লিখার মধ্যেও ব্যবহৃত হয়।  দেখুন : এক।

১. বিশেষণ {নাম-বিশেষণ, সংখ্যাবাচক}।
কোন পরিমাপ বাচক শব্দের পূর্বে বসে উক্ত পদকে বিশেষিত করে। এই বিচারে এটি বিশেষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। 
যেমন- ১টি আম, ১টি টাকা। দেখুন : এক

২. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}
গণিতে ব্যবহৃত প্রথম মানের অঙ্কবাচকচিহ্ন এবং অঙ্কমান।  ধনাত্মক ১ এর অবস্থান ০ ও ২ এর মধ্যবর্তী এবং ঋণাত্মক ১ এর অবস্থান -২ ও ০ এর মধ্যবর্তী যেমন-
                                      
-২ -১ ০ ১ ২

গণিতশাস্ত্রের এটি পূর্ণঅঙ্কবাচক চিহ্ন। মানের বিচারের বেজোড়। এটি একাঙ্কিক পদ্ধতির একমাত্র অঙ্কমান। এটি দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতির দুটি অঙ্কের একটি ১, অপরটি ০। সকল গণন পদ্ধতিতেই এর মান ১।  অর্থাৎ
                 দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতি : ১ = অষ্টক =১, দশমিক ১, ষোড়শাঙ্কিক=১

গাণিতিক কার্যক্রমে ১-এর বিচারে , দশমিক পদ্ধতির প্রথম ১০ সংখ্যা পর্যন্ত গুণ ভাগ ও সূচক মান নিচে দেখানো  হলো-

গুণনের নামতা

  ১০
´ ১০

ভাগের নামতা

  ১০
¸ ১০
¸ ০.৫ .৩ .০২৫ .০.২ ১.৬৬ ১.৪২৮৫৭ .০১২৫ ০.১১ ০.১

সূচকের নামতা

  ১০
১০

২. [দুই]
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

গণিতশাস্ত্রের বর্ণিত গণনা-নির্দেশক একটি উপাদান। এটি অঙ্কবাচক বাংলা চিহ্ন ২, পূর্ণসংখ্যা (মৌলিক সংখ্যা), এটি শূন্যের পরে প্রথম জোড় সংখ্যা।

বাংলাতে এর উচ্চারণ লিখার অনুরূপ। এই চিহ্নটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন রূপে লক্ষ্য করা যায়। নিচে কতিপয় উল্লেখযোগ্য লিখন পদ্ধতি অনুসারে 'এক' চিহ্নের নমুনা  দেখানো হলো-

আরবি  চীন দেবনাগরী থাই বাংলা রোমান ল্যাটিন
٢ 二,弍,贰,貳 II 2

আদি ব্রাহ্মীলিপিতে '২' চিহ্নটি ছিল দুটি আনুভূমিক রেখা। চীনে এখনো এই চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। ৪০০-৫০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে,  এই রেখা দুটি প্রায় ৪৫ ডিগ্রী কাৎ হয়ে গেছে। নেপালি লিপিতে এর উপরে রেখাটি ক্ষুদ্র চিহ্ন হিসাবে উপরের দিকে যুক্ত হয়েছে। পরে উভয় রেখা যুক্ত হয়ে একটি একক চিহ্নে পরিণত হয়েছে। নিচে ব্রাহ্মীলিপি থেকে আধুনিক বাংলালিপিতে ২-এর জন্য ব্যবহৃত চিহ্নগুলি দেখানো হলো।

ব্রাহ্মী লিপি
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০- অব্দ
 গুপ্তলিপি
৪০০-৫০০ খ্রিস্টাব্দ
নেপালি রূপ
৮০০ খ্রিস্টাব্দ
দেবনাগরী বাংলা
,

অঙ্কবাচক ২ এর সর্বাধিক ব্যবহার গণিতে। এক্ষেত্রে বর্ণ-লিখিত রূপ, অর্থাৎ 'দুই' ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু বর্ণ-লিখিত বিবরণের ভিতর উভয় ধরণের রীতিই ব্যবহৃত হয়। উভয় ক্ষেত্রে এই চিহ্ন যেমন- দুইটি আম বা ২টি আম ব্যবহৃত লিখা হতে পারে। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে এই সুনির্দিষ্ট অঙ্কবাচক চিহ্নটি একক ভাবে বা অন্য সংখ্যার গাঠনিক উপকরণ হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন- টেলিফোন নম্বর (০১৯১১০২২২৬২)। গাড়ি নম্বর- ঢাকা মেট্রো ১২২, হোটেল, কক্ষ নম্বর- ২।  পূরণবাচক শব্দ বা তারিখবাচক শব্দের সংক্ষেপ হিসাবে ২ ব্যবহৃত হয়। যেমন= দ্বিতীয় =২য়, দোসরা=২রা। এই জাতীয় পরিচয় জ্ঞাপক বিশেষ বা সুনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক বিশেষণে '২' ব্যবহৃত হলেও বিবরণমূলক লিখনে '২' ব্যবহৃত হয়। যেমন- দুই জন্ মানুষ কখনো সম্পূর্ণরূপে এক হয় না। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে গণিতে ব্যবহৃত ২ চিহ্নটি অনেক সময় সাধারণ লিখার মধ্যেও ব্যবহৃত হয়।

১.  বিশেষণ {নাম-বিশেষণ, সংখ্যাবাচক}।
কোন পরিমাপ বাচক শব্দের পূর্বে বসে উক্ত পদকে বিশেষিত করে। এই বিচারে এটি বিশেষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। 
যেমন- ২টি আম, ২টি টাকা। দেখুন : দুই

২. ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

এই একক সত্তাকে প্রকাশ করার জন্য ২ প্রতীক ব্যবহার করা হয়। ধনাত্মক এর অবস্থান ৩ ও ১ এর মধ্যবর্তী এবং ঋণাত্মক ২ এর অবস্থান -৩ ও -১ এর মধ্যবর্তী যেমন-
                         
-৩ -২ -১ ০ ১ ২ ৩

গণিতশাস্ত্রের এটি পূর্ণঅঙ্কবাচক চিহ্ন। মানের বিচারের বেজোড়। এটি দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতির দুটি অঙ্কের একটি ১, অপরটি ০। সকল গণন পদ্ধতিতেই এর মান ১।  অর্থাৎ
                 দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতি : ১০ = অষ্টক =২, দশমিক ২, ষোড়শাঙ্কিক=২

গুণনের নামতা

  ১০
´ ১০ ১২ ১৪ ১৬ ১৮ ২০

ভাগের নামতা

  ১০
¸ ০.৫ ১.৫ ২.৫ ৩.৫ ৪.৫
¸ . .০৫ .৪ ০. ০.৮৫৭১ ০.২৫ .০ ০.২

সূচকের নামতা

  ১০
১৬ ৩২ ৬৪ ১২৮ ২৫৬ ৫১২ ১০২৪
১৬ ২৫ ৩৬ ৪৯ ৬৪ ৮১ ১০০

৩. [তিন]
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

গণিতশাস্ত্রের বর্ণিত গণনা-নির্দেশক একটি উপাদান। এটি অঙ্কবাচক বাংলা
চিহ্ন ৩, পূর্ণসংখ্যা (মৌলিক সংখ্যা), এটি শূন্যের পরে দ্বিতীয় বেজোড় সংখ্যা।

বাংলাতে উচ্চারণ তিন, কিন্তু লিখার ক্ষেত্রে তিন-এর ন-এর নিচে কোন হসন্ত চিহ্ন ব্যবহার করা হয় না। এই চিহ্নটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন রূপে লক্ষ্য করা যায়। নিচে কতিপয় উল্লেখযোগ্য লিখন পদ্ধতি অনুসারে 'এক' চিহ্নের নমুনা দেখানো হলো-

আরবি  চীন দেবনাগরী থাই বাংলা রোমান ল্যাটিন
٣ 三,弎,叁 III 3

আদি ব্রাহ্মীলিপিতে '৩' চিহ্নটি ছিল তিনটি আনুভূমিক রেখা। চীনে এখনো এই চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। ৪০০-৫০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে,  এই রেখা দুটি বক্র হয়েছে। ৮০০ অব্দের দিকে নেপালি লিপিতে প্রায় ৪৫ ডিগ্রী কাৎ হয়ে গেছে। দেবনাগরীতে এর রূপ দাঁড়িয়েছিল নিচের দিকে বর্ধিত খোঁচাসহ ইংরেজি 3এর মতো। নিচে ব্রাহ্মীলিপি থেকে আধুনিক বাংলালিপিতে ৩-এর জন্য ব্যবহৃত চিহ্নগুলি দেখানো হলো।

ব্রাহ্মী লিপি
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০- অব্দ
 গুপ্তলিপি
৪০০-৫০০ খ্রিস্টাব্দ
নেপালি রূপ
৮০০ খ্রিস্টাব্দ
দেবনাগরী কানাড়ি
১১০০ খ্রিস্টাব্দ
বাংলা

অঙ্কবাচক ৩ এর সর্বাধিক ব্যবহার গণিতে। এক্ষেত্রে বর্ণ-লিখিত রূপ, অর্থাৎ 'তিন' ব্যবহৃত হয় না। কিন্তু বর্ণ-লিখিত বিবরণের ভিতর উভয় ধরণের রীতিই ব্যবহৃত হয়। উভয় ক্ষেত্রে এই চিহ্ন যেমন- তিনটি আম বা ৩টি আম ব্যবহৃত লিখা হতে পারে। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে এই সুনির্দিষ্ট অঙ্কবাচক চিহ্নটি একক ভাবে বা অন্য সংখ্যার গাঠনিক উপকরণ হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন- টেলিফোন নম্বর (০১৯১১০৩৩৩৩)। গাড়ি নম্বর- ঢাকা মেট্রো ৩৩৩, হোটেল, কক্ষ নম্বর- ৩।  পূরণবাচক শব্দ বা তারিখবাচক শব্দের সংক্ষেপ হিসাবে ৩ ব্যবহৃত হয়। যেমন= তৃতীয় =৩য়, তেসরা=৩রা। এই জাতীয় পরিচয় জ্ঞাপক বিশেষ বা সুনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক বিশেষণে '৩' ব্যবহৃত হলেও বিবরণমূলক লিখনে '৩' ব্যবহৃত হয়। যেমন- তিন জন্ চৌপর দেয় দূর পাল্লা। বাংলা লিখন পদ্ধতিতে গণিতে ব্যবহৃত ৩ চিহ্নটি অনেক সময় সাধারণ লিখার মধ্যেও ব্যবহৃত হয়।

১. বিশেষণ {নাম-বিশেষণ, সংখ্যাবাচক}।
কোন পরিমাপ বাচক শব্দের পূর্বে বসে উক্ত পদকে বিশেষিত করে। এই বিচারে এটি বিশেষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। 
যেমন- ৩টি আম, ৩টি টাকা। দেখুন : তিন

২.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}

এই একক সত্তাকে প্রকাশ করার জন্য ৩ প্রতীক ব্যবহার করা হয়। ধনাত্মক এর অবস্থান ৪ ও ২ এর মধ্যবর্তী এবং ঋণাত্মক ৩ এর অবস্থান -৪ ও -২ এর মধ্যবর্তী যেমন-
                         
-৪ -৩ -১ ০ ১ ২ ৩ ৪

গণিতশাস্ত্রের এটি পূর্ণঅঙ্কবাচক চিহ্ন। মানের বিচারের বেজোড়। ত্রি-আঙ্কিক পদ্ধতি'র তৃতীয় মান, তবে তা এই পদ্ধতিতে ২ হিসাবে লিখিত হয়ে থাকে। উল্লেখ্য এটি ত্রি-আঙ্কিক পদ্ধতির ৩টি অঙ্ক হলো- ০, ১ এবং ১। নিচে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসারে এই মানের তালিকা দেওয়া হলো।
 
একাঙ্কিক পদ্ধতি = | | |
দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতি = ১১
ত্রি-আঙ্কিক পদ্ধতি=১০
অষ্টকাঙ্কিক =৩
দশমিক =৩
ষোড়শাঙ্কিক=৩

গুণনের নামতা

  ১০
´ ১২ ১৫ ১৮ ২১ ২৪ ২৭ ৩০

ভাগের নামতা

  ১০
¸ ০. ০. ১. ১. ২. ২. ৩.
¸ ১.৫ ০.৭৫ ০.৬৫ ০.৫ ০.২৮৫৭ ০.৩৭৫ ০. ০.৩

সূচকের নামতা

  ১০
২৭ ৮১ ২৪৩ ৭২৯ ২১৮৭ ৬৫৬১ ১৯৬৮৩ ৫৯০৪৯
২৭ ৬৪ ১২৫ ২১৬ ৩৪৩ ৫১২ ৭২৯ ১০০০

৪. [চার্]
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্ত | সত্তা |}বাংলা লিখন পদ্ধতিতে গণিতে ব্যবহৃত ৪ চিহ্নটি অনেক সময় সাধারণ লিখার মধ্যেও ব্যবহৃত হয়। যেমন- ৪টি আম। দেখুন লেখ্য রূপ  : চার  

গণিতে ব্যবহৃত এটি পূর্ণঅঙ্কবাচক চিহ্ন। নিচে কতিপয় লিখন পদ্ধতির দুই চিহ্ন দেখানো হলো-

আরবি  চীন দেবনাগরী থাই বাংলা রোমান ল্যাটিন
۴ 四,亖,肆 IV 4

আদি ব্রাহ্মীলিপিতে '৪' চিহ্নটি ছিল আজকের যোগ চিহ্নের মতো। কোনো কোনো লিখায় এই চিহ্নের মতো চাঁদের মতো চিহ্ন লক্ষ্য করা যায়। পাওয়া চীনে এই চিহ্নটি আনুভূমিক চারটি রেখার সাহায্যে । ১০০-৮০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে,  এই চিহ্নটির পরিবর্তন ঘটেছে। আধুনিক বাংলা ৪-এর আদল প্রথম লক্ষ্য করা যায় দেবনাগরী বর্ণে। কালক্রমে দেবনাগরীর এই রূপটি আধুনিক ৪-এ পরিণত হয়েছে। দেবনাগরীতে এর রূপ দাঁড়িয়েছিল নিচের দিকে বর্ধিত খোঁচাসহ ইংরেজি 3এর মতো। নিচে ব্রাহ্মীলিপি থেকে আধুনিক বাংলালিপিতে ৩-এর জন্য ব্যবহৃত চিহ্নগুলি দেখানো হলো।

ব্রাহ্মী লিপি
খ্রিস্টপূর্ব ৩০০- ১০০অব্দ
 কুশান লিপি
১০০-৩০০ খ্রিস্টাব্দ
গুপ্তলিপি
৪০০-৫০০ খ্রিস্টাব্দ
নেপালি রূপ
৮০০ খ্রিস্টাব্দ
দেবনাগরী বাংলা

১. বিশেষণ {নাম-বিশেষণ, সংখ্যাবাচক}।
কোন পরিমাপ বাচক শব্দের পূর্বে বসে উক্ত পদকে বিশেষিত করে। এই বিচারে এটি বিশেষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। 
যেমন-৪টি আম, ৪টি টাকা। দেখুন : তিন

২.
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { | অঙ্ক | পূর্ণসংখ্যা | সংখ্যা | সুনির্দিষ্ট পরিমাণ | পরিমা | বিমূর্তন | বিমূর্ত সত্তা | সত্তা |}

এটি জোড়া সংখ্যা এবং প্রাকৃতি সংখ্যা। একক সত্তাকে প্রকাশ করার জন্য এর জন্য ৪ প্রতীক ব্যবহার করা হয়। ধনাত্মক ৪ এর অবস্থান ৫ ও ৩ এর মধ্যবর্তী এবং ঋণাত্মক ৪ এর অবস্থান -৫ ও -২ এর মধ্যবর্তী যেমন-

  -৫ -৪ -৩ -২.... ২ ৩ ৪ ৫

গণন পদ্ধতি অনুসারে এই চিহ্নের মান হেরফের ঘটে। যেমন
দ্বি-আঙ্কিক পদ্ধতি : ১০০ = অষ্টক =৪, দশমিক ৪, ষোড়শাঙ্কিক=৪

বীজগণিতে এর সাথে যে কোন রাশির যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করলে- ৪-এর অবস্থান অনুসারে যে ফলাফলগুলি পাওয়া। তা হলো--

  ১. জোড় সংখ্যার সাথে ৪ যোগ করলে জোড় ফলাফল  পাওয়া যায়।
২. বেজোড় সংখ্যার সাথে ৪ যোগ করলে বেজোড় ফলাফল পাওয়া যায়।
৩. যে কোন সংখ্যা সংখ্যাকে ৪ দিয়ে গুণ করলে- ফলাফল চারগুণমানে প্রকাশিত হয়। নিচে এর কিছু নুমনা দেখানা হলো-

গুণনের নামতা

  ১০
´ ১২ ১৬ ২০ ২৪ ২৮ ৩২ ৩৬ ৪০

৪. শূন্য (০) ছাড়া যে অন্য যেকোন রাশিকে ভাগ করলে, তা চারভাগের ১ভাগ মান হিসাবে প্রকাশিত হবে। নিচে এর নমুনা তালিকা দেওয়া হলো।

ভাগের নামতা

  ১০
¸ ০.২৫ ০.৫ ০.৭৫ ১.১ ১.২৫ ১.৫ ১.৭৫ ২.২৫ ২.৫
¸ ১. ০.৮ ০. ০.৭১৪২ ০.৫ ০. ০.৪

৫. চার যে কোন ঘাত বা কোনো সংখ্যার চতুর্ঘাত হলে যে মান পাওয়া যায় তার নমুনা নিচে দেওয়া হলো-

সূচকের নামতা

  ১০
১৬ ৬৪ ২৫৬ ১০২৪ ৪০৯৬ ১৬৩৮৪ ৬৫৫৩৬ ২৬২১৪৪ ৫৯০৪৯
১৬ ৮১ ২৫৬ ২৫ ১২৯৬ ২৪০১ ৪০৯৬ ৬৫৬১ ১০০০