বর্ণালঙ্কার
যখন একই স্বর বা একাধিক স্বর বিশেষ বিন্যাসে ধ্বনিত হয়ে গীতকে শোভিত করে, তখন তা
বর্ণালঙ্কারের পরিণতি হয়। এক্ষেত্রে সুরের সাথে বর্ণালঙ্কারে পার্থক্য হলো- একাধিক
স্বর নিয়ে যখন সুর তৈরি হয়, তখন তা একটি কাঠামো তৈরি করে। কিন্তু বর্ণালঙ্কার যে
কোন সুরের কাঠামোকে শোভিত করে মাত্র মাত্র, কোনো পৃথক কাঠামো (সুর-কাঠামো) তৈরি করে
না। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে
যে কোন সঙ্গীতোপযোগী ধ্বনি স্কেল বা স্বরাষ্টকের ব্যবহারিক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত
হয়, তখন স্বর হিসেবে অভিহিত হয়। যেমন স র গ ম প ধ ন ইত্যাদি। প্রতিটি স্বরের রয়েছে
ধ্বনিরঞ্জক গুন। যার দ্বারা স্বরের এই রঞ্জকগুণ বিস্তার লাভ করে, তাকে বলা হয় বর্ণ।
এই কারণেই স্বর ও বর্ণের মধ্যে একটি গুণগত পার্থক্য তৈরি হয়। যেমন: স র গ ম প ধ ন -এর
প্রত্যেকটি স্বর, কিন্তু এর আরোহী রূপ প্রকাশ করার সময় আশ যুক্ত হয়ে হয়ে যায় আরোহী
বর্ণ। কারণ স্বরগুলো তার বদ্ধ দশা থেকে মুক্ত হয়ে বর্ণে পরিণত হয়। আবার একাধিক
স্বরের দ্বারা তৈরি হয় সুর। এক্ষেত্রে সুর আর বর্ণ সমার্থক হয়ে যায়। এই সূত্রে
সৃষ্ট হয় বর্ণালঙ্কার।
বর্ণালঙ্কারে পৃথক স্বর স্বরগুচ্ছ ১টি কলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন-
- এক স্বরের কলা: স র গ ম প ধ ন ইত্যদি
- দুই স্বরের কলা: সগ রম গপ ইত্যাদি
- তিন স্বরের কলা: সরগ রগম গমপ ইত্যাদি
- চার স্বরের কলা: সরগম রগমপ গমপধ ইত্যাদি
- পাঁচ স্বরের কলা: সরগমপ, রগমপধ মপধনর্স
ইত্যাদি
- ছয় স্বরের কলা: সরগমপধ রগমপধন ইত্যদি।
- সাত স্বরের কলা: সরগমপধন রগমপধনর্স
ইত্যদি
বর্ণালঙ্কারকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা
হয়। ভাগগুলো হলো- স্থায়ী বর্ণালঙ্কার, আরোহী বর্ণালঙ্কার, অবরোহী বর্ণালঙ্কার ও
সঞ্চারী বর্ণালঙ্কার।
- স্থায়ী বর্ণ: একই স্বরের মন্দ্র ও তারের ব্যবহারের যে অলঙ্কার
সৃষ্টি হয়। স্বরের অবস্থান অনুসারে এই অলঙ্কার ৪ ধরনের হতে পারে। যেমন-
- প্রসন্ন ভিত্তিক অলঙ্কার। প্রসন্ন হলো মন্দ্র স্বর। এই অলঙ্কারে
ব্যবহৃত তিনটি স্বরবিশিষ্ট অলঙ্কার। মন্দ্র স্বরের অবস্থান অনুসারে এই
অলঙ্কার চার প্রকার হতে পারে। যেমন-
- প্রসন্নাদি: যার আদি স্বর প্রসন্ন থাকে। অর্থাৎ নিম্নস্থান থেকে
ঊর্ধ্বে ওঠে। তাকে প্রসন্নাদি বলে। সসর্স [দুটি মন্দ্র]
- প্রসন্নমধ্য: যাতে মধ্যবর্তী স্বর প্রসন্ন হয়। যেমন- র্সসর্স
- প্রসন্নান্ত: যার অন্ত বা শেষ স্বর প্রসন্ন হয়। যেমন র্সর্সস
- প্রসন্নাদ্যন্ত: যার শুরু এবং শেষ প্রসন্ন স্বর থাকে। যেমন- সর্সস
- ক্রমরেচিত: এই অলঙ্কারে তিন, চার, পাঁচ স্বর বিশিষ্ট কলা পরপর
থাকে। তিনটি যখন মূর্চ্ছনার আদি স্বর প্রথম ও শেষ থাকে এবং
দ্বিতীয় স্বর মধ্যে থাকে, তখন তাকে ১টি কলা তৈরি করে। যেমন- সরস। এরপর
তৃতীয় ও চতুর্থ স্বরের মধ্যে থাকে, তখন তা দ্বিতীয় কলা তৈরি করে। যেমন সগমস।
এরপর পঞ্চম থেকে আরোহক্রমে তিনটি স্বর থাকে, তখন তাকে বলা হয় অপর কলা। যেমন-
সপধনর্স। সব মিলে ক্রমরেচিত বর্ণের কাঠামো দাঁড়ায়- সরস সগমস
সপধনস।
- প্রস্তার: এই অলঙ্কারে তিন, চার, পাঁচ স্বর বিশিষ্ট কলা থাকে। প্রতিটি কলার অন্তে যদি দীপ্ত থাকলে তাকে প্রস্তার বলা
হয়। উল্লেখ্য নাট্যশাস্ত্র মতে নিম্ন স্বর থেকে উপরে উঠলে তাকে দীপ্ত বলা
হয়েছে। এই অলঙ্কারের শেষে একটি তারা সা ব্যবহৃত হয়। এর প্রথম কলা সরর্স,
দ্বিতীয় কলা সগমর্স, অপর কলায় সপমধনর্স। সব মিলিয়ে এর কাঠামো দাঁড়ায়
সরর্স সগমর্স সপধনর্স।
- প্রসাদ: এই অলঙ্কারে তিন, চার পাঁচ স্বর বিশিষ্ট কলা থাকে। এই অলঙ্কার প্রস্তারের মতই তবে এর মন্দ্র ও তার স্বর স্থান
পরিবর্তন করে। যেমন- র্সরস র্সগমস র্সপধনস।
- আরোহী বর্ণালঙ্কার: এই অলঙ্কার আরোহের ক্রম ধারা অনুসরণ করে রচিত হয়।
এক্ষেত্রে সপ্তকের একই একাধিক স্বর একাধিক বার ব্যবহৃত হলেও ক্রমিক ধারা অনুসরণ
করে রচিত হয়। স্বর বিন্যাসের বিচারে আরোহী বর্ণালঙ্কার কয়েক ধরনের হতে পারে।
যেমন-
- বিস্তীর্ণ: এই অলঙ্কারে প্রতি কলায় থাকে ১টি স্বর। আদি স্বর থেকে পরবর্তী স্বরগুলো দীর্ঘ করে গাওয়া হয়।
যেমন- স র গ ম প ধ ন র্স
- নিষ্কর্ষ: এই অলঙ্কারে প্রতি কলায় থাকে ২টি স্বর। তবে একই স্বর দুই বার ব্যবহৃত হয়। যেমন-সস রর গগ মম পপ ধধ নন
র্সর্স
- গাত্রবর্ণ: এই অলঙ্কারে প্রতি কলায় থাকে ৩টি বা চারটি স্বর। যেমন- সসস ররর
গগগ মমম ধধধ ননন র্সর্সর্স।
- বিন্দু: প্রথম তিনটি স্বর নিয়ে তৈরি হয় একটি কলা, পরে একটি স্বরে কলা
উপস্থাপন করা হয়। যেমন- সসস র গগগ ম পপপ ধ ননন
- হসিত: এই অলঙ্কারে প্রথম স্বর একবার, দ্বিতীয় স্বর দুইবার, তৃতীয়
স্বর তিনবার ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় আরোহ হয়। যেমন- স রর গগগ মমমম পপপপপ ধধধধধধ
ননননননন
- প্রেঙ্খিত: প্রথম দুটি স্বর গাওয়ার পর, প্রথম কলার শেষ স্বর এবং পরবরতী
স্বর গাওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া সপ্তকের সব স্বর গাওয়ার প্রক্রিয়া। যেমন- সর রগ গম
মপ পধ ধন নর্স
- আক্ষিপ্ত: দুটি স্বর দিয়ে একটি কলা তৈরি করা হয়। যেমন- সগ। এর শেষ স্বর থেকে
একস্বর বাদ দিয়ে গাওয়া। যেমন- সগ গপ পন
- সন্ধিপ্রচ্ছাদন: প্রথমে তিনটি স্বর দিয়ে তৈরি করা হয়। এরপর প্রথম কলার শেষ
স্বরের সাথে পরবর্তী দুটি স্বর যুক্ত করে দ্বিতীয় কলা তৈরি কর হয়। এই প্রক্রিয়া
সপ্তকের সব স্বর গাওয়ার প্রক্রিয়া। যেমন- সরগ গমপ পধন
- উদগীত: প্রথম স্বর তিনবার উচ্চারণ করে প্রথম কলা তৈরি করা হয়। এরপর দ্বিতীয়
ও তৃতীয় স্বর নিয়ে তৈরি হয় দ্বিতীয় কলা। এই প্রক্রিয়া সপ্তকের সব স্বর গাওয়ার
প্রক্রিয়া। যেমন- সসস রগ মমম পধ
- উদ্বাহিত: আদি স্বর একবার, দ্বিতীয় স্বর তিনবার, পরবর্তী তৃতীয় ও
চতুর্থ স্বর দীর্ঘ উচ্চারণের পর, পঞ্চম স্বর তিনবার গাওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া
সপ্তকের সব স্বর গাওয়ার প্রক্রিয়া হলো উদ্বাহিত। যেমন- স ররর গ ম পপপ ধ
- ত্রিবর্ণ: আদি স্বর তিনবার, দ্বিতীয় স্বর দুই বার, তৃতীয় স্বর তিন বার। এই
প্রক্রিয়া সপ্তকের সব স্বর গাওয়ার প্রক্রিয়া। যেমন- সর গগগ মপ ধধধ
- বেণী: এটি নিকর্ষ অলঙ্কারের অনুরূপ। তবে শেষে নিষাদ গাওয়া হয় না। যেমন- সস
রর গগ মম পপ ধধ
- অবরোহী বর্ণালঙ্কার: গরস [উচ্চ স্বর থেকে নিম্ন স্বরে গমন]। মূলত আরোহী
বর্ণের অবরোহ গমনকে অবরোহী অলঙ্কার বলা হয়।
- সঞ্চারী বর্ণালঙ্কার: স্বরের বক্রবিন্যাসে যে অলঙ্কার সৃষ্টি হয়।
যেমন- সগর, গমন ইত্যাদি। স্বরবিন্যাসের বিচারে এই অলঙ্কারকে নিম্নোক্ত
ভাগে ভাগ করা হয়।
- মন্দ্রাদি: এই অলঙ্কারে আদ্য নিচু স্বর প্রথমে থাকে। যেমন- সগর
রমগ গপম মধপ পনধ
- মন্দ্রমধ্য: এই অলঙ্কারে আদ্য নিচু স্বর মধ্যে থাকে। যেমন- গসর
মরগ ধমপ নপধ
- মন্দ্রান্ত: এই অলঙ্কারে আদ্য নিচু স্বর শেষে থাকে। যেমন- রগস
গমর মপগ পধম ধনপ
- প্রস্তার: স্থায়ী বর্ণালঙ্কারের সাথে এর পার্থক্য আছে। সঞ্চারী
বর্ণালঙ্কার আদ্য নিচু স্বরের পর থাকে পরবর্তী তৃতীয় স্বর। মাঝে বসে
দ্বিতীয় স্বর। যেমন- সগ রম গপ মধ পন
- প্রসাদ: স্থায়ী বর্ণালঙ্কারের সাথে এর পার্থক্য আছে। সঞ্চারী
বর্ণালঙ্কারে আদ্য নিচু স্বর আদি ও অন্তে থাকে, মাঝে থাকে দ্বিতীয় স্বর।
যেমন- সরস রগর গমগ মপম পধপ ধনধ
- ব্যবৃত্ত: আদ্য নিচু স্বরের পর তৃতীয় স্বর বসে। এই দুটি স্বরের
মাঝে বসে তৃতীয় স্বর। এরপর পঞ্চম স্বর হয়ে আদ্যস্বরে ফিরে আসে। এই অলঙ্কারে
সব মিলয়ে ৫টি স্বর মিলে একটি কলা হয়। সগরমস রমগপর গপমধগ মধপনম।
- স্খলিত: সপ্তকের ধারাবাহিকতা থেকে স্খলিত হয়ে মাঝখান থেকে শুরু
হয়। এরপর বক্রবিন্যাসে চারট স্বর নিয়ে কলা তৈরি হয়। যেমন- মধপন নপধম
- পরিবর্ত্ত: আদ্য নিচু স্বরের পর, তৃতীয় ও চতুর্থ স্বর ব্যবহৃত
হয়। যেমন- সগম রমপ গধপ মধন
- আক্ষেপ: তিন স্বরের প্রতিটি কলা আরোহী রূপে থাকে। কিন্তু প্রথম
কলার পরে দ্বিতীয় কলা তৈরি হয়, প্রথম কলার দ্বিতীয় স্বর থেকে। যেমন- সরগ
রগম গমপ মপধ পধন
- বিন্দু: স্থায়ী বর্ণালঙ্কারের সাথে এর পার্থক্য আছে। সঞ্চারী
বর্ণালঙ্কারে প্রতিটি কলায় আদ্য নিচু স্বর তিনবার ব্যবহৃত হয় পরে দ্বিতীয় ও
আদ্যস্বর ব্যবহৃত হয়। যেমন- সসসরস রররগর গগগমগ মমমপম পপপধপ ধধধনধ
- উদ্বাহিত: আরোহী বর্ণালঙ্কারের সাথে এর পার্থক্য আছে।
সঞ্চারী বর্ণালঙ্কারে প্রতিটি কলা তৈরি হয় ৪টি স্বর দিয়ে। এই অলঙ্কারে
প্রথম তিনটি স্বর আরোহী, এর পরের দ্বিতীয় স্বর থাকে। যেমন- সরগর রগমগ গমপগ
মপধপ পধনধ
- ঊর্ম্মি: আদ্য স্বরের পরে তিনটি চতুর্থ স্বর, এর পরে আদ্য ও
চতুর্থ স্বর একটি থাকে। সব মিলিয়ে প্রতিটি কলায় থাকে ৬টি স্বর। যেমন-
সমমমসম, রপপপরপ গধধধগধ, মনননমন
- সম: এই কলা তৈরি হয় ৪টি স্বর দিয়ে। প্রতিটি কলা হয় আরোহী ও
অবরোহীতে বিন্যস্ত থাকে। ফলে দুটি কলা নিয়ে তৈরি কলাগুচ্ছ। যেমন সরগম মগরস।
দ্বিতীয় কলাগুচ্ছ তৈরি হয় প্রথম কলার দ্বিতীয় স্বর দিয়ে। যেমন- সরগম মগরস,
রগমপ পমগর, গমপধ ধপমগ ইত্যাদি।
- প্রেঙ্খ: চারটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। প্রতিটি কলার আদ্য স্বরের
পরের স্বর দুই বার আদ্য স্বর ব্যবহৃত হয়। যেমন- সররস রগগর গমমগ মপপম পধধপ
ধননধ
- নিষ্কূজিত: পাঁচটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। প্রতিটি কলার আদ্য স্বরের
পরের দ্বিতীয় স্বর আরোহী হয়। পরে তৃতীয় স্বর ব্যবহৃত হয়ে আদ্য স্বরে ফিরে
আসে। যেমন- সরসগস, রগরমর গমগপগ মপমধম পধপনপ
- শ্যেন: দুটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এই কলা আদ্য স্বরের পরে
পঞ্চম স্বর নিয়ে গঠিত হয়। যেমন- সপ. রধ গন মর্স
- ক্রম: এই অলঙ্কারে তিনটি কলা নিয়ে একটি গুচ্ছ্কলা তৈরি হয়। এই
গুচ্ছকলার প্রথমটি হয় দুই স্বর আরোহক্রমে বিন্যাসে থাকে। যেমন সর। দ্বিতীয়টি
তিনটি স্বর আরোহক্রমে সরগ, তৃতীয়টি চারটি স্বর আরোহক্রমে থাকে। সব মিলিয়ে
প্রথম প্রথম কলা হয়- সর সরগ সরগম। একই নিয়মে পরবর্তী গুচ্ছকলা শুরু হয়
দ্বিতীয় স্বর থেকে। এই বিন্যাসে পূর্ণ রূপটি হয়- সর সর সরগ সরগম, রগ রগম
রগমপ, গম গমপ গমপধ, মপ মপধ মপধন, পধ পধন পধনর্স।
- উদ্ঘাটিত: ছয়টি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এর প্রথমে প্রথম ও
দ্বিতীয় স্বর নিয়ে আরোহ হয়, পরে পঞ্চম স্বর থেকে দ্বিতীয় স্বর পর্যন্ত
অবরোহ হয়। যেমন- সরপমগর, রগধপমগ, গমনধপম
- রঞ্জিত: সাতটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এই কলার প্রথমে আদ্যস্বর,
তৃতীয় স্বর এবং দ্বিতীয় স্বর ব্যবহৃত হয়। পরে এই পুরো অংশটুকু পুনরায়
ব্যবহৃত হয়। সবশেষে ব্যবহৃত হয় আদ্যস্বর। যেমন- সগরসগরস, রমগরমগর,
গপমগপমগ, মধপমধপম, পনধপনধপ।
- সন্নিবৃত্তপ্রবৃত্ত: পাঁচটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এই কলার
প্রথমে আদ্যস্বর ও পঞ্চম স্বর ব্যবহৃত হয়, পরে চতুর্থ, তৃতীয় ও দ্বিতীয়
আরোহী হয়। যেমন- সপমগর, রধপমগ, গনমধপম।
- বেণু: পাঁচটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এই কলার প্রথমে আদ্যস্বর
দুইবার ব্যবহৃত হয়, পরে দ্বিতীয়, চতুর্থ ও তৃতীয় স্বর ব্যবহৃত হয়। যেমন-
সসরমগ, ররগপম, গগমধপ, মমধনপ।
- ললিতস্বর: পাঁচটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এই কলার প্রথমে
আদ্যস্বর ও পরে দ্বিতীয় চতুর্থ ব্যবহৃত হয় এবং দ্বিতীয় হয়ে আদ্যস্বরে ফিরে
আসে। যেমন- সরমরস, রগপগর, গমধমগ, মপনপম।
- হুঙ্কার: এর কলাগুলো আরোহ বিন্যাসে চলে। এর প্রথম কলা তিন স্বর
নিয়ে গঠিত হয়। এক্ষেত্রে আরোহ-অবরোহ বিন্যাসে আদ্য স্বরে ফিরে আসে। যেমন:
সরস, সরগরস, সরগমগরস, সরগমপমগরস, সরগমপধপমগরস
- হ্লাদমান: চারটি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এর স্বরবিন্যাস হলো-
আদ্য , তৃতীয়, দ্বিতীয় আদ্য। যেমন- সগরস, রমগর, গপমগ, মধপম, পনধপ
- অবলোকিত: ছয়টি স্বর দিয়ে কলা গঠিত হয়। এর আরোহে আদ্য তৃতীয়
চতুর্থ, অবরোহে চতুর্থ দ্বিতীয় আদ্য। যেমন- সগমমরস, রমপপগর, গপধধমগ, মধননপম
তথ্যসূত্র:
- নাট্যশাস্ত্র (চতুর্থ খণ্ড), ঊনত্রিশ অধ্যায়। ভরত। বঙ্গানুবাদ: সুরেশচন্দ্র
বন্দ্যোপাধ্যায় ও ড: ছন্দা চক্রবর্তী। নবপত্র প্রকাশন। কলকাতা। পঞ্চম মুদ্রণ
ডিসেম্বর ২০১৪।
- বৃহদ্দেশী। মতঙ্গ। অনুবাদ ও সম্পাদনা
রাজ্যেশ্বর মিত্র। প্রকাশক দেবাশীষ
ভট্টাচার্য। কলকাতা পুস্তক মেলা। ১৯৯২
- সঙ্গীতরত্নাকর। শার্ঙ্গদেব। সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অনূদিত।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। কলকাতা। দ্বিতীয় প্রকাশ। ২২ শ্রাবণ ১৪০৮।