গান্ধার
ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে স্বরসপ্তকের তৃতীয় স্বর। এর ব্যবহারিক নাম 'গা'। প্রাচীন ভারতেরর বৈদিক গান বা সামগানে এর নাম ছিল দ্বিতীয়। বেদোত্তরকালে এই স্বরটির লৌকক নাম গান্ধার নামে পরিচিতি লাভ করে।
 

মতঙ্গমুনি তাঁর বৃহদ্দেশী গ্রন্থে স্বরে নামগুলোর উৎস হিসেবে কোহলের মত উদ্ধৃত করে বলেছেন-
                   ষড়জং বদতি ময়ুর ঋষভং চাতকো বদেৎ             
                   অজা বদতি গান্ধারং ক্রৌঞ্চো বদতি মধ্যমম
                   পুষ্পসাধারণে কালে কোকিল: পঞ্চমং বদেৎ।
                   সর্বদা চ তথা দেবি ! নিষাদং বদতি গজ
 

অর্থাৎ ময়ূর ষড়জ স্বর, চাতক ঋষভ স্বর, ছাগ গান্ধার স্বর, সারস মধ্যম

এই স্বরটির অবস্থান তিনটি শ্রুতিতে। প্রাচীন ভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্র মতে গান্ধার দুই শ্রুতিতে অধিষ্ঠিত। এই দুইটি শ্রুতি হলো রৌদ্রী ও ক্রোধা। যখন মধ্যমের দুই শ্রুতি গ্রহণ করে গান্ধার চার শ্রুতিযুক্ত হয়। তখন এই চারটি শ্রুতি হয় রৌদ্রী, ক্রোধা, বজ্রিকা ও প্রাসরিণী। এই অবস্থায় প্রসারিণীতে গান্ধার অবস্থান করে এবং  সঙ্গীতরত্নকারের মতে তখন তাকে অন্তরগান্ধার বলা হয়। এর ফলে মধ্যম দুই শ্রুতির অধিকার পায়। বর্তমানে অন্তরগান্ধার-কেই শুদ্ধ গান্ধার বলা হয়।

 

শ্রুতি সংখ্যা ও নাম জাতি         সঙ্গীতপারিজাত  সঙ্গীতরত্নাকর প্রচলিত স্বর
৯. ক্রোধা আয়তা শুদ্ধ গান্ধার শুদ্ধ গান্ধার কোমল গান্ধার
১০. বজ্রিকা   দীপ্তা  তীব্র গান্ধার সাধারণ গান্ধার তীব্র কোমল গান্ধার
১১. প্রসারিণী আয়তা তীব্রতর গান্ধার অন্তর গান্ধার শুদ্ধ গান্ধার
১২. প্রীতি  মৃদু  তীব্রতম গান্ধার চ্যুত মধ্যম

তীব্র গান্ধার


আবার মধ্যমের এক শ্রুতি নিয়ে তিনটি শ্রুতির অধিকারী হলে এবং তখন বজ্রিকাতে গান্ধারের অবস্থান করলে, তখন তাকে সাধারণ গান্ধার বলা হয়। বর্তমানে এই গান্ধারকে তীব্র কোমলগান্ধার বলা হয়।

 


তথ্যসূত্র: