খেয়ালাঙ্গ
ভারতীয় রাগসঙ্গীতে কিছু সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য দ্বারা
খেয়ালকে অন্যান্য গান থেকে পৃথক করা হয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর সম্মিলিত নাম খেয়ালাঙ্গ। খেয়ালাঙ্গ শব্দটি মূলত ব্যবহার করা হয়, রাগপ্রধান গানের ক্ষেত্রে। এই জাতীয় গানে খেয়ালাঙ্গ বিবেচনা করা হয়, যা খেয়ালের অনুরূপ গান অথচ পুরোপুরি খেয়াল নয়, এই অর্থে।
 

খেয়াল ও খেয়ালাঙ্গে
নিচের সারণিতে খেয়াল এবং খেয়ালাঙ্গের গানের পার্থক্য তুলে ধরা হলো।

১. খেয়ালের বাণী অংশ দুটি স্তবকে গঠিত হয়। এর প্রথমাংশকে স্থায়ী এবং দ্বিতীয়াংশকে অন্তরা বলা হয়।
 
১. খেয়ালাঙ্গের গানে তুকের এরূপ কোনো বাধা ধরা নিয়ম নেই। মূলত রাগপ্রধান গানের পরিবেশন সময়কে বাড়ানোর জন্য চার তুকেরই করা হয়।
৩. খেয়াল একটি সুনির্দিষ্ট রাগে নিবদ্ধ থাকে। কখনো কখনো খেয়াল গায়ক মূল রাগের শ্রীবৃদ্ধির জন্য অন্য রাগের ছায়া আনেন। কিন্তু অচিরেই সে রাগকে বিদায় করে, মূল রাগে ফিরে আসেন। ১. খেয়ালাঙ্গের সুরে একটি রাগের একটি সুনির্দিষ্ট শৈলীতে বাঁধা থাকে।।
২. পূর্ণাঙ্গ খেয়াল পরিবেশনে, প্রথমে সংক্ষেপে আলাপ করা হয়। এরপর কোনো তালের বিলম্বিত লয়ে একটি গান করা হয়। এতে থাকে রাগের দীর্ঘ বিস্তার, নানা ধরনের তান এবং নানা ধরনের আলঙ্করিক উপাদান। দ্বিতীয় স্তরে দ্রুত লয়ের গান উপস্থাপন করা হয়। এই অংশে বিস্তারের চেয়ে তানের প্রাধান্য থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছোটো খেয়ালে বিস্তারের পর লয় বাড়িয়ে তান অংশ করা হয়। শেষের দিকে যথাসম্ভব লয় বৃদ্ধি করে দ্রুত তান করা হয়। অনেকে ছোট খেয়ালের ভিতর তবলা বাদকের সাথে সওয়াল-জবাব নামক অংশ পরিবেশন করে ভিন্নতর রস উপস্থাপন করেন। ১. খেয়ালাঙ্গের গানে এতসব থাকে না।
৩. খেয়ালের অনুষঙ্গী তাল যন্ত্র হলো তবলা। এই গানের সাথে একতাল, ত্রিতাল, আড়াচৌতাল, ঝুমরা ইত্যাদি তাল ব্যবহার করা হয়। তবে খেয়াল গানে তবলা শুধু অনুষঙ্গী নয়। কখনো কখনো তবলাকে প্রধান বাদ্য যন্ত্র হিসেবে বাজানোর সুযোগ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে খেয়াল গায়ক বিশ্রাম নেন বা তবলা বাদককে তাল নির্দেশ দেন। তবলা বাদক এই সময়ে নানা রকম বাদনশৈলী প্রদর্শন করে থাকেন। ১. খেয়ালাঙ্গের গানের বাদ্যযন্ত্র এবং তাল খেয়াল গানের মতোই