মুর্শিদি
বাংলা লোকগানের একটি অন্যতম বিষয়াঙ্গ। আরবি মুর্শিদ শব্দের অর্থ হলো আধ্যত্মিক গুরু। ইসলাম ধর্মমতে প্রধান ধর্ম গুরু হলেন, হযরত মুহম্মদ (সাঃ)। সুফি মতবাদে আধ্যত্মিক যে কোনো গুরুই মুর্শিদ। মুর্শিদের শিষ্যদের বলা হয় মুরিদ। মুর্শিদের  উদ্দেশ্যে গ্রথিত মুরিদের গান হলো মুর্শিদি গান। পূর্ববঙ্গে মুসলমান সুফি সাধকদের দ্বারা বাংলা কাব্য-সাহিত্যে মধ্যযুগে এই গানের উদ্ভব ঘটেছিল। এই কারণে এই গানের অধিকাংশই ভাটিয়ালি সুরে পাওয়া যায়। তবে বাউল সুরেও মুর্শিদি গান পাওয়া যায়।

এই গানে মুর্শিদের প্রতি ভক্তি এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজেকে নিবেদন করার কথা ব্যক্ত করা হয়। এই গানের সুর করুণ রসের ভাটিয়ালি। আল্লাহর করুণা পাওয়ার জন্য সুরের নিবেদনে করুণ রসকেই অবলম্বন করা হয়। এই কারণে এই গানের অধিকাংশই মধ্য বা বিলম্বিত লয়ে পরিবেশন করা হয়। অপেক্ষাকৃত দ্রুত লয়ের গানের সংখ্যা কম। করুণ রসের সঞ্চারের জন্য এই গানের সাথে সারিন্দা বাজানো হয়।

সুফি সাধকরা সন্ধ্যায় মঙ্গলগান হিসেবে পরিবেশন করে থাকেন। অনেক সময় সাংসারিক দুর্দশা মোচনের জন্যও এই গান করেন। মূলত মুর্শিদি গানের শিল্পীরা তাঁদের জীবন-যাপন এবং ধর্মাচরণের অঙ্গ হিসেবে এই গানকে ধারণ করেন। 

কয়েকটি
মুর্শিদি গানের উদাহরণ
    ১. নাও বাইয়া যাও কোথায় মাঝিরে/অকূল দরিয়া।
        আমার দোয়া যেন পৌঁছায় রাসুলের দরগায়।
    ২. মুর্শিদ পথ দেখাইয়া দাও
        আমি যে পথ চিনি নাগো সঙ্গে কইরা লও


সূত্র :