নিষাদ
ভারতীয় সঙ্গীত পদ্ধতিতে স্বরসপ্তকের সপ্তম স্বর।  সামগানে এর নাম ছিল ষষ্ঠ  বা অতিস্বার্য। লৌকিক নাম নিষাদ।  অশ্বের স্বর (হ্রেস্বা) থেকে এই স্বরের নাম গ্রহণ করা হয়েছিল। এই স্বরটির অবস্থান দুটি শ্রুতিতে। বৈদিক ষষ্ঠস্বর অতিস্বার্য স্বরই ছিল লৌকিক নিষাদ
 

মতঙ্গমুনি তাঁর বৃহদ্দেশী গ্রন্থে স্বরে নামগুলোর উৎস হিসেবে কোহলের মত উদ্ধৃত করে বলেছেন। এর মতে গজ তথা হাতির ডাক অনুসারে নিষাদের নামকরণ করা হয়েছিল।

ষড়জং বদতি ময়ুর ঋষভং চাতকো বদেৎ             
অজা বদতি গান্ধারং ক্রৌঞ্চো বদতি মধ্যমম
পুষ্পসাধারণে কালে কোকিল: পঞ্চমং বদেৎ।
 প্রাবৃট্‌কালে ভূ সম্প্রাপ্তে ধৈবতং দর্দুরী বদেৎ॥
সর্বদা চ তথা দেবি ! নিষাদং বদতি গজঃ॥

অর্থাৎ ময়ূর ষড়জ স্বর, চাতক ঋষভ স্বর, ছাগ গান্ধার স্বর, সারস মধ্যম স্বর, বসন্তকালে কোকিল পঞ্চম স্বর, বর্ষাকালে ভেক ধৈবত স্বর এবং হস্তি নিষাদ স্বর উচ্চারণ করে।

প্রাচীন কালে শ্রুতি ও স্বরের এরূপ স্বরের অন্তর্গত শ্রুতির যে বিভাজন এরূপ ছিল না। সম্ভবত খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীর শুরুর দিকে স্বরবিন্যাসের ভিত্তিতে ৩টি গ্রামের উৎপত্তি হয়েছিল। এগুলো হলো- ষড়্‌জ, মধ্যম ও গান্ধার গ্রাম। এ সময়ে এর শ্রুতি বিভাজন ছিল-

সঙ্গীত পারিজাত ও সঙ্গীতরত্নকরের মতে এর শ্রুতিগুলো ছিল-

 

শ্রুতি সংখ্যা ও নাম জাতি         সঙ্গীতপারিজাত  সঙ্গীতরত্নাকর প্রচলিত স্বর
২০. রম্যা মধ্যা  ধৈবত/পূর্ব নিষাদ  শুদ্ধ ধৈবত শুদ্ধ ধৈবত
২১. উগ্রা  দীপ্তা  তীব্র ধৈবত বা কোমল নিষাদ তীব্র ধৈবত
২২. ক্ষোভিণী মধ্যা  তীব্র নিষাদ/তীব্রতর নিষাদ শুদ্ধ নিষাদ কোমল নিষাদ 
. তীব্রা   দীপ্তা  তীব্র নিষাদ   কৈশিকী নিষাদ তীব্র কোমল নিষাদ
. কুমুদ্বতী  আয়তা তীব্রতর নিষাদ কাকলি নিষাদ শুদ্ধ নিষাদ
. মন্দা মৃদু  তীব্রতম নিষাদ চ্যুত ষড়্‌জ তীব্র নিষাদ

তথ্যসূত্র: