পাণিনীয় শিক্ষা
বৈদিক মন্ত্রের স্বর বিন্যাস এবং ছন্দ-নিয়ামক শাস্ত্রের সাধারণ শিক্ষা। এরূপ একটি শিক্ষা গ্রন্থ হলো পাণিনীয় শিক্ষা। পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী গ্রন্থে পাওয়া যায় স্বরের উৎপত্তি বিষয়ক একটি উপাখ্যান। এই উপাখ্যান থেকে জানা যায় যে, নৃত্ত শেষে ১৪ বার ঢাকে আঘাত করেছিলেন। এর ফলে বর্ণের উৎপত্তি হয়েছিল। ১৪বারের আঘাতে সৃষ্ট হয়েছিল ১৪টি সূত্র। এই সূত্রগুলো মহেশ্বর সূত্র (শিবসূত্রের) উৎপত্তি ঘটেছিল। পাণিনীয় শিক্ষায় বর্ণ-উৎপত্তির এই পৌরাণিক কাহিনি ছাড়া পাওয়া যায়- উদাত্ত, অনুদাত্ত ও স্বরিত নামক তিনটি স্বরস্থানের নাম। শিক্ষাকার একে 'স্বরস্ত্রয়' নামে অভিহিত করেছেন। স্বরের সময়জ্ঞাপক মাত্রামান তথা সময় জ্ঞাপক মান হিসেবে উল্লেখ করেছেন- হ্রস্ব (১ মাত্রা), দীর্ঘ (২ মাত্রা) ও প্লুত (৩ মাত্রা)। এছাড়া লয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন দ্রুত, মধ্য ও বিলম্বিত।

পাণিনীয় শিক্ষায় বলা হয়েছে 'স্বরস্ত্রয়' থেকে সাত স্বরের উৎপত্তি ঘটেছিল। বৈদিক শাস্ত্রীয় স্বরের নামের পরিবর্তে লৌকিক নাম ব্যবহার করেছেন। এই গ্রন্থ মতে-

উদাত্তে নিষাদগান্ধারাবানুদাত্তঋষভধৈবতৌ
স্বরিতঃ প্রভবা হোতো ষড়্‌জমধ্যমপঞ্চমাঃ॥

উদাত্ত থেকে - নিষাদ ও গান্ধার, অনুদাত্ত থেকে ঋষভ ও ধৈবত এবং স্বরিত থেকে ষড়্‌জ, মধ্যম ও পঞ্চমের উৎপত্তি হয়েছে। স্বরের উৎপত্তি স্থান হিসেবে ৮টি অধিষ্ঠানের উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো- উরঃ, কণ্ঠ, শির, জিহ্বামূল, দন্ত, নাসিকা, ওষ্ঠ ও তালু। এছাড়া স্বরে উৎস হিসেবে পশুপাখির কণ্ঠস্বরের উল্লেখ করেছেন।


তথ্যসূত্র: