এথেনা'র প্যাঁচা
Owl of Athena

গ্রিক পৌরাণিক কাহিনি মতে- জ্ঞানের দেবী এথেনা'র সাথী ছিল ক্ষুদ্রাকার প্যাঁচা। জ্ঞান বা বিদ্যাদেবীর প্রতীক হিসেবে অনেক সময় এই প্যাঁচাকে উপস্থাপন করা হতো। রোমান পৌরাণিক কাহিনিতে এথেনা'র সমতুল্য দেবী ছিলেন মিনার্ভা। তাই রোমানযুগে ইউরোপে 'এথেনার প্যাঁচা' হয়ে উঠেছিল 'মিনার্ভার প্যাঁচা'।

আক্কাদিয়ান দেবী ইশতার দেবী'র মূর্তিতে প্যাঁচা

আক্কাদিয়ান দেবী ইশতার দেবীর সঙ্গী ছিল যুগল প্যাঁচা। এই দেবীও ছিলেন যুদ্ধ ও প্রেমের দেবী। এর প্রতিপক্ষ দেবী ছিলেন, তাঁরই বোন এরেশ্‌কিগাল দেবী। এই দেবী ছিলেন পাতালপুরীর দেবী। এই রূপকতার মধ্য দিয়ে আক্কাদি্য়ানরা শুভ-অশুভ শক্তির ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। বাইবেলে বর্ণিত লিলিথকে অনেক সময় এরেশ্‌কিগালের সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে। অবশ্যই এই মূর্তিতে পাওয়া যায় শক্তি বা সিংহের প্রতীক হিসেবে যুগল সিংহের মূর্তি। ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনীতে  মূর্তিতে দুর্গার বাহন একক সিংহ। আর লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচা।

প্রাচীন গ্রিক চিত্রকর্মে এথেনা'র এথেনা এবং তার সাথে ক্ষুদ্রাকার প্যাঁচাকে দেখা যায়।
Brygos Painter (৪৯০-৪৮০ খ্রিষ্টাব্দ)-এর অঙ্কিত চিত্রকর্মে এই দৃশ্য দেখা যায়। পরবর্তী সময়ে মায়োনিয়ান প্রাসাদে এথেনা ও তার প্যাঁচা'র মূর্তি স্থাপিত হয়েছিল। মূলত প্যাঁচা অন্ধকারের ভিতরে শিকারের সন্ধান করে। তাই প্যাঁচাকে অন্ধকারে ভিতরে আলোর দিশারী পাখি হিসেবে দেখা হয়েছিল। অজ্ঞানতার জগতে জ্ঞানের আলো পৌঁছে দেবার দেবী এথেনা এবং সেখানে তাঁর সহযোগী প্যাঁচা। তাই গ্রিসে জ্ঞানের বাহন হয়ে উঠেছিল প্যাঁচা।

গ্রিক রৌপ্য মুদ্রায় এথেনার প্যাঁচা

গ্রিকদের হাতে পারশ্যবাহিনীর পরাজয়ের পর, ৪৭৯ খ্রিষ্টাব্দে এথেনা'র প্যাঁচাকে গ্রিক রৌপ্য মুদ্রায় ব্যবহার করা হয়েছিল। এই মুদ্রাতে প্রতীকের সাথে ব্যবহৃত হয়েছিল । মূলত এটি ছিল -এর সংক্ষিপ্ত রূপ। আধুনিক অনুবাদকদের মতে এর অর্থ হলো- এথেনয়ানদের। 

রোমানযুগে মিনার্ভা'র প্যাঁচা সম্মানিত ছিল জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে। ১৭৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মে যখন আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষে গুপ্ত সংগঠন ইলুমিনাতি প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এই সংগঠনের প্রতীক হিসেবে 'এথেনার প্যাঁচা' গ্রহণ করা হয়েছিল।



সূত্র :