বিভীষণ
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে- বিশ্রবার ঔরসে
নিকষা বা কৈকসী গর্ভে ইনি জন্মগ্রহণ করেন।
এঁর অপর দুই ভাইয়ের নাম রাবণ ও কুম্ভকর্ণ।
এঁর স্ত্রীর নাম ছিল সরমা।
পুত্রের নাম তরণীসেন ও কন্যার নাম ছিল কলা।
সুমালী কুবেরের
মত দৌহিত্র লাভের আশায় তাঁর কন্যা কৈকসীকে বিশ্রবা মুনির কাছে পাঠান।
ধ্যানস্থ অবস্থায় বিশ্রবা,
তাঁর কাছে
কৈকসীর আসার কারণ অবগত হয়ে- কৈকসীর সাথে মিলিত হন।
তবে ইনি ভবিষ্যৎ বাণী করেন যে,
অসময়ে মিলিত
হওয়ার কারণে কৈকসী রাক্ষসের জন্ম দেবেন।
এরপর কৈকসী উত্তম পুত্র প্রদানের জন্য বিশ্রবাকে অনুরোধ করলে,
বিশ্রবা
সন্তুষ্ট হয়ে বলেন যে,
তাঁর কনিষ্ঠ
পুত্র ধর্মানুরাগী হবে।
সেই বাণী মতে- কৈকসীর প্রথম দুই পুত্র রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রাক্ষস হয়ে জন্মান।
শেষ পুত্র বিভীষণ রাক্ষস হলেও ধর্মানুরাগী হন।
তপস্যার দ্বারা বিভীষণ চিরধার্মিক হওয়ার বর লাভ করেন। রাবণ সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে এলে, বিভীষণ সীতাকে ফিরিয়ে দেওয়ার উপদেশ দেন। রামের সাথে যুদ্ধে রাবণ ও রাক্ষসবংশের সমূহ ক্ষতি হবে এমন বক্তব্য রাবণের কাছে উপস্থাপন করলে রাবণ বিভীষণকে অপমান করেন। ফলে বিভীষণ তাঁর চারজন অনুগত রাক্ষস নিয়ে লঙ্কা ত্যাগ করে রামের সাথে যোগ দেন। ইনি নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারের গোপন অবস্থানে লক্ষণকে নিয়ে গিয়ে রাবণপুত্র মেঘনাদের হত্যায় সহায়তা করেন। এ ছাড়া ইনি লঙ্কার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাবণের শক্তি ইত্যাদি সম্পর্কে রামকে জানিয়ে দেন। যুদ্ধে রাবণ সবংশে নিহত হলে- রাম লঙ্কার শাসনভার বিভীষণকে প্রদান করেন। এই সময় ইনি রাবণের স্ত্রী মন্দোদরীকে বিবাহ করেন। রামের মহাপ্রস্থানের সময় বিভীষণ অযোধ্যায় উপস্থিত হলে- ইনি বিভীষণকে আশীর্বাদ করেন।