বিশ্বদেব
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে–
ইনি সর্বদেব
হিসাবে অভিহিত হয়ে থাকেন।
ঋগ্বেদে দেবতাদের সংখ্যা একাধিক,
কিন্তু এরা
সম্মিলিতরূপে কাজ করেন।
এঁদের সমবেত দেবশক্তি এক।
ঋগ্বেদে প্রধানত দেবতাদের এই সমবেত মহতী ঐশীশক্তির একত্রে পূজার কথা বলা হয়েছে।
বেদে দেবতা দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রথম অর্থে দেবতারা সিদ্ধ এবং তাঁরা অসংখ্য।
দ্বিতীয় অর্থে দেবতা সিদ্ধ পুরুষগণের মিলিত ঐশীশক্তি এবং তারা এক।
অসংখ্য দেবতার সমবেত ঐশীশক্তির নাম বিশ্বদেব বা ব্রহ্ম।
তাই ঋকবেদে বর্ণিত অগ্নি,
বিষ্ণু প্রভৃতি
উপাস্য দেবতারা সেই মহাশক্তির নামান্তর মাত্র।
মানুষের একাদশ ইন্দ্রিয় দ্বারা একই দেবতাকে বিভিন্ন প্রকারে একাদশ বার অনুভব
করা যায় বলে এক দেবতা একাদশ স্থান ও ত্রিস্থান ভেদে ৩১১=৩৩।
পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়য়,
পঞ্চ
কর্মেন্দ্রিয় এবং মন নামক উভয় ইন্দ্রিয়ের মিলিত যোগফলই এই একাদশ।
এই একাদশ পথে,
একাদশ আকারে,
দেবশক্তি
আমাদের আত্মার উপর কাজ করে।
তাই ইন্দ্রিয়গোচর দেবতার সংখ্যা একাদশ।
এই একাদশ দেবতারা আবার স্বর্গেও অবস্থিত,
অন্তরীক্ষেও
অবস্থিত এবং পৃথিবীতেও অবস্থিত–
এই কল্পনা দ্বারাই ঋগ্বেদের দেবতার সংখ্যা ৩৩।
মহাভারতে বিশ্বদেবের সংখ্যা ১০ জন হিসাবে উল্লেখ আছে।[সৃষ্টিবর্ণন
|
অনুক্রমণিকাধ্যায় | আদিপর্ব, মহাভারত]।
তৈত্তিরীয় সংহিতায়,
শতপথ ব্রাহ্মণে,
ঐতরেয়
ব্রাহ্মণে এই ৩৩ দেবতার নাম ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
বিষ্ণুপুরাণে বিশ্বদেবের সংখ্যা দশ ও তেত্রিশ।
পরে অন্যান্য পুরাণে এই ৩৩ সংখ্যা ৩৩ কোটিতে পরিণত হয়েছে।
এই সংখ্যা বহুত্ব জ্ঞাপকমাত্র।
এককেই বহুরূপে ও বহুর মধ্যেও এককে দেখবার সংকেত।