নর-নারায়ণ
১.
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে– নর
ও নারায়ণ নামক দুইজন প্রাচীন ঋষি ছিলেন।
ধর্মের ঔরসে অহিংসার গর্ভে এঁরা জন্মগ্রহণ করেন।
এঁরা যৌবনে পদার্পণ করার পর,
একটি অতি দুর্গম
পর্বতে গিয়ে কঠোর তপস্যা করা শুরু করেন।
এঁদের তপস্যায় দেবতারা ভীত হয়ে–
এঁদের তপস্যা
ভাঙার জন্য উদ্যোগ নেন।
ইন্দ্র নানা ভাবে চেষ্টা করে কৃতকার্য না হয়ে,
কিছু অপ্সরা
পাঠিয়ে দুই জনকে প্রলুব্ধ করবার চেষ্টা করলেন।
নর-নারায়ণ এতে কোনরূপ বিচলিত না হয়ে নিজেদের তপোবল দেখাবেন বলে মনস্থির করেন।
প্রথমে নারায়ণ একটি ফুল নিয়ে নিজের উরুর উপর স্থাপন করা মাত্র একটি সুন্দরী অপ্সরা
বেরিয়ে এল।
এই অপ্সরার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ইন্দ্র-প্রেরিত অপ্সরারা লজ্জায় ও দুঃখে স্বর্গে
ফিরে যান।
নারায়ণের উরু থেকে উৎপন্ন হয়েছিল বলে–
এই অপ্সরার নাম রাখা হয়েছিল উর্বশী।
দেবতাদের সম্মুখে এইরূপে এই অপ্সরার সৃষ্টিতে ইন্দ্রাদি দেবগণের গর্ব খর্ব হল।
পরে নারায়ণ ইন্দ্র-প্রেরিত অপ্সরাদের পরিচর্যার জন্য কয়েক সহস্র সুন্দরী নারী
সৃষ্টি করলেন।
অপ্সরারা এই ব্যাপারে বিস্মিত হলে,
নারায়ণ উর্বশীকে
তাঁদের হাতে সমর্পণ করেন এবং তিনি উর্বশীকে নিয়ে ইন্দ্রের কাছে ফিরে যেতে বলেন।
এরপর অপ্সরা নানা অনুনয়-বিনয় করে,
নারায়ণের
সান্নিধ্য প্রার্থনা করলেও তাঁরা প্রত্যাখ্যাতা হন।
এই নর ও নারায়ণ দ্বাপরের শেষভাগে অর্জুন ও কৃষ্ণরূপে জন্মগ্রহণ করেন।
২.
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে–
শরভরূপী
মহাদেব তাঁর দাঁতের আঘাতে নরসিংহকে দুইভাগে ভাগ করেছিলেন।
এর নররূপ দেহার্ধ থেকে নর আর সিংহরূপ দেহার্ধ হতে মহাতপা নারায়ণের জন্ম হয়েছিল।