ঋষি
হিন্দু
মতে- যিনি জ্ঞানমার্গ অবলম্বনে সংসার ত্যাগ করতে পারেন তিনিই ঋষি।
অথবা পরমার্থ তত্ত্বে যিনি সম্যক দৃষ্টি রাখেন তিনিই ঋষি।
তবে মন্ত্রদ্রষ্টা মুনি,
বেদমন্ত্র-রচয়িতা,
তাপস,
জ্ঞানী,
সাধু,
তন্ত্রোক্ত মন্ত্রের উপাসনায় সিদ্ধ ইত্যাদি গুণের অধিকারীরাই ঋষি নামে অভিহিত হয়ে
থাকেন।
হিন্দু শাস্ত্রমতে ঋষি সাত প্রকার।
যথা- শ্রুতর্ষি,
কাণ্ডর্ষি,
পরমর্ষি,
মহর্ষি,
রাজর্ষি,
ব্রহ্মর্ষি ও দেবর্ষি।
রামায়ণে উক্ত সাত প্রকার ঋষি ছাড়া আরও ২০ প্রকার ঋষির নাম পাওয়া যায়।
এঁরা হলেন-
১। বৈখানস : যাঁরা ব্রহ্মার মুখ থেকে উত্পন্ন।
২। বালখিল্য : যাঁরা ব্রহ্মার লোম থেকে উত্পন্ন।
৩। মরীচিপ : যাঁরা সূর্যকিরণ পান করে জীবনধারণ করেন।
৪। সংপ্রক্ষাল : যাঁরা বিষ্ণুর পাদপ্রক্ষালন জল থেকে উত্পন্ন।
৫। অশ্মকুট্ট : যাঁরা অপক্বকুট্টিতান্ন ভোজনে জীবনধারণ করেন।
৬। আকাশনিলয় : যাঁরা সবসময় অনাবৃত স্থানে বাস করেন।
৭। অনবকাশিক : যাঁরা কোন পা পরিবর্তন না করে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।
৮। দন্তোলূখল : যাঁরা আহারের সকল দ্রব্য দাঁত দ্বারা পেষণ করে ভক্ষণ করেন।
৯। অশয্যা : যাঁর কখনো শয়ন করেন না বা ঘুমান না।
১০। পত্রাহার : যাঁরা গাছের পাতা ছাড়া আর কিছু খান না।
১১। উন্মজক : যাঁরা আকণ্ঠ জলে দাঁড়িয়ে থেকে ভগবানের ধ্যান করেন।
১২। গাত্রশয্যা : যাঁরা মাটিতে শয়ন করেন।
১৩। বায়ুভক্ষক : যাঁরা বাতাস ভক্ষণ করে জীবনধারণ করেন।
১৪। জলাহার : যাঁরা জল গ্রহণ করে জীবনধারণ করেন।
১৫। আদ্রপট্টবাস : যাঁরা ভেজা কাপড়ে অবস্থান করেন।
১৬। স্থণ্ডিলশায়ী : যাঁরা যজ্ঞস্থলের মাটিতে শয়ন করে রাত্রি যাপন করেন।
১৭। উধ্ববাস : যাঁরা গিরি শিখরে অবস্থান করেন।
১৮। তপোনিষ্ঠ : যাঁরা সকল সময় তপে নিযুক্ত থাকেন।
১৯। পঞ্চতাপান্বিত : যাঁরা গ্রীষ্মকালে পঞ্চতাপের মধ্যে তপস্যা করেন।
২০। সজপ : যাঁরা সর্বদা জপ করেন।
এছাড়া মহাভারতে বানপ্রস্থ, ফলাহারী, মূলাহারী প্রভৃতি কয়েক প্রকার ঋষির নাম পাওয়া যায়।