সুখ
মানুষের ছোটো ছোটো স্বস্তিবোধ থেকে জন্ম
নেয় সুখবোধ। আর এই সুখবোধের আবেশ যখন মনের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে এবং সুখানুভূতিকে
উচ্চমাত্রায় পৌঁছে দেয় তখন তা আনন্দে পরিণত হয়।
সুখবোধের আদিতে মানুষের স্বস্তিদশার যে কোনো বিন্দু থাকতে পারে। ধরা যাক একজন মানুষ পা গুটিয়ে স্বস্তিদশায় আছে। কিছুক্ষণ পরে সে শারীরীক অস্বস্তি শুরু হবে। এই অবস্থায় সে তার পা-দুটো সামনের দিকে মেলে দিলো। এর ফলে তার অস্বস্তিদায়ক দশা থেমে গিয়ে, স্বস্তিদশার দিকে ধাবিত হবে। এক্ষেত্রে যে তার ভিতরে যে অনুভূতির সৃষ্টি হবে, তাকে বলবো সুখানুভূতি। সুখানুভূতি চলমান একটি প্রক্রিয়া। এটি স্বস্তিদায়ক অনুভূতির ক্রমোন্নোতির ভিতরে জন্মলাভ করে। যতখন এটি ক্রিয়াশীল থাকে ততক্ষণ মানুষ মন এর দ্বারা আবেশিত হয় এবং মনের ভিতর ব্যাপ্তি লাভ করে। এই ছড়িয়ে পড়া সুখবোধই হলো আনন্দ।
সুখবোধ মানুষের ভিতরে দীর্ঘক্ষণ বা দীর্ঘকাল মানুষের স্মৃতিতে থেকে যায়, কিন্তু সুখ থাকে না। স্বস্তি-অস্বস্তি'র জোয়ার-ভাটায় সুখের অবস্থান পাল্টায়। একটি সুনির্দিষ্ট সুখদশা একটি উচ্চশিখরে পৌঁছার পর, তার গতি হয় নিম্নমুখি। যদিও সুখের অনুভূতির প্রাবল্যে উঠাপড়া ক্রিয়া চলে, তবে সুখানুভূতি আন্দোলিত হয়। একসময় প্রবল সুখানুভূতিও একঘেঁয়েমিতে পর্যবসিত হয়। ফলে মনের ভিতরে ছড়িয়ে পড়া সুখ মিলিয়ে যেতে থাকে। ফলে আনন্দও হ্রাস পেতে থাকে। একসময় তা অস্বস্তির দিকে অগ্রসর। এই কারণেই, বোধকরি গ্রাম বাংলায় একটি কথা আছে, 'ঢাক থামলে ভালো লাগে।'