অতি বেগুনি রশ্মি
ইংরেজি:
ultraviolet ray
এক প্রকার তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য- দৃশ্যমান আলোর চেয়ে ছোট
এবং রঞ্জন রশ্মির চেয়ে বড়। এই রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০ ন্যানোমিটার থেকে ৪০০
ন্যানোমিটার হয়ে থাকে। এর শক্তিসীমা ৩ ইলেকট্রন-ভোল্ট থেকে ১২৪ ইলেকট্রন-ভোল্ট।
তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণের সূত্রে প্রাপ্ত রশ্মিসমূহের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যত কম হয়, ততই
তার শক্তি বৃদ্ধি পায়। মানুষের এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর চেয়ে ছোট, তাই
দৃশ্যমান আলোর চেয়ে এর শক্তিও বেশি। এ্ই অধিক শক্তির কারণে মানুষের দেহে এই রশ্মি
ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শক্তির বিচারে অতিবেগুনী রশ্মিকে নানা ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগগুলো হলো-
- NUV (Near ultraviolet):
তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৩০০-৪০০
ন্যামি। মানুষের দেহে এর ক্ষতিকারক প্রভাব কম।
এই রশ্মি মানুষের চোখ শনাক্ত করতে পারে না। তবে কিছু পাখি,
পতঙ্গ এবং মাছ এই তরঙ্গ দেখতে পায়।
- UV-A (Ultraviolet A):
তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৩১৫-৪০০ ন্যামি। মানুষের
দেহে এর ক্ষতিকারক প্রভাব কম। পৃথিবীর বাইরে থেকে আগত এই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের
অতিবেগুনী রশ্মি ঊর্ধাকাশের ওজোন স্তরের ওজোনকে ভাঙতে পারে না। এই কারণে এই
অতিবেগুনী রশ্মি ওজোন স্তরে শক্তি না হারিয়ে ভূপৃষ্ঠে চলে আসে। তীব্র রৌদ্রে এই
রশ্মি মানুষের দেহত্বককে ক্ষতিগ্রস্থ করে। তবে এই ক্ষতির প্রক্রিয়াটি ঘটে দীর্ঘ
সময় ধরে।
- UV-B (Ultraviolet B):
তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ২৮০-৩১৫ ন্যামি।
মানুষের দেহে এর ক্ষতিকারক প্রভাব
UV-A-এর
চেয়ে বেশি। পৃথিবীর বাইরে থেকে আগত এই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অতিবেগুনী রশ্মি
ঊর্ধাকাশের ওজোন স্তরের ওজোনকে অল্প-বিস্তর ভাঙতে পারে। এই কারণে এই অতিবেগুনী
রশ্মি ওজোন স্তরে অনেকটাই শক্তি না হারিয়ে ভূপৃষ্ঠে চলে আসে। তীব্র রৌদ্রে এই
রশ্মি মানুষের দেহত্বককে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
- VU-C (Ultraviolet C):
তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ১০০-২৮০ ন্যামি।
মানুষের দেহে এর ক্ষতিকারক প্রভাব অন্য দুটি অতিবেগুনি রশ্মির চেয়ে অনেক বেশি।
পৃথিবীর বাইরে থেকে আগত এই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অতিবেগুনী রশ্মি ঊর্ধাকাশের ওজোন
স্তরের ওজোনকে ভেঙে ফেলো। এই কারণে এই অতিবেগুনী রশ্মি ওজোন স্তরে শক্তি
হারিয়ে ফেলে। একে বলা হয়ে ওজোন স্তরের অতিবেগুনী রশ্মির শোষণ প্রক্রিয়া। এই
প্রক্রিয়ার জন্যই মানুষ-সহ জীবজগতের বিভিন্ন প্রজাতি সুস্থ জীবনধারণে সক্ষম হয়।
এই রশ্মি মানুষের দেহে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। এছাড়া মানুষের চোখের ব্যাপক
ক্ষতি করে এই রশ্মি।
- VUV (Vacuum ultraviolet): তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ১০-২০০ ন্যামি।
বায়ুস্তরে অক্সিজেনের দ্বারা শোষিত হয়ে যায়।
- EUV (Extreme ultraviolet): তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ১০-১২১ ন্যামি।
বায়ুস্তরে দ্বারা শোষিত হয়ে যায়।