ফোনোটোগ্রাফ
phonautograph

যন্ত্রিকভাবে শব্দধারণ করার আদিম যন্ত্র। প্রথম যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন ফরাসি বিজ্ঞানী Édouard-Léon Scott de Martinville। তিনি ছিলেন প্যারিসের একটি গ্রন্থমুদ্রণ এবং বাজারজাত করার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক। মানুষের কণ্ঠস্বর প্রকৃতি নিয়ে তাঁর অসীম কৌতুহল ছিল। প্রথম দিকে তিনি মানুষের কথা বলার জন্য ব্যবহৃত প্রচলিত শর্টহ্যান্ড পদ্ধতির উন্নয়ন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রধান লক্ষ্য ছিল মানুষের কণ্ঠস্বরকে যান্ত্রিকভাবে ধারণ করা।

১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত ফোনোটোগ্রাফ


১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের গ্রন্থাদি পড়ে মানুষের শ্রবণেন্দ্রিয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। এই সময় তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা শুরু করেন যে, মানুষের  কণ্ঠস্বরকে ধারণ করা সম্ভব। এই ভাবনা থেকে তিনি গবেষণা শুরু করেন। এক বছরের গবেষণার পর তিনি শব্দ ধারণে উপযোগী একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি তিনি ফ্রান্স একাডেমিতে তাঁর গবেষণা পত্র এবং যন্ত্রের নকশা জমা দেন। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ তিনি এই যন্ত্রের স্বত্বাধিকার লাভ করেন। স্বত্বাধিকার নম্বর ছিল
#17,897/31,470

পরে জার্মান পদার্থ বিজ্ঞানী রুডলফ কোয়েয়িং-এর সহায়তায় এই যন্ত্রের উন্নয়ন ঘটান। এই যন্ত্রে বাতাসের ভিতর দিয়ে ভেসে আসা শব্দ একটি পার্চমেন্ট কাগজের পর্দায় আঘাত হানতো। এর ফলে যে শব্দের কম্পাঙ্ক সৃষ্টি হতো তা এই পর্দার সাথে যুক্ত একটি বিশেষ ধরণের লেখনীকে (
bristle) কম্পিত করতো। এই লেখনী একটি ঘূর্ণায়মান চোখের উপর রাখা এক ধরণের কালচে কাগজের উপর শব্দ কম্পাঙ্কের ছবি আঁকতো। মূলত শব্দের প্রকৃতি চাক্ষুষভাবে পরীক্ষা করার জন্য এই যন্ত্র ব্যবহৃত হতো। উল্লেখ্য, কাগজে আঁকা এই শব্দ-কম্পাঙ্ক বাজানোর কোনো ব্যবস্থা সে সময়ে ছিল না।