বহির্গামী ধ্বনি, অন্তর্গামী ধ্বনি
ইংরেজি : Aggressive sound , Ingressive sound

মানুষ তার স্বরতন্ত্রী থেকে মুখ-গহ্বর বা নাসিকা পথে যত ধ্বনি সৃষ্টি করে থাকে, তার সবই ভাষাভেদে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শব্দ-শক্তি সৃষ্টির জন্য প্রাকৃতিক উপকরণ হিসাবে বাতাসকে ব্যবহার করা হয়। বাতাসের ব্যবহারিক পদ্ধতির বিচারে ধ্বনিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর একটি হলো বহির্গামী ধ্বনি , অপরটি অন্তর্গামী ধ্বনি
(Ingressive sound)

বাংলা ভাষাসহ পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষাতে বহির্গামী ধ্বনিই ব্যবহার করা হয়। এই জাতীয় ধ্বনি সৃষ্টির ক্ষেত্রে ফুসফুসের বাতাসকে মুখের বাইরের দিকে সঞ্চালিত করা হয়। এর ফলে স্বরতন্ত্রী-জাত শব্দ মুখবিবর দিয়ে বা নাক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ফলে বাতাসের ধাক্কায় ধ্বনিও বাইরে ছিটকে আসে। কথা বলার সময় আমরা মুখ বা নাকের সামনে হাত বা পাতলা কাপড় ধরলে বাতাসের বহির্গামী গতি অনুভব করতে পারি। কিন্তু সব সময় যে বহির্গামী ধ্বনি স্বরতন্ত্রী থেকে উ
পন্ন হবে, তা কিন্তু নয়। যেমন
সাপের হিস্ হিস্ শব্দেকে যদি প্রলম্বিত করা যায়, তা হলে দেখা যাবে, হিস্ ধ্বনির হি বাদে পরের স্ ধ্বনিটি জিহ্বা ও তালুর ভিতর দিয়ে সজোরে সঞ্চালিত বায়ু প্রবাহের ঘর্ষণজনীত ধ্বনি ছাড়া আর কিছুই নয়।

কখনো কখনো বাইরের বাতাসকে মুখের ভিতর টেনে এনে ধ্বনি তৈরি কর
া হয়। যেমন অনেক সময় হাঁস-মুরগীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য, মুখের ভিতর বাতাস টেনে নিয়ে জিহ্বা ও তালুর সাহয্যে চু চু ধরনের ধ্বনি তৈরি করে থাকি। এরূপ দু’একটি সংকেত ছাড়া এই জাতীয় অন্তর্গামী ধ্বনির ব্যবহার বাংলা ভাষায় নেই। আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমির বুশম্যান ও কিছু আদিবাসীদের ভাষায় এই জাতীয় ধ্বনির ব্যবহার আছে।

 


বহির্গামী ভাষা

ইংরেজি ভাষা : Egressive language

ফসফুস তাড়িত বাতাসের দ্বারা স্বরতন্ত্রীজাত ধ্বনি নির্ভর ভাষাকে বলা হয়  বহির্গামী (Egressive) ধ্বনিযুক্ত ভাষা। বর্তমানে জীবিত ভাষার অধিকাংশই বহির্গামী (Egressive) ধ্বনিযুক্ত। আফ্রিকার কালাহার মরুভূমির বুশম্যান, উত্তর-পশ্চিম ম্যাক্সিকো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব আরিজোনার সোনোরান মরুভূমির টোহোনো ও'ওধাম (Tohono O'odham) আদিবাসীরা অন্তর্গামী ধ্বনিযুক্ত ভাষায় কথা বলে।


বহির্গামী শীৎকার
ইংরেজি :
Ingressive click

জিহ্বার পশ্চা
ৎভাগ দ্বারা স্নিগ্ধতালু অবরোধ করে, ফুসফুসের সাথে বাতাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এই জাতীয় ধ্বনি উপন্ন করা হয়
এই অবরোধের পর পশ্চাৎ জিহ্বাকে সামনের দিকে এগিয়ে আনার চেষ্টা করলে মুখের ভিতরের বাতাস বাইরে চলে আসে একে বলা হয় স্নিগ্ধতালু-চালিত বহির্গামী বায়ু প্রবাহ (Egressive veleric airstream) কিন্তু ঠিক এর উল্টো পদ্ধতিতে জিহ্বার পশ্চাৎভাগ গলার দিকে নামিয়ে আনলে মুখের ভিতর বাতাস প্রবেশ করে একে বলা হয় অন্তর্গামী বায়ু প্রবাহ আর এর ফলে যে ধ্বনি তৈরি হয়, তাকে বলা হয় অন্তর্গামী শীৎকার বা কাকুধ্বনি (Ingressive click)