ভাষাতত্ত্ব
ইংরেজি:
linguistics
ভাষার বিজ্ঞানসম্মত অনুশীলনকে ভাষাতত্ত্ব
বলা হয়। এই তত্ত্ব কতকগুলো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এর
প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে ভাষার সকল নমুনা সংগ্রহ করে তা নথিভুক্ত করা। এক্ষেত্রে
লিখিত এবং কথিত সকল ধরনের নমুনাই গৃহীত হয়ে থাকে। ফলে ভাষাতত্ত্বের শুরুতেই চলে
আসে লিখিত ভাষার জন্য বর্ণচিহ্ন সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ এবং তা বিশ্লেষণকরণ আর
কথিত ভাষার জন্য ধ্বনি প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণ এবং তা বিশ্লেষণকরণ। উভয়ক্ষেত্রে
বিজ্ঞানসম্মতভাবে তাত্ত্বিকভাবে উপস্থাপন করা হয়।
যেহেতু মানুষের কথিত ভাষাই ভাষতত্ত্বের একমাত্র ক্ষেত্র এবং মানুষের ভাষা
সংস্কৃতির অংশ, তাই ভাষার ভিতর দিয়ে মানুষের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বিষয়টিও
বিবেচনা করা হয়।
সার্বিক বিবেচনায় ভাষাতত্ত্বকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়।
এই ভাগগুলো হলো- (Phonetics)
ভাষার ধ্বনি কীভাবে উৎপন্ন হয়, কেমনভাবে উচ্চারিত হয় ও শোনা যায় তা নিয়ে গবেষণা।
ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology)
ধ্বনির নিয়ম, ভাষায় ধ্বনির ব্যবহার ও বিন্যাস কেমন হয় তা বিশ্লেষণ।
রূপতত্ত্ব
(Morphology)
শব্দের গঠন ও গঠনপ্রণালী (উপসর্গ, প্রত্যয়, মূল ইত্যাদি)।
বাক্যতত্ত্ব (Syntax)
শব্দগুলো কীভাবে বাক্যে সাজানো হয় ও বাক্যগঠন কেমন হয়।
অর্থবিজ্ঞান (Semantics)
শব্দ, পদ ও বাক্যের অর্থ নিয়ে গবেষণা।
প্রসঙ্গতত্ত্ব (Pragmatics)
প্রসঙ্গ বা প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বাক্য বা শব্দের অর্থ কিভাবে বদলায়।
সমাজভাষাবিজ্ঞান (Sociolinguistics)
সমাজ, সংস্কৃতি, শ্রেণি, লিঙ্গভেদ ইত্যাদির কারণে ভাষার বৈচিত্র্য।
সাংস্কৃতিক ভাষাবিজ্ঞান (philology)
মানুষের ভাষা ব্যবহারের ভিতর দিয়ে যে
সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়, তার বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে তত্ত্ব গড়ে উঠে। মানুষের কথিত ভাষার অনুসরণে রচিত সকল শিল্প-সংস্কৃতি (গল্প, কবিতা, সঙ্গীতের বাণী, নাটক, প্রাত্যহিক কথোপকথন ইত্যাদি), সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত সকল ভাষাগত উপাদান।
মনোভাষাবিজ্ঞান (Psycholinguistics)
মানুষের মনের ভেতর ভাষা কীভাবে অর্জিত, সংরক্ষিত ও ব্যবহার হয়।
ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান
(Historical Linguistics)
ভাষার ইতিহাস, উৎস ও পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা।
প্রয়োগমূলক ভাষাবিজ্ঞান (Applied Linguistics)
ভাষা শিক্ষাদান, অনুবাদ, অভিধান রচনা, কম্পিউটারভিত্তিক ভাষা বিশ্লেষণ ইত্যাদি।