বসন্তোৎসব
বসন্তকালকে উৎযাপন করার জন্য আনুষ্ঠানিক উৎসব বিশেষ। বঙ্গাব্দের ফাল্গুন ও চৈত্র মাসকে বসন্তকাল বলা হয়। বর্তমানে সকল বাঙালির উৎসব হিসেবে একে গ্রহণ করা গেলেও এই উৎসবটি মূলত আন্তর্জাতিক। বিভিন্ন দেশে এই উৎসব বিভিন্ন নামে এমন বিভিন্নভাবে পালন করা হয়। ভারতবর্ষে এই উৎসবটি মদনোৎসব নামে বহু আগে থেকে প্রচলিত আছে।

মূলত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ বসন্তোৎসব করে থাকে। গ্রিক, জার্মান, পারশ্য, ভারতবর্ষ প্রভৃতি অঞ্চলের আর্যভাষাভাষীরা এই উৎসব নানা আঙ্গিকে করছে বহুকাল আগে থেকে। ভারতবর্ষে এই উৎসবের একটি প্রকরণ হলো দোলযাত্রা বা দোল-উৎসব।

প্রাচীনকালে এই উৎসবে নিজ দেহ এবং গৃহ স্থানীয় বসন্তকালীন ফুল দিয়ে সাজাতো। লাল, হলুদ, কমলা রঙকে বসন্তের প্রতীক হিসেবে, এই রঙের পোশাক পরতো। আঙিনায় আল্পনা  আঁকতো। উৎসবের প্রধান অঙ্গ ছিল নৃত্যগীত। অঞ্চল বিশেষে দেবতাদের উদ্দেশ্য বিশেষধরণের নৃত্যগীত পরিবেশন করতো। এরই সূত্রে সৃষ্টি হয়েছিল হোলিখেলা।

ধর্মীয় পরিবেশের বসন্তোৎসবকে সার্বজনীন উৎসবে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। শান্তিনিকেতনে এই উৎসব রবীন্দ্রনাথের সময় বিপুল সমারোহে আয়োজন করা হতো। এই উৎসবের প্রধান অঙ্গ ছিল নৃত্যগীত। বর্তমানে বসন্তোৎসব ব্যাপকভাবে পালিত না হলেও যা হয়, তা ধর্মীয় ভাবনার স্পর্শ থেকে না। বাংলাদেশে দোল-উৎসব রাধা-কৃষ্ণের লীলার একটি ভূমিকা আছে, কিন্তু পালিত হয় রঙ ছিটিয়ে, নাচে গানে আনন্দোৎসব হিসেবে।