সপ্তর্ষিসংবৎ
ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ উত্তর-পূর্ব আকাশের একটি নক্ষত্রমণ্ডল সপ্তর্ষিমণ্ডল নামে চিহ্নিত করেছিলেন। প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই নক্ষত্রমণ্ডলীর একটি কাল্পনিক গতি বিবেচনা করেছিলেন। এঁদের ধারণা ছিল ২৭০০ সৌর-বৎসরে এই মণ্ডলের একটি আবর্তনকাল সম্পূর্ণ হয়। এই পূর্ণ আবর্তনকালকে বলা হয় সপ্তর্ষিসংবৎ বলা হয়।


সপ্তর্ষিসংবৎসর
সমার্থক শব্দাবলি : সপ্তর্ষিসংবৎ, সপ্তর্ষিসংবৎসর, লৌকিক সংবৎ, শাস্ত্রীয় সংবৎ, পাহাড়ী সংবৎ, কাচা (কচ্চা) সংবৎ।

ভারতীয়
পৌরাণিক কাহিনি মতে সাতজন ঋষিকে সপ্তর্ষি বলা হয়। এই সাতজন ঋষি হলেন- ক্রতু, পুলহ, পুলস্ত্য, অত্রি, অঙ্গিরা, বশিষ্ঠ ও মারীচ ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ উত্তর-পূর্ব আকাশের একটি বিখ্যাত নক্ষত্রমণ্ডলকে সপ্তর্ষিমণ্ডল (পাশ্চাত্য নাম Ursa Major, আমেরিকাতে বলা হয় Great Dipper)  নামে চিহ্নিত করেছিলেন। প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই নক্ষত্রমণ্ডলীর একটি কাল্পনিক গতি বিবেচনা করেছিলেন। এঁদের ধারণা ছিল ২৭০০ সৌর-বৎসরে এই মণ্ডলের একটি আবর্তনকাল সম্পূর্ণ করে। এই পূর্ণ আবর্তনকালকে বলা হয় সপ্তর্ষিসংবৎসর। ভারতীয়দের মতে- এই নক্ষত্রমণ্ডলে মোট ২৭টি নক্ষত্র অবস্থিত। এই নক্ষত্রগুলোর অবচ্ছেদ সময় ১০০ বৎসর। এই অব্দ গণনার সময় কোনো নক্ষত্রের নাম উল্লেখ করা হতো না। ১০০ বছর শেষ হলে- আবার ১ থেকে শুরু করা হতো।

এই রীতি সাধারণ মানুষের ভিতর প্রচলিত আছে বলে- এর নাম হয় লৌকিক সংবৎ। জ্যোতিষশাস্ত্রে এই অব্দ সর্বাধিক প্রচলিত থাকার কারণে এর অপর নাম- শাস্ত্রসংবৎ। কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবের পাহাড়ী অঞ্চলে প্রচলিত থাকার সূত্রে- এর নামকরণ হয়েছে পাহাড়ী সংবৎ। কাশ্মীর অঞ্চলে এক সময় সাধারণ মানুষ এই অব্দ ব্যবহার করতো। এই কারণে এর নাম ছিল- লৌকিক সংবৎ।

কাশ্মীর অঞ্চলে শতাব্দীর অঙ্ক বাদ দিয়ে বর্ষাঙ্ক লিখা হয়। এই কারণে এর নাম ছিল কাচা সংবৎ নামেও এর পরিচতি ছিল।

কাশ্মীরের জ্যোতিষীদের  মতে এই অব্দের শুরু হয়েছিল- কলিযুগের ২৫ বৎসর পূর্ণ হওয়ার পর থেকে।  কিন্তু হিন্দু পৌরাণিক গ্রন্থাদির মতে এই অব্দের শুরু হয়েছিল কলিযুগের শুরু থেকে। খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২৪ বা ২৫ বৎসর বাদ দিলে শতাব্দীর সংখ্যাহীন সপ্তর্ষি সংবৎ পাওয়া যায়।