Kingdom: | Animalia |
Phylum: | Chordata |
Class: | Actinopterygii |
Order: | Clupeiformes |
Family: | Clupeidae |
Genus: | Tenualosa |
Species: | T. ilisha |
ইলিশ
Tenualosa
গণের মাছ বিশেষ।
সহজপ্রাপ্য প্রজাতি :
Tenkalosa ilisha
(Hamilton, 1822)।
ইংরেজি নাম : River Shad,
Hilsa Shad।
সমার্থক বাংলা নাম : ইলিশ, ইল্শা, ইল্শে
অপেক্ষাকৃত কম
পাওয়া প্রজাতি : Tenualosa
toli
(Valenciennes, 1847)
ইংরেজি নাম :
Toli Shad,
Shad
সমার্থক বাংলা নাম : চন্দনা ইলিশ, ইল্শা, ইল্শে
বাংলাদেশের
জাতীয় মাছ।
এই মাছ বেশি লবণাক্ত পানি সহ্য করতে পারে না। এই মাছ বড় বড় নদী এবং তৎসংলগ্ন
সাগর মোহনায় বসবাস করে।
এশিয়ার পারস্য সাগর, লোহিত সাগর, আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর এবং চীনসাগরে এদের পাওয়া
যায়। নদ-নদীর ভিতরে মধ্যপ্রাচ্যের দজলা, ফোরাত, পাকিস্তানের সিন্ধু, বাংলাদেশের
মেঘনা, পদ্মা, যমুনা, মায়ানমারের ইরাবতী নদীতে এই মাছ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রধান এই তিন নদী ছাড়াও এদের শাখা নদীগুলোতেও
এই মাছ পাওয়া যায়। এই সূত্রের অন্যান্য যে সকল নদীতে পাওয়া যায়, সুমুদ্রের
নিকটবর্তী
নিচের অংশে, রূপসা, শিবসা, বিশখালী, তেতুলিয়া, আড়িয়ালখাঁ, গলাচিপা ও
পায়রা নদী এবং উপকূলীয় কিছু নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের
ইলিশ
বাংলাদেশের মেঘনা নদীর
মোহনা বরাবর বঙ্গোপসাগরে এরা বসবাস করে।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু
প্রবাহের সময় (জানুয়ারি
থেকে ফেব্রুয়ারি)
এদের
প্রজনন কাল।
ডিম ছাড়ার জন্য এরা
মেঘনা নদীতে
প্রবেশ করে এবং ডিম ছাড়তে ছাড়তে
উজানের দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ
করে মেঘনা ছাড়িয়ে পদ্মা এবং যমুনা নদীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত অগ্রসর হয়।
এই মাছের
পরিণত ডিমের ব্যাস ০.৭ থেকে
০.৯ মিমি পর্যন্ত হয়।
এরা
নদীর গভীরে
তলদেশে
প্রায় স্থির পানিতে
ডিমপাড়ে এবং সেখানেই নিষেক ঘটে।
একটি পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী-ইলিশ প্রায় ২০ লক্ষ ডিম ধারণ করে থাকে।
ডিম থেকে ফোটা পোনা এবং
অপ্রাপ্ত বয়স্ক মাছ নদীতে
বৃদ্ধি প্রাপ্ত
পায়। এই মাছের পোনা
দৈর্ঘ্য যখন ৬-১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়, তখন এদেরকে বলা হয় জাটকা। এরপরে এরা আরও
কিছুটা বড় হলে সাগরে ফিরে যায়।
পূর্ণবয়স্ক
ইলিশের গড় দৈর্ঘ্য ৪০ সেন্টিমিটার। দৈর্ঘ্যে সর্ব্বোচ্চ ৫৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে
পারে। এদের
মাথার দৈর্ঘ্য এবং
দেহের মোট দৈর্ঘ্যের এক চতুর্থাংশ।
এদের
দেহের
পৃষ্ঠীয় এবং অঙ্কীয়
দেশ সমান চাপা। উর্ধ্বচোয়াল মাঝখানে সুস্পষ্ট খাঁজ
দেখা যায় এবং
মুখ দুঢ়ভাবে বন্ধ থাকা অবস্থায় নিম্নচোয়াল
ঊর্ধ্বচোয়ালের
ভিতরে ঢুকে
থাকে।
অনাবৃত অংশ ত্বকে ঢাকা। মাথার পৃষ্ঠতল ত্বকে আবৃত
এবং কোনো
পশ্চাৎ কপাল অস্থির রেখা (frontoparietal
striae)
নেই। ফুলকা বহু সংখ্যক, প্রথম খিলানের নিচের অংশে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০টি
ফুলকা লক্ষ্য করা যায়।
এদের
কোনো
দাঁত থাকে না।
চোখের ব্যাস বয়সের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। কম বয়সী মাছের চোখ অপেক্ষাকৃত বড় হয়।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের আকার
তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি কম হয়। এদের
বক্ষপাখনা, শ্রোণীপাখনা
অপেক্ষা অনেকটা ক্ষুদ্রতর।
এদের
আঁইশ উজ্জ্বল রূপালি বর্ণের।
অঙ্গের
পার্শ্বরেখার মধ্য
সারিতে ৪৫ থেকে ৪৭টি আঁইশ
এবং
অনুপ্রস্থ সারিতে ১৭ থেকে ১৯ সারি
আঁইশ
থাকে।
দেহের মাঝ বরাবর
আঁইশগুলো বেশ বড় বড়, সেই তুলনায় লেজের আঁইশ
বেশ ছোটো ছোটো হয়ে থাকে।
বক্ষপাখনা এবং শ্রোণী পাখনায় কাক্ষিক (axillary)
আঁইশ
লক্ষ্য করা যায়।
এর পুচ্ছ দু্ই ভাগে বিভক্ত।
ইলিশ খুব দ্রুত সাঁতরাতে
পারে। একটি ইলিশ মাছ একদিনে প্রায়
৬০ থেকে
৭০ কিমি. পর্যন্ত সাঁতরাতে
পারে। নদীতে
স্রোতের বিপরীতে
এদের
গতি
থাকে
৫০ থেকে ১০০ কিমি।
এদের
প্রধান
খাদ্য
প্লাংকটন।
এছাড়া নীলাভ-সবুজ
শৈবাল,
ডায়াটম,
ডেসমিড,
কোপিপোড, ক্লাডোসের,
রোটিফার
ইত্যাদি আহার করে।
বাংলাদেশে এটি জনপ্রিয়
মাছ। এই মাছের বিভিন্ন ধরনের
সুস্বাদু খাবার
তৈরি
করা
হয়।
এই কারণে
বাংলাদেশে
এই মাছের চাহিদাও
ব্যাপক। সমুদ্র উপকূলীয় অংশে
প্রায় ৪,৫০,০০০ জেলে ইলিশ
মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে।
ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস, জলপ্রবাহের
পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে উজানের বড় বড় নদীতে এই মাছের পরিমাণ কমে গেছে। এই কারণে
সমুদ্র উপকূলীয় অংশে এই মাছ বেশি ধরা পড়ে।