Kingdom: Animalia |
সমনাম: রুই, রোহিত, নওলা (আভধানিক অর্থ)।
ইংরেজি: Rohu Carp
Labeo গণের অন্তর্গত একটি প্রজাতি। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের নদী এবং বিভিন্ন মিষ্টি পানিযুক্ত জলশায়ে পাওয়া যায়।। অনেক সময় অল্প লবণাক্ত নদীমোহনায় পাওয়া যায়।
এদের মাথা ও লেজ ক্রমশ সরু। এই কারণে এর দেহকাণ্ড অনেকটা মাকুর মতো দেখায়। দেহের অগ্রপ্রান্ত থেকে কানকোর পশ্চাৎ পর্যন্ত হল মাথা। মাথা ৪-৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। মুখ মস্তকের নিচের দিকে অবস্থিত। মুখের দুই কোণা পিছনের দিকে বাঁকা হওয়ায় মুখ অর্ধচন্দ্রাকার দেখায়। এর থুঁতনি ভোঁতা। মুখের উপরে ও নিচে ঝালরের মত ঠোঁট আছে। থুঁতনির পৃষ্ঠদেশের চক্ষুদ্বয়ের সামান্য সম্মুখে একজোড়া নাসারন্ধ্র আছে। মাথার দুই পাশে দুটি বড় বড় চোখ আছে। চোখে কোনো পাতা নেই, কর্নিয়া স্বচ্ছ চামড়ার আবরণ দ্বারা চোখ আবৃত থাকে।

এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ সেমি পর্যন্ত হয়। ওজন সর্বোচ্চ ৪৫ কেজি হতে পারে। এদের গড় আয়ু ১০ বছর। ওজন ৪৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।
এরা নানা ধরনের জলজ উদ্ভিদ আহার করে। এছাড়া এরা পানির তলদেশের পচা জৈব পদার্থ খায়। চাষ করা রুই এছাড়াও খৈলের গুড়া, শষ্যের কুঁড়া ইত্যাদি খায়। তবে ছোট অবস্থায় এদের প্রধান খাদ্য থাকে প্রাণীকণা বা প্লাংকটন।
রুই মাছ দুই থেকে তিন বছরেই
প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে। বর্ষাকালে প্লাবিত নদীতে নারী-পুরুষ রুই
প্রজননে অংশ নেয়। প্রতি প্রজনন ঋতুতে একটি মা মাছ অপেক্ষাকৃত কম
গভীর পানিতে এবং স্রোতের টানে নদীর পাড়ে প্রায় দুই থেকে ত্রিশ
লাখ ডিম দিয়ে থাকে। অবশ্য মাছের বয়স, দৈর্ঘ্য ওজনের এবং অমরার
আকার ও ওজনের উপর নির্ভর করে কমবেশি হতে পারে।
রুই মাছ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। বিশেষ করে
বিবাহ, অন্নপ্রাসন ইত্যাদি উৎসবে এই মাছের ব্যাপক চাহিদা আছে। এর
মাথা দিয়ে সুস্বাদু মুড়িঘণ্ড খাদ্য তালিকার বিশেষ পদ হিসেব বিবেচনা
করা হয়। খাদ্যপুষ্টি হিসেবে প্রতি ১০০ গ্রাম রুই মাছে ১৬.৪ গ্রাম
আমিষ, ১.৪ গ্রাম চর্বি, ৬৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২২৩ মিলিগ্রাম
ফসফরাস থাকে।
এক সময় এই মাছের প্রধান উৎস ছিল, নদী, বিল, পুকুর, খাল ইত্যাদি।
বর্তমানে কৃত্রিম উপায়ে চাষ করা হয়।