নীলা
ইংরেজি Blue Sapphire।
নীল আভাযুক্ত কোরান্ডাম গ্রুপের রত্ন বিশেষ। এটির আরবি, ফার্সি, ও উর্দুতে ইয়াকুত
বলে। বাঙলা ও সংস্কৃতিতে এই রত্নটিকে নীলকান্তমণি বলে। এটিকে চলতি বাঙলায় নীলা বলা
হয়। তেলেগুতে বলে- কুরুন্দীম।
এর রাসায়নিক মূল উপাদান এ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Al2O3),
কাঠিন্য ৯, আপেক্ষিক গুরুত্ব ৩.৯৯-৪.০০। প্রতিসরাঙ্ক ১.৭৬৬-১.৭৭৪। বিচ্ছুরণ ০.০১৮।
এটি একটি স্বাদহীন, শীতল রত্ন। নীলা কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন—
অপরাজিতা নীলা, ইন্দ্রনীলা, গঙ্গাজলনীলা, পীতাম্বরনীলা, রক্তমুখীনীলা, স্টারনীলা
ইত্যাদি। ভারতের কাশ্মীর অঞ্চলের দুর্গম জানস্ক পর্বতের পাদদেশ, আইসল্যাণ্ডের
চান্তাবুল, অস্ট্রেলিয়ার অ্যানাকি, যুক্তরাষ্ট্রের মনটানা, সিংহলের রত্নশুরা ও
জার্মানীতে নীলা পাওয়া যায়।
জ্যোতিষশাস্ত্রে এর ব্যবহার ব্যাপক। মকর ও কুম্ভরাশির জাতক/ জাতিকাদের জন্য এই
রত্নকে নির্বাচন করা হয়। শনি গ্রহের অশুভ প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই পাথর
ব্যবহারের বিধান আছে। অধিক ধনশালী, সাহসবৃদ্ধি ও শক্তিশালী হওয়ার জন্যও এই রত্ন
ধারণের বিধান আছে।
ষ্টার অব ইণ্ডিয়া |
কয়েকটি বিখ্যাত নীলা :
ক. এডওয়ার্ড নীলা : ১৪০২ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যাণ্ডের রাজা এডওয়ার্ডের অভিষেকের
সময় তাঁর আঙুলে প্রথম এই রত্নটি দেখা গিয়েছিল। সেই থেকে এই রত্নটির নামকরণ হয়েছিল।
খ. দ্বিতীয় চার্লসের নীলা : এই নীলাটির প্রথম মালিক ছিলেন দ্বিতীয় চার্লস।
১৬৮৮ খ্রিষ্টাব্দে এটি চুরি করে জেমস এডওয়ার্ড ফ্রান্সে পালিয়ে গিয়েছিলেন। রাণী
ভিক্টোরিয়ার রাজ্যাভিষেকের সময় তাঁর মুকুটের সামনের দিকের মাঝখানে এই রত্নটি
বসানো ছিল। চারকোণা বিশিষ্ট এই রত্নটির দৈর্ঘ্য ছিল দেড় ইঞ্চি ও প্রস্থ ছিল এক
ইঞ্চি।
গ. ষ্টার অব ইণ্ডিয়া : ৫৬৩ ক্যারটের এই রত্নটি নিউইয়র্কের প্রাকৃত যাদুঘরে
সংরক্ষিত আছে।