প্রখ্যাত গ্রিক দার্শনিক। প্যারিসের ল্যুভের যাদুঘরে রক্ষিত মূর্তি

এ্যারিস্টোটল
গ্রিক
Άριστοτέλης (Aristotélēs, আরিস্তোতেল্যাস্‌)>ইংরেজি Aristotle>বাংলা  এ্যারিস্টোটেল

খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৪ অব্দে স্টাগিরাসে (Stageira, আধুনিক থেস্সালোঙ্কি (Thessaloniki) থেকে ৫৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত স্থান) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা নিকোম্যাকাস ছিলেন মেসিডোনিয়ার রাজা আমিন্টাসের (Amyntas) রাজ-দরবারের চিকিৎসক। এই দিক থেকে বলা যায়, এ্যারিস্টোটল তৎকালীন গ্রিসের অভিজাত পরিবারের সন্তান ছিলেন।

শৈশবে তাঁর বাবা মারা যান। খ্রিষ্টাপূর্ব ৩৫৫-৩৫৬ অব্দের দিকে, তাঁর ১৭-১৮ বৎসরে বয়সে তাঁর অভিভাবক প্রোক্সেনাস (
Proxenus) তাকে এথেন্সে জ্ঞানার্জনে জন্য পাঠিয়ে দেন। সেখানে তিনি প্লেটোর একাডেমিতে সরাসরি প্লেটোর অধীনে প্রায় বিশ বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৭ সালে প্লেটোর মৃত্যুর পর, তাঁর ভাইপো এসপিউসিয়াস (Speusippus) একাডেমির দায়িত্ব পান। এরপর এ্যারিস্টিটল প্লেটোর অপর শিষ্য জেনিক্রেটিস (Xenocrates)-কে সাথে করে এথেন্স ত্যাগ করেন এবং এ্যাটারনিয়াস এর শাসক হার্মিয়াসের কাছে যান। এখানে তিনি তিন বৎসর কাটান। কিছুদিন পরে জেনিক্রেটিস এথেন্সে ফিরে গিয়ে প্লেটোর একাডেমিতে যোগদান করেন। এই সময়ে রাজার ভাগ্নি (মতান্তরে পালিতা কন্যা) পিথিয়াসকে (Pythias) তিনি বিয়ে করেন।

তিন বৎসর পরে তিনি লেসবোস দ্বীপে যান। এরপর থিওফ্রাস্টাসকে (Theophrastus) সাথে নিয়ে এই দ্বীপে তিনি প্রাণী এবং উদ্ভিদের উপর গবেষণা করেন।  ইতিমধ্যে হার্মিয়াসের মৃত্যু হয় এবং ম্যাসিডোনের রাজা ফিলিপ দ্বিতীয় (Philip II of Macedon) তাঁর ১৩ বৎসরের পুত্র আলেক্জান্ডারের (Alexander) শিক্ষার জন্য খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৩ অব্দে এ্যারিস্টোটেলকে আমন্ত্রণ করেন।

ফিলিপের মৃত্যুর পর আলেকজান্ডার রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করেন এবং এ্যারিস্টোটল এথেন্স ফিরে যান খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩৫ অব্দে। এথেন্সে এসে তিনি দেখলেন প্লেটোর একাডেমিতে প্লেটোর মতবাদই গুরুত্বসহকারে শিক্ষা দেওয়া হয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে এই পক্ষপাতিত্ব তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তাই তিনি লাইসিয়াম (Lyceum) নামক এলাকায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী বার-তের বছর তিনি একাডেমিতে নিয়েই কাটান। তিনি দিনে তার ঘনিষ্ঠ ছাত্রদের জন্য ও রাতে এথেন্সের সাধারণ জ্ঞানপিপাসু জনগণের জন্য লেকচার দিতেন। এই সময় তাঁর স্ত্রী পিথিয়াস মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তিনি তাঁর পিতৃভূমি স্টাগিরাসে (Stageira)-এর কন্যা হার্পিলিসকে বিয়ে করেন। এই স্ত্রীর গর্ভে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এর নাম রাখা হয় নিকোম্যাকাস।

খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩৫ অব্দ থেকে ৩২৩ অব্দ পর্যন্ত সময়কে তাঁর সৃষ্টিশীল সময় বলা হয়। কারণ এই সময়ে তিনি তাঁর অধিকাংশ গ্রন্থ রচনা করেন।

খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩-এ আলেকজান্ডারের অকাল মৃত্যুর পর এথেন্সেবাসীরা ম্যাসেডোনিয়ার শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এ্যারিস্টোটল আলেকজান্ডারের শিক্ষক থাকার কারণে, তিনিও নিপীড়নের শিকার হন। এথেন্সের লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মহীনতার অভিযোগ উত্থাপন করে। ফলে তিনি ইউবেরিয়ার অন্তর্গত  চ্যালসিসে পালিয়ে যান। চ্যালসিসে আসার প্রথম বছরই তিনি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হন এবং খ্রিষ্টপূর্ব ৩২২ অব্দে মৃত্যু বরণ করেন।

এ্যারিস্টোটল-এর পৃথিবী সংক্রান্ত ভাবনা
গোড়ার দিকে গ্রিক দার্শনিকরা মনে করতেন পৃথিবীটা থালার মতো। আর সেই থালাটি আছে একটির পিঠে দাঁড়ানো কচ্ছপের স্তম্ভের উপরে। এ্যাটলাসের কাঁধে করে পৃথিবীটাকে ধরে রেখেছে এ তত্ত্ব গ্রিক পুরাণে আছে। চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়া গোলাকার দেখে, এ্যারিস্টোটেল ধরে নিয়েছিলেন পৃথিবীটা গোলাকার। তবে সেটা যে চ্যাপটা নয়, তা তিনি অনুমান করেছিলেন ধ্রুবতারার পর্যবেক্ষণ করে। কারণ, পৃথিবী গোলাকার বলেই উত্তর মেরু থেকে ধ্রুবতারা মাথার উপরে দেখা যায় আর বিষুব অঞ্চল থেকে দিকচক্রবালে দেখা যায়। এছাড়া গভীর সমুদ্র থেকে বন্দরের দিকে জাহাজ আসার সময়, প্রথমে এর মাস্তুল, পাল দেখা যায়। এই পর্যবেক্ষণ দ্বারাও এ্যারিস্টোটেল প্রভাবিত হয়েছিলেন। এ্যারিস্টোটল পৃথিবীকে স্থির বিবেচনা করেছিলেন। এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য চন্দ্র, গ্রহ ও অন্যান্য তারকারা আবর্তিত হচ্ছে। তাঁর মতে মহাবিশ্ব একটি নিখুঁত বৃত্তাকার। তাঁর মতবাদকে বিস্তার ঘটিয়েছিলেন টলেমি (Ptolemy)।
 

এ্যারিস্টোটল-এর রচিত গ্রন্থ তালিকা

Latin Title English titles
Categoriae Categories
De Interpretatione On Interpretation
Analytica Priora Prior Analytics
Analytica Posteriora Posterior Analytics
Topica Topics
De Sophisticis Elenchis On Sophistical Refutations
Organon Organon (collective title for the preceding six works)
Physica Physics
De Generatione et Corruptione On Coming-to-Be and Passing Away; On Generation and Corruption
De Caelo On the Heavens
Meteorologica Meteorology
De Anima On the Soul
De Sensu et Sensibilibus On Sense and Sensibles, On Sense and Sensibilia
De Memoria et Reminiscentia On Memory and Recollection
De Somno et Vigilia On Sleep and Waking
De Insomniis On Dreams
De Divinatione per Somnum On Divination by Dreams
De Longitudine et Brevitate Vitae On Longness and Shortness of Life
De Juventute et Senectute [De Vita et Morte] On Youth and Old Age [On Life and Death]
De Respiratione On Respiration
Parva Naturalia Little Physical Treatises (collective title for the preceding eight works)
De Spiritu On Breath
Historia Animalium History of Animals; Natural History of Animals
De Partibus Animalium On the Parts of Animals
De Motu Animalium On the Motion of Animals
De Generatione Animalium On the Generation of Animals
De Incessu Animalium On the Beginnings of Animals, Progression of Animals
Metaphysica Metaphysics
Ethica Nicomachea Nicomachean* Ethics
Ethica Eudemia Eudemian Ethics
Magna Moralia Magna Moralia
Politica Politics
Rhetorica, Ars Rhetorica Rhetoric; Art of Rhetoric
Poetica Poetics

সূত্র :
পাশ্চাত্ত্য দর্শনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, প্রাচীন যুগ থেলস-অ্যারিস্টটল। ব্যানার্জী পাবলিশার্স। সেপ্টেম্বর ১৯৯৭।
http://en.wikipedia.org/