আবাকা খান
(১২৩৪ – ১২৮২ খ্রিষ্টাব্দ)
মঙ্গোলীয় শাসক।
হালাকু খানের
দ্বারা প্রতিষ্ঠিত তাঁর
সাম্রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত সামরিক প্রতিষ্ঠান ইলখানাতের দ্বিতীয় শাসক।
১২৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে মঙ্গোলিয়া জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা ছিলেন মোঙ্গলীয় শাসক
হালাকু খান।
মায়ের নাম ইয়েসুনচিন খাতুন।
হালাকু খানের
তিনি পুত্র এবং এক কন্যার ভিতরে আবাক খান ছিলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। অল্প বয়সেই আবাক খান তুর্কেমেনিস্তানের
গভর্নর পদ লাভ করেছিলেন। ১২৬৫ খ্রিষ্টাব্দে
হালাকু খানের
মৃত্যুর পর রাজত্ব লাভ করেন।
সিংহাসনে লাভ করার পর রাজ্যের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য
বিশেষভাবে সচেষ্ট হন।। ১২৬৭ থেকে ১২৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে পোপ ক্লেমেন্ট চতুর্থের কাছ মিত্রতার দূত পাঠান এবং
১২৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ভ্যাটিকানে মঙ্গোলীয় রাষ্ট্রদূত পাঠান। এছাড়া তিনি ইংল্যান্ডের রাজার কাছেও রাষ্ট্রদূত পাঠিয়েছিলেন।
এসব তিনি করেছিলেন সিরিয়া থেকে মুসলিম বাহিনীকে বিতারিত করার জন্য সম্মিলিত সামরিক অভিযান চালানোর জন্য।
এসব প্রচেষ্টার ভিতরেও মামলুক নেতা বাইবারস হালাকু খানের প্রতিষ্ঠিত এ্যান্টিয়োগ দখল করে নিয়েছিল। এই সূত্রে ১২৭১ খ্রিষ্টাব্দে ইংলজ্যান্ডের
রাজা এডওয়ার্ড প্রথম খ্রিষ্টান রাজশক্তিসমূহ একত্রিত করে নতুন ক্রুসেডের সূত্রপাত ঘটাতে চেয়েছিলেন।
এই উদ্দেশ্যে তিনি আক্রেতে পৌছান। এবং আবাকা খানের কাছে সামরিক সহযো্গিতার জন্য দূত
পাঠান। আকাবা এডওয়ার্ডের আবাদনে সাড়া দিয়ে অধিনায়ক সামাগড়ের নেততৃত্বে ১০,০০০ অশ্বারোহী সৈন্য পাঠান। কিন্তু এই
যুদ্ধে মোঙ্গল সৈন্যরা বিধ্বস্ত হয়ে ইউফ্রেটথিসের দিকে চলে যায়। অন্যদিকে ইংল্যান্ডও এই যুদ্ধে সুবিধা করতে না পরে আক্রমণ থেকে
পিছিয়ে আসে।
১২৭৭ খ্রিষ্টাব্দে মামলুক নেতা বাইবার্স মৃত্যুবরণ করলে, আবাকা পুনরায় সিরিয়া দখলের জন্য সচেষ্ট হয়।
১২৮০ খ্রিষ্টাব্দের সেটেম্বর মাসে মোঙ্গলীয় বাহিনী তুরস্কের বাঘ্রাস এবং ডার্বসাক দখল করে নেয়। এরপর সিরিয়ার দিকে
অভিযান পরিচালনা করে। ২০শে অক্টোবর এই বাহিনী সিরিয়ার আলেপ্পো শহর দখল করে। এরপর খ্রিষ্টান রাজাদের কাছে
জেরুজালেম অভিযানে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে। এই আহ্বান সাড়া দিয়ে সাইপ্রাসের রাজা হুগুয়েস তৃতীয় এবং
বোহেমোন্ড চতুর্থ সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হয়। কিন্তু মামলুক বাহিনী দ্রুত উভয় বাহিনীর মাঝখানে বিশাল প্রতিরোধ গড়ে
তুলেল, সকল বাহিনী একত্রিত হতে ব্যর্থ হয়। এই সময় আবাকা এবং লিও তৃতীয় নতুন ক্রুসেড শুরু করে। ১২৮১ খ্রিষ্টাব্দের
ফেব্রুয়ারিতে ক্রাকে মামলুক বাহিনী পরাজিত হয়।
এরপর চূড়ান্ত জয়ের লক্ষ্যে ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে আর্মেনিয়া, জর্জিয়া, গ্রিক এবং মোঙ্গল বাহিনী ক্রুসেড অভিযানে
অংশগ্রহণ মামলুক বাহিনীকে আক্রমণ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুসলমি বাহিনীর নেতা কালাওয়াবুনের কাছে পরাজিত হয়।
১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের ১ এপ্রিল আবাকা খান মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তাঁর ক্রিষ্টান স্ত্রী মারিয়া কনস্ট্যান্টিনোপলে তাঁর পিতার
কাছে পালিয়ে যান।
এই সময় রাজ্যের উত্তরাধিকার হিসেবে সিংহাসন লাভ করেন আহমেদ টেকুদার।
স্ত্রীর নাম: বুলুখান খাতুন।
সন্তানাদি: আর্ঘুন, গায়খাতু, ওলজাথ এবং কন্যা এলি কুৎলুঘ খাতুন।