বরাহমিহির
প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও কবি।

আনুমানিক ৫০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উজ্জয়িনীর নিকটবর্তী একটি স্থানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ধারণা করা হয়, বরাহমিহির ছিলেন পূর্ব ইরান থেকে আগত শক জাতিভুক্ত। তিনি গুপ্ত রাজা বিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের একজন ছিলেন। বরাহমিহির তার রচিত বৃহজ্জাতক গ্রন্থে বলেছেন, তিনি ছিলেন আদিত্যদাসের সন্তান, তিনি তার পিতার কাছ থেকে শিক্ষালাভ করেছিলেন। তিনি কাপিত্থক নামক স্থানে এবং অবন্তি নামক স্থানে বসবাস করার সময় তিনি এই (বৃহজ্জাতক) গ্রন্থটি রচনা করেন।  ভবিষ্য পুরাণে বরাহমিহিরের পৌরাণিক বিবরণ পাওয়া যায়।

এঁর রচিত তিনটি গ্রন্থকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়। এই গ্রন্থ তিনটি হলো – পঞ্চসিদ্ধান্তিকা, বৃহৎসংহিতা ও বৃহজ্জাতক। ধারণা করা হয়, এই গ্রন্থগুলো  ৫৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তিনি রচনা করেছিলন। তাঁর পঞ্চসিদ্ধান্তিকা গ্রন্থটি পাঁচটি খণ্ডে সমাপ্ত। এই গ্রন্থটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের সংক্ষিপ্তসার বলে অভিহিত করা হয়। পঞ্চসিদ্ধান্তিকার পাঁচটি খণ্ডের নাম– এই সিদ্ধান্তগুলো হলো- সূর্যসিদ্ধান্ত, বশিষ্ঠসিদ্ধান্ত, পৌলিশ সিদ্ধান্ত, রোমক সিদ্ধান্ত ও ব্রহ্ম সিদ্ধান্ত।

তিনি ভারতীয় পঞ্জিকা সংস্কার করে বৈশাখকে বৎসরের প্রথম মাস হিসেবে নির্ধারণ করেন। উল্লেখ্য এর আগে চৈত্র এবং বৈশাখকে বসন্ত ঋতুর অন্তর্গত ধরা হতো।

বরাহমিহির আর্যভট্টের গণিত অবলম্বনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র আবিষ্কার করেন। এদের মধ্যে রয়েছে নিচের ত্রিকোণমিতিক সূত্রগুলি:
sin x = cos ( π /2 x )
1 cos 2 /2 = sin 2 x
তিনি ১ম আর্যভট্টের প্রদত্ত সাইন সারণীগুলির উন্নতি সাধন করেন; তার দেয়া মানগুলি ছিল অধিকতর নিখুঁত। এর ফলে ভারতীয় জ্যোতির্বিদেরা আরও নিখুঁতভাবে গণনা করার সুযোগ পান।