বুদ্ধদেব বসু
১৯০৮-১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ
কবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, কথাসাহিত্যিক, অনুবাদক, সম্পাদক ও সাহিত্য-সমালোচক ছিলেন।
১৯০৮-১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দর ৩০ কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য,
তাঁর পরিবারের আদি নিবাস ছিল বিক্রমপুরের মালখানগরে। পিতা ভূদেবচন্দ্র বসু ছিলেন ঢাকা বারের উকিল। মায়ের নাম বিনয়কুমারী। তাঁর জন্মের পর,
তার মা ধনুষ্টংকার রোগে আক্রান্ত হয়েএ মায়ের মত্যুবরণ করেন। এরপর তাঁর পিতা পরিব্রজ্যা গ্রহণ করে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। ফলে তিনি মাতামহ চিন্তাহরণ ও মাতামহী স্বর্ণলতা সিংহ'র কাছে প্রতিপালিত হন।
১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। এই বছরে প্রকাশিত হয়
তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ মর্মবাণী।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর প্রথম গল্প 'রজনী হল উতলা'।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এই সময় অজিত দত্ত এবং তাঁর সম্পাদনায়
প্রকাশিত হয়েছিল সচিত্র মাসিক 'প্রগতি' নামক পত্রিকা। উল্লেখ্য ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে এই পত্রিকা
বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'বন্দীর বন্দনা'। এই বছরে
প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস সাড়া।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ এমএ পাশ করেন ।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা রিপন কলেজে ইংরেজি
সাহিত্যের অধ্যাপনা শুরু করেন। এই বছরে
প্রতিভা বসুকে
বিবাহ করেন। বিবাহের কিছুদিন পরে এঁরা বালগঞ্জের ২০২ রাসবিহারী এভিনিউয়ে একটি বাসায় উঠেছিলেন। এই বাসাতে এঁরা
প্রায় ২৯ বৎসর কাটিয়েছিলেন। এখানে জন্মেছি তাঁর দুই কন্যা মীনাক্ষীও দময়ন্তী
এবং পুত্র শুদ্ধশীল বসু।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রেমেন্দ্র মিত্রের সহযোগিতায় এবং তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিল 'কবিতা' নামক
ত্রৈমাসিক পত্রিকা। পত্রিকাটি প্রথম সংখ্যার প্রকাশের সময় ছিল 'আশ্বিন ১৩৪৪
বঙ্গাব্দ'। উল্লেখ্য
১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই পত্রিকা প্রকাশিত হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা 'চতুরঙ্গ'।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি স্টেটম্যান পত্রিকার সাথে যুক্ত হন।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে খ্রিষ্টাব্দে রিপন কলেজের অধ্যাপনার কাজ ত্যাগ করে
পত্রিকার কাজে অধিকতর সম্পৃক্ত হন।
১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি স্টেটম্যান পত্রিকার চাকরি ত্যাগ করেন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লি ও মহিশূরে ইউনেস্কোর প্রকল্প উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আমেরিকার পেনসিলভানিয়া কলেজ ফর উইমেন্স-এ যোগদান করেন।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে এই কলেজের শিক্ষকতা ত্যাগ করেন।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক
শিক্ষক হিসেবে যোগদান
করেন।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শরৎ বক্তৃতামালা’ প্রদান করেন।
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ত্যাগ করেন। এই বছরে তিনি
হনুলুলুতে হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করে ভারতে চলে আসেন।
১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে 'তপস্বিনী ও তরঙ্গিনী কাব্যনাট্যের জন্য সাহিত্য আকাদেমী
পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পদ্মভূষণ উপাধি পান।
১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পরিবার:
- স্ত্রী:
প্রতিভা বসু
- সন্তান: কন্যা- মীনাক্ষী দত্ত ও
দয়মন্তী বসু সিং। পুত্র শুদ্ধশীল বসু
বুদ্ধদেব বসুর রচনাসমগ্র
কাব্যগ্রন্থ
- মর্মবাণী (১৯২৫
- বন্দীর বন্দনা (১৯৩০)
- একটি কথা (১৯৩২)
- পৃথিবীর পথে (১৯৩৩)
- কঙ্কাবতী (১৯৩৭)
- দময়ন্তী (১৯৪৩)
- দ্রৌপদীর শাড়ি (১৯৪৮)
- শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৩)
- শীতের প্রার্থনা: বসন্তের উত্তর (১৯৫৫)
- যে-আঁধার আলোর অধিক (১৯৫৮)
- দময়ন্তী: দ্রৌপদীর শাড়ি ও অন্যান্য কবিতা (১৯৬৩)
- মরচেপড়া পেরেকের গান (১৯৬৬)
- একদিন: চিরদিন (১৯৭১)
- স্বাগত বিদায় (১৯৭১)
উপন্যাস
- সাড়া (১৯৩০)
- সানন্দা (১৯৩৩)
- লাল মেঘ (১৯৩৪)
- বাসরঘর (১৯৩৫)
- পরিক্রমা (১৯৩৮)
- কালো হাওয়া (১৯৪২)
- তিথিডোর (১৯৪৯)
- নির্জন স্বাক্ষর (১৯৫১)
- মৌলিনাথ (১৯৫২)
- নীলাঞ্জনের খাতা (১৯৬০)
- পাতাল থেকে আলাপ (১৯৬৭)
- রাত ভ'রে বৃষ্টি (১৯৬৭)
- গোলাপ কেন কালো (১৯৬৮)
- বিপন্ন বিস্ময় (১৯৬৯)
- রুক্মি (১৯৭২)
গল্প
- রজনী হ'ল উতলা(১৯২৬)
- অভিনয়,
অভিনয় নয় (১৯৩০)
- রেখাচিত্র (১৯৩১)
- হাওয়া বদল (১৯৪৩)
- শ্রেষ্ঠ গল্প (১৩৫৯)
- একটি জীবন ও কয়েকটি মৃত্যু (১৯৬০)
- হৃদয়ের জাগরণ (১৩৬৮)
- ভাসো আমার ভেলা (১৯৬৩)
- প্রেমপত্র (১৯৭২)
প্রবন্ধ
- হঠাৎ-আলোর ঝলকানি (১৯৩৫)
- কালের পুতুল (১৯৪৬)
- সাহিত্যচর্চা (১৩৬১)
- রবীন্দ্রনাথ: কথাসাহিত্য (১৯৫৫)
- স্বদেশ ও সংস্কৃতি (১৯৫৭)
- সঙ্গ নিঃসঙ্গতা ও রবীন্দ্রনাথ (১৯৬৩)
- প্রবন্ধ-সংকলন (১৯৬৬)
- কবি রবীন্দ্রনাথ (১৯৬৬)
- সমুদ্রতীর (১৯৩৭)
- আমার ছেলেবেলা (১৯৭৩)
- আমার যৌবন (১৯৭৩)
- আমি চঞ্চল হে (১৯৩৭)
- সব পেয়েছির দেশে (১৯৪১)
- উত্তর তিরিশ (১৯৪৫)
- জাপানি জার্নাল (১৯৬২)
- দেশান্তর (১৯৬৬)
- কবি রবীন্দ্রনাথ (১৯৬৬)
- মহাভারতের কথা (১৯৭৪)
- কবিতার শত্রু ও মিত্র (১৯৭৪)
নাটক
- মায়া-মালঞ্চ (১৯৪৪)
- তপস্বী ও তরঙ্গিণী (১৯৬৬)
- কলকাতার ইলেক্ট্রা
সত্যসন্ধ (১৯৬৮)
- প্রথম পার্থ(১৯৭০)
অনুবাদ
- কালিদাসের মেঘদূত (১৯৫৭)
- গহীন বালুচর (১৯৫৮)
- বোদলেয়ার: তার কবিতা (১৯৭০)
- হেল্ডালিনের কবিতা (১৯৬৭)
- রাইনের মারিয়া রিলকের কবিতা (১৯৭০)
ভ্রমণকাহিনি
- সব-পেয়েছির দেশে (১৯৪১)
- জাপানি জার্নাল (১৯৬২)
- দেশান্তর (১৯৬৬)
স্মৃতিকথা
- আমার ছেলেবেলা (১৯৭৩)
- আমার যৌবন (১৯৭৬)
সম্পাদনা
- গ্রন্থ:
- আধুনিক বাংলা কবিতা (১৯৬৩)
- পত্রিকা: