গওহর জামিল
১৯২৭-১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দ
বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও জাগো আর্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে বিক্রমপুরের (বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ) সিরাজদিখান গ্রামের বিখ্যাত নাগ পরিবারে
জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পারিবারিক নাম ছিল গণেশচন্দ্র নাগ।
মাত্র আট বছর বয়সে ইনি
বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী কালু নায়েরের শিকারী নৃত্য দেখে
নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন
শিক্ষকের কাছে নাচে তালিম নেন। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ভাস্কর দেব,
রবিশংকর, উদয় শংকর, বুলবুল চৌধুরীর নিকট নৃত্য শিখেন।
১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের
মারুথাপার পিনাই ও রামনারায়ণ মিশ্রের
কাছে ভরতনাট্যম ও কত্থক নৃত্যে পাঠ নেন।
১৯৫০
খ্রিষ্টাব্দে সাংস্কৃতিক সংস্থা কলা ভবন ও ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে জাগো আর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী
রওশন জামিলকে
বিয়ে করেন। এই সময় ইসলাম ধর্ম
গ্রহণ করে গওহর জামিল নামগ্রহণ করেন।
ইনি বেশ কয়েকটি নৃত্যনাট্য
রচনা করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নৃত্যনাট্যগুলো হলো- সামান্য ক্ষতি,
আনারকলি, বিচার, কাঞ্চনমালা, ইতিহাসের একটি পাতা, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ইত্যাদি।
খণ্ডনৃত্যের মধ্যে জেলে নৃত্য (পলো), সাঁওতাল, গারো, মোরং,
গ্রাম্য মেলা, জিপসি, ধোপা, সুখী জোড়া, চা বাগান ও মাতৃস্নেহ উল্লেখযোগ্য।
তিনি নানা সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে
যোগদান করেন। এ উপলক্ষে তিনি রাশিয়া, চীন, হংকং, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাজ্যসহ
পৃথিবীর অনেক দেশে নৃত্য পরিবেশন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্র
ভ্রমণকালে তিনি সেখানকার বিভিন্ন সংগীত ও নৃত্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। তিনি
চলচ্চিত্রের নৃত্য পরিচালক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে ২১ সেপ্টেম্বর সড়ক দূর্ঘটনায়
৫২ বছর বয়সে মৃত্যবরণ করেন।
তাঁর শিল্পকর্মের জন্য বাংলাদেশ
সরকার ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে
মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে। জাতীয় ডাক বিভাগ ২০০১
খ্রিষ্টাব্দে তাঁর নামে ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
সূত্র :
http://munshigonj.info/2012/01/25/50171/