১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে এলাহাবাদে গণনাট্য সংঘের সর্বভারতীয় সভা
অনুষ্ঠিত হয়। এই বছরে ডিব্রুগড়ের নালিয়াপুলে শান্তি সম্মেলন ও অসম গণনাট্য দ্বিতীয়
প্রাদেশিক সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে পুলিশের বাধায় সভা পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশে গুলিতে
দুটি মেয়েকর্মীর মৃত্যু হয়। এই সময় হেমাঙ্গ বিশ্বাস একটি বাথরুমে আত্মগোপন করে ১০
মাস অতিবাহিত করেছিলেন। পরে গোপনে কলকাতা চলে যান।
১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় তিনি গ্রেফতার হন। তবে অসুস্থতার জন্য কিছুদিনের মধ্যেই
মুক্তি পান।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে গুহাটিতে গণনাট্যের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রাদেশিক সম্মেলন হয়। উভয়
সম্মেলনে হেমাঙ্গ বিশ্বাস সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে বোম্বাইতে অনুষ্ঠিত হয় সর্বভারতীয় গণনাট্যের সপ্তম সম্মেলন হয়।
এই সভায় হেমাঙ্গ বিশ্বাসের নেতৃত্বে অসম প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে। এরপর তিনি
অসুস্থ হয়ে পড়েন।
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কমুনিউষ্ট পার্টির উদ্যোগে চীন যাত্রা করেন। প্রায় আড়াই বছর
চীনে থাকার পর, ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ফিরে আসেন। এই বছরে তিনি রাণু দত্তকে বিয়ে
করেন। এরপর এঁরা কলকাতা ও হুগলির শিয়াখালা গ্রামে বসবাস করা শুরু করেন।
১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে আসামে বাঙালি-অহমিয়া দাঙ্গা শুরু হলে, হেমাঙ্গ বিশ্বাস ও ভূপেন
হাজারিকা দাঙ্গা বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এই বছরে তিনি রচনা করেন 'হারাধন রঙমন'।
এছাড়া প্রকাশিত হয় 'Witnessing China with Eyes' নামক গ্রন্থ।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় তাঁর রচিত- সীমান্ত প্রহরী' নামক গ্রন্থ। এই বছরেই
কমরেড মুজাফ্ফর আহমদ-এর
সুপারিশে তিনি সোভিয়েত কনসালেটে চাকরি পান।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে কমিউনিষ্ট পার্টি বিভাজিত হলে- তিনি কোনো পক্ষেই যোগদান করেন নি।
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন 'কল্লোল; নামক নাটক।
১৯৬৭-৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মাসিক বসুমতী পত্রিকায় 'মুর্শিদ' ছদ্মনামে তাঁর লেখা
ছাপা হওয়া শুরু হয়।
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে নকশাল আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠলে তিনি নকশাল পন্থীদের
সমর্থন করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে অসমিয়া কাব্যগ্রন্থ 'কুলখুড়ার চোতাল' প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয় 'মাস সিঙ্গার্স'।
১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সোভিয়েত কনসালেটের চাকরি ত্যাগ করেন। এই বছরে তিনি ডাঃ
কেটনিস মেমোরিয়াল কমিটির প্রতিনিধি হিসেবে চীনে যান।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন- 'আবার চীন দেখের এলাম'। অহমিয়া ভাষায় রচনা
করেন- আকৌ চীন চাই আহিলো গ্রন্থের প্রথম খণ্ড।
১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় অহমিয়া ভাষায় রচনা করেন- আকৌ চীন চাই আহিলো গ্রন্থের
দ্বিতীয় খণ্ড এবং বাংলাতে 'চীন থেকে ফিরে' নামক গ্রন্থ।
১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দ তিনি গানের দল নিয়ে ঢাকা ভ্রমণ করেন। ৫ ও ৬ই মার্চ তাকে ঢাকায় গণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
১৯৮৩ অসমিয়া গ্রন্থ 'শিল্পী জীবন জ্যোতিপ্রকাশ' প্রকাশিত হয়। এই বছরে অহমিয়া ও
বাঙালির মধ্যে দাঙ্গা শুরু হলে- তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে দাঙ্গা রোধ করতে ব্যর্থ হন।
১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের ডাকে গণনাট্য সঙ্ঘ পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা
হয়। এই উদ্যোগের সূত্রে আগ্রাতে সম্মেলন আহবান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ
দিয়েছিলেন- কায়েফি আজমি, দীনা পাঠক, একে হাঙ্গল, রাজেন্দ্র রঘুবংশী, করুণা, সুব্রত
বন্দ্যোপাধ্যায়, নগেন কাকতি দিলীপ শর্মা প্রমুখ।
১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে গণনাট্য সংঘের রাজ্য সম্মেলন, হেমাঙ্গ বিশ্বাসকে সভাপতি বির্বাচন
করে। এই বছরের নভেম্বর মাসে হায়দ্রাবাদে সর্বভারতীয় নবম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এই অনুষ্ঠানে তিনি 'Peolples Music: A new Questions' শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন,
সমাদৃত হন। এই সম্মেলনে হেমাঙ্গ বিশ্বাস সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৬-৮৭ খ্রিষ্টাব্দে, অনুষ্টুও পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে আত্মজীবনী 'উজান গাঙ বাইয়া'
তিন পর্বে প্রকাশিত হয়।
১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে তিনি 'মাস সিঙ্গার্স'-এ অংশগ্রহণ করেন।
১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।