কেশবচন্দ্র সেন

(১৮৩৮-১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দ)
ব্রাহ্মধর্মের অন্যতম নেতা এবং ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা।

১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে নভেম্বর কলকাতার সম্ভ্রান্ত বৈষ্ণব বংশে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম প্যারীমোহন সেন এবং মায়ের নাম সরলা সুন্দরী দেবী।

 

ছাত্রজীবনে তিনি গভীরভাবে একত্ববাদী ধর্মতত্ত্ব এবং থিওডর পার্কার, এফ.ডবি­উ নিউম্যান, আর.ডবি­উ এমারসন, মিস ফ্লান্সিস কোবে এবং অন্যান্যদের দৃঢ় প্রচারণার প্রতি আকৃষ্ট হন। তবে মার্কিন একত্ববাদী ধর্মপ্রচারক, সি.এইচ.এ ডাল একত্ববাদের মতবাদ দ্বারা তিনি বিশেষভাবে প্রভাবিত হন।


১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে একত্ববাদ প্রচারের জন্য তিনি 'গুডউইল ফ্যাটার্নিটি' নামে ছাত্রদের একটি একত্ববাদী ধর্ম সভার প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের একটি সভায় তাঁর সাথে প্রথম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর পরিচয় হয়। দেবেন্দ্রনাথের প্রচারিত ব্রাহ্মধর্মে আকৃষ্ট হয়ে, ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে কেশবচন্দ্র ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন এবং অচিরেই তিনি তিনি ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তিতে পরিণত হন। দেবেন্দ্রনাথ এ প্রতিভাবান বক্তা এবং সংগঠকের মধ্যে ব্রাহ্ম সমাজের একজন অসাধারণ নেতা খুঁজে পান। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই দেবেন্দ্রনাথ ব্রাহ্মসমাজের গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম কেশবচন্দ্রের হাতে অর্পণ করেন।

১৮৫৮ থেকে ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তাঁর নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা এবং কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মসমাজকে ‌একটি ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে বিকশিত হরে থাকে। ব্রাহ্মধর্মের আদর্শ এবং অসাম্প্রদায়িক বিশ্বধর্মের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচারের জন্য, ১৮৬১ সালে তিনি ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র হিসেবে 'দি ইন্ডিয়ান মিরর' পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের আচার্য নিযুক্ত হওয়ার পর, তিনি স্বেচ্ছায় ধর্ম প্রচার প্রসারে মনোনিবেশ করেন। এই প্রচারে স্বেচ্ছাকর্মীর কথা তিনি বিশেষভাবে বিবেচনা করতে থাকেন।

ব্রাহ্মসমাজের আদর্শ হিসেবে তিনি সনাতন হিন্দু ধর্মের রীতি-নীতি বর্জনের উপর জোর দেন। তিনি বর্ণ প্রথা (ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র), অস্পৃশ্যতা, বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ ইত্যাদি বন্ধ করার ওপর বিশেষ জোর দেন। তিনি বিধবা ও আন্তবর্ণ বিবাহের একজন জোরালো সমর্থক ছিলেন। যে সকল ব্রাহ্মণ পুরুষ ব্রহ্ম হওয়ার পর পৈতা পরতেন, তিনি বর্জনের কথা বলেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৮৬২ এবং ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম বারের মতো যথাক্রমে বিধবা এবং আন্তবর্ণ বিবাহ সম্পন্ন হয়।

ব্রাহ্মসমাজের নারী শিক্ষার প্রতি তিনি বিশেষ জোর দেন। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘ব্রাহ্ম বন্ধু সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই সভায় তিনি নারী শিক্ষাকে বিশেষ আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে নারীবিষয়ক সংগঠন ‘বামাবোধিনী সভা’ ও ‘বামাবোধিনী পত্রিকা’র সংগঠকদের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রচেষ্টাকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা দেন।

কেশবচন্দ্রের এই জাতীয় সামাজিক সংস্কার ও নারী মুক্তির আন্দোলনকে দেবেন্দ্রনাথ সমর্থন করলেও, দেবেন্দ্রনাথ দীর্ঘদিনের প্রচলিত হিন্দুধর্মের সামাজিক রীতিনীতিকে অগ্রাহ্য করে কোনো আমূল পরিবর্তন চান নি।  কেশবচন্দ্র সরসারি দেবেন্দ্রনাথকে আক্রমণ করে বলেন যে, দেবেন্দ্রনাথ ভারতে ব্রাহ্মণ্যবাদকে আরেকটি হিন্দু বর্ণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন। ফলে উভয়ের মধ্য মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্ম সমাজের মধ্যে ভাঙ্গন দেখা দেয়।  কেশবচন্দ্র সেনের ব্রাহ্মসমাজের নাম হয় ‘ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ’। আর দেবেন্দ্রনাথের ব্রাহ্ম সমাজের নাম হয় ‘আদি সমাজ’ হিসেবে।

কেশবচন্দ্রের অসাধারণ সাংগঠনিক ক্ষমতার কারণে,  ব্রাহ্ম যুব সম্প্রদায় কেশবচন্দ্রের পক্ষে চলে যায়। ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে পূর্ব ভারতের ব্রাহ্মসমাজের ৬৫টি শাখার প্রায় সবকয়টি নতুন সমাজে যোগ দেয়। ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে সমগ্র ভারতে ‘ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্ম সমাজ’ এর শাখার সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১০১-এ। কেশব তাঁর এ বিশ্বজনীনতা প্রথম প্রচারের জন্য ১৮৬৯ সালের ২২শে আগস্ট একটি নতুন ধরনের মন্দির নির্মাণ করেন। এই মন্দিরে তিনি হিন্দুদের মন্দির, মুসলমানদের মসজিদ ও খ্রিষ্টানদের গির্জার স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্যের ঘটিয়ে অসম্প্রাদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকের মতে, এই সময় তিনি খ্রিষ্টধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন।

১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে তিনি ইংল্যান্ড যান এবং সেপ্টেম্বর মাসে ফিরে আসেন। ইংল্যাণ্ডের সমাজ ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করার পর, তাঁর সংস্কার স্পৃহা আরও বৃদ্ধি পায়। ইংল্যান্ড থেকে ফেরার নভেম্বর মাসে তিনি ‘ইন্ডিয়ান রিফর্ম অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের আদর্শ ছিল বদান্যতা, ভোগবিলাস-পানভোজনে মিতাচার, নারীর বৈষয়িক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, মাতৃভাষায় গণশিক্ষা এবং সুলভে পাঠ সামগ্রী সরবরাহ। এই সংগঠনের মাধ্যমে কেশবচন্দ্র সমাজ সেবা কমিটি, মদ্যপান বিরোধী সঙ্ঘ, বালিকা বিদ্যালয়, বয়স্কদের জন্য নৈশ বিদ্যালয়, পেশাভিত্তিক কারিগরি শিক্ষার জন্য শিল্প বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি কলকাতা এবং এর উপকণ্ঠে চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোলেন। ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাস থেকে তিনি সাপ্তাহিক 'সুলভ সমাচার' নামক একটি পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। পত্রিকাটির মূল্য ছিল মাত্র এক পয়সা। ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ এর প্রচার সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে (২৭,২০২) এবং ১৮৭৭ সাল পর্যন্ত এটিই ছিল বাংলায় সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকা। পত্রিকাটিতে প্রকাশিত প্রবন্ধের মধ্যে ছিল, ‘প্রজাকুলের দুর্দশা’, ‘দরিদ্রের বিলাপ’, ‘কলকাতার শ্রমিকদের দুর্দশা’ ইত্যাদি। পত্রিকাটি জনগণের অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বের ওপরও জোর দেয়।

১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে ‘নেটিভ (ব্রাহ্ম) ম্যারিজ অ্যাক্ট থ্রি’ পাস হওয়ার পর, দেবেন্দ্রনাথ ও কেশবের মাঝে ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পায়। এ অ্যাক্ট কেশবের সমাজ সংস্কারের সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ আইনে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিদ্যাসাগরের মতো উদারপন্থী সংস্কারকগণ কর্তৃক সকল সংস্কার স্বীকৃত হয়। এর ভিতরে ছিল আন্তবর্ণ ও বিধবা বিবাহ সমর্থন, বাল্য বিবাহ, স্বামী বা স্ত্রী কর্তৃক দ্বিতীয় বিবাহ ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ স্বীকৃত হয়। সে সময়ে গোঁড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও, আদি ব্রাহ্মসমাজের প্রবীণ ব্যক্তিরা গ্রহণ করতে পারেন নি। অনেকে এই আইনকে 'নাস্তিক্যধর্মী সিভিল ম্যারিজ অ্যাক্ট' হিসেবে বিবেচনা করতে থাকেন।


১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তিনি তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সন্ন্যাসীর আশ্রম হিসেবে 'সাধন কানন' প্রতিষ্ঠা করেন। এই আশ্রমে তিনি এবং ব্রাহ্ম সমাজের কয়েকজন পণ্ডিতকে ইসলাম, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান ধর্মগ্রন্থ বিষয়ে পড়াশোনা এবং ধর্মগ্রন্থগুলোর বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করার জন্য নিয়োগ দেন। এই সময় তাঁরই অনুপ্রেরণায় গিরিশচন্দ্র সেন কুরাআন শরিফের বাংলা অনুবাদ করেন। এই সময় কেশবচন্দ্রের সাথে রামকৃষ্ণ-এর নিবিড় ব্যক্তিগত সর্ম্পক গড়ে ওঠে। ব্রাহ্মসম্প্রদায়ের জীবনকে সর্বজনীন ধর্ম করার নিমিত্তে তিনি ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘ভারত আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করেন। সম্ভবত রামকৃষ্ণের প্রভাবেই তিনি ব্রাহ্ম সমাজে যোগাভ্যাস, বৈরাগ্য এবং ঈশ্বরকে মাতৃরূপে আরাধনার সূচনা করেন।

 

কেশবচন্দ্রের নব্য ভাবনা অনেকেই গ্রহণ করতে পারেন নি। ফলে অনেকে কেশবচন্দ্রের সংশ্রব ত্যাগ করেন।  বিশেষ করে রামকৃষ্ণের প্রভাবে যোগাভ্যাস, বৈরাগ্য এবং ঈশ্বরকে মাতৃরূপে প্রার্থনা করাকে সনাতন হিন্দু ধর্মের নব্য রূপ হিসেবে বিবেচনা করতে থাকেন। ফলে ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘সমদর্শী সভা’ নামে একটি উদারপন্থী দল তৈরি হয়। এর প্রকাশ ঘটে ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে শিবনাথ শাস্ত্রীর নেতৃত্বে।

ঊনিশ শতকের শেষের দিকে বাংলায় জাতীয়তাবাদ চেতনা বৃদ্ধি পেলে এবং এতে প্রগতিশীল শ্রেণির লোকেরা কেশবচন্দ্রের সংশ্রব ত্যাগ করতে থাকে। ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত হয় ব্রিটিশ প্রশাসনের বিরোধী 'ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশন'। এই সময় কেশবচন্দ্র 'ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশন' বিরুদ্ধে দাঁড়ান। এটি ছিল কেশবচন্দ্রের সমর্থকদের জন্য বড় আঘাত। কারণ ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ভারতীয়দের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন এবং ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জাতীয়তাবাদী চেতনার উৎসাহ প্রদানে সচেষ্ট ছিলেন। কিন্তু, 'ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশন'-এর পর থেকে তিনি প্রকাশ্যে বলেন যে, ভারতে ব্রিটিশ শাসন দৈব ইচ্ছার পরিপূরণ এবং কল্যাণধর্মী।

১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ফেব্রুয়ারি মাসে জনসম্মুখে কুচবিহারের মহারাজার সাথে কেশবচন্দ্র তার নাবালিকা কন্যা সুনীতি দেবীর বিবাহের ঘোষণা দেন। এটি ছিল  ‘ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ’-এর উদারপন্থী এবং রক্ষণশীল উভয় সম্প্রদায়ের জন্য বড় আঘাত। ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে 'ব্রাহ্ম বিবাহ আইন' লংঘন করে কেশবচন্দ্র তার মেয়ের বিবাহকে ন্যায্যতা দেন এবং বলেন যে, এটি ‘ঈশ্বরের দূরদর্শিতা’। ফলে ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই মে প্রগতিশীলরা সাংবিধানিক ভিত্তিতে সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ গড়ে তোলে। এই সময় কেশবচন্দ্রের ব্রাহ্মসমাজ নামহীন দুর্বল একটি সংগঠনে পরিণত হয়।

১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে ‘আর্য নারী সমাজ’ গঠনের মাধ্যমে তাঁর সংস্কার কর্মকাণ্ড শুরু করেন। এক্ষেত্রেও তিনি প্রাধান্য দিয়েছিলেন সনাতন হিন্দু ধর্মের আদর্শের প্রতি। তিনি অন্যান্য ধর্মসম্প্রদায়ের নারীদের মুক্তির  কথা এ সময় বাদ দেন। এরপর তিনি বিশ্বধর্ম অনুসন্ধানে আবার সচেষ্ট হন। ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তাঁর পরিচালিত  ব্রাহ্মসমাজের নাম দেন ‘নব বিধান'। মূলত তিনি এশিয়ার ‘সর্বেশ্বরবাদ’ ও ‘অতীন্দ্রিয়বাদ’-এর সাথে ইউরোপের বস্তুবাদ ও বিজ্ঞানকে সংমিশ্রণ ঘটাতে চেয়েছিলেন। তিনি সকল ধর্মের উৎকৃষ্ট বিষয়ের সমন্বয় করে একটি উদার মতবাদ প্রচারের চেষ্টা করতে থাকেন।

১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে কেশবচন্দ্র তাঁর সমাজের প্রাত্যহিক জীবনের সার্বজনীন আইন ও পথনির্দেশিকা হিসেবে নবসংহিতা সংকলন করেন। তাঁর সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূলেই ছিল বিশ্বধর্ম প্রতিষ্ঠা। ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জানুয়ারি তাঁর শেষ ভাষণ ‘এশিয়াস মেসেজ টু ইউরোপ’-এ তিনি বৈজ্ঞানিক একতার ভিত্তিতে নব বিধানের প্রয়োজন পুনরুল্লেখ করেন। তাঁর সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও নববিধান জনপ্রিয় হয়ে উঠে নি। সমাজের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং তাঁর ভগ্নস্বাস্থ্য এ কর্মকাণ্ডকে স্থবির করে দেয়।

 

১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। উল্লেখ্য তাঁর মৃত্যুর পর নেতৃত্বের অভাবে নববিধান বিলুপ্ত হয়ে যায়।