কবীর  
 ?-১৫১৮ খ্রিষ্টাব্দ।
প্রাচীন ভারতের একজন কবি।
কবীরে জন্মকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা যায় না। অনেকের 
মতে ১৩৯৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে কাশীর নিকটবর্তী লহরতালাবেরর একটি মুসলিম পরিবারে 
জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এঁর পূর্বপুরুষরা ছিলেন তাঁতি। তবে তাঁর জন্ম নিয়ে নানা ধরনের 
গল্প প্রচলিত আছে।  কথিত আছে- বারানসির ব্রাহ্মণ কুমারীর গর্ভে জন্ম কবীর জন্মগ্রহণ 
করেছিলেন। জন্মের পর কবিরের মা পুত্রকে ভাসিয়ে দেন পানিতে। নদী থেকে এক মুসলিম তাঁতী দম্পতি নিরু এবং নিমা তাকে কুড়িয়ে নিয়ে যান নিজেদের ঘরে।
কথিত আছে অল্প বয়সেই কাশীর ভক্তিবাদের গুরু রামানন্দের সংস্পর্শে এসেছিলেন। ফলে 
শৈশবেই পারাবারিক ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি এবং রামানন্দের একেশ্বরবাদের দর্শন তাঁকে গভীরভাবে আলোড়িত 
করেছিল। অক্ষয়কুমার দত্তের 'ভারতবর্ষীয় উপাসক 
সম্প্রদায়' গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাগে 'কণ্-ফোট যোগী' শিরোনামে লিখিত গোরক্ষনাথ ও 
কবীরের মধ্যে হিন্দি ভাষায় লিখিত কথোপকথনের বিষয় উল্লেখ করেছেন। এই সূত্রে ধারণা করা 
যায়- নাথধর্মের সাথে তাঁর বিশেষভাবে পরিচয় ঘটেছিল। এবং তাঁর ধর্মচিন্তায় নাথধর্মের প্রভাব 
পড়েছিল। তিনি সুফীদর্শন সম্পর্কে অবগত হয়েছিলেন- শেখ তক্কি নামক দরবেশের কাছে। 
এতসব ধর্মদর্শনের প্রভাবে তাঁর ভিতরে গড়ে উঠেছিল একটি একেশ্বরবাদী মিশ্র-দর্শন। এই 
ধর্মদর্শন তাঁকে সর্বধর্মে আদর্শবাদী করে তুলেছিল।  এই দর্শনের সূত্রে সৃষ্টি 
হয়েছিল কবীর পন্থীদের আদর্শ। কবীরের নিজস্ব গান ও বাণী মৌখিকভাবে 
ছড়িয়ে পড়েছিল কাশী, দিল্লী, পাঞ্জাব, রাজাস্থান, গুজরাট, বিহার, বাংলা, উড়িষ্যা 
অঞ্চল জুড়ে। তাঁর গানে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন 
গুরু নানক। শিখরা তাঁর গানকে ধর্মানুষঙ্গ 
হিসেবে ব্যবহার করায় সমগ্র ভারতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন কবীর।
অনেকে মনে করেন- তিনি চিরকুমার ছিলেন। আবার অনেকের মতে-লোই নাম্নী জনৈকা নারীকে 
বিয়ে করেছিলেন। এঁর গর্ভে জন্মগ্রহণ 
করেছিলেন পুত্র 
কামাল এবং কন্যা কামালি। 
১৫১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যবরণ করেন।