মালকাজান (বড়)
ব্রিটিশ ভারতের একজন
স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী।
তাঁর পিতা রবার্ট উইলিয়াম ইয়োয়ার্ড ছিলেন ইহুদি। মা রুক্মিণী
ছিলেন ভারতীয়। বিবাহের পর রুক্মিণীর নাম হয়েছিল ভিক্টোরিয়া। আর এঁদের একমাত্র কন্যার
নাম রাখা হয়েছিল অ্যাঞ্জেলিনা। ভিক্টোরিয়া ও রবার্টের সংসার বেশি দিন স্থায়ী হয় নি।
উভয়ের ভিতর ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর, ভিক্টোরিয়া খুরশিদ নামক একজন মুসলমান যুবকের সাথে
বারাণসী শহরে আসেন। এখানেই উভয়েই মা ও মেয়ে ধর্মান্তরিত হন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর
ভিক্টোরিয়ার নাম হয় মালকাজান এবং অ্যাঞ্জেলিনা নাম হয়
গহরজান।
মালকাজান আগ্রাতে
থাকাকালে বিভিন্ন ওস্তাদের কাছে শাস্ত্রীয় নৃত্য ও সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন।
বারানসীতে থাকার সময় তিনি কথক নৃত্যে বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এই সময় আরও
কয়েজন বাইজির নাম মালকাজান ছিলেন। এঁরা হলেন- আগ্রার মালকাজান, মুলক্ পুখরাজের
মালকাজান, চুলবুলির মালকাজান। এদের ভিতরে বেনরাসের মালকাজান ছিলেন বয়সে বড়। তাই তিনি
নিজের নাম রেখেছিলেন বড় মালকা জান।
চার বছর বারাণসীতে থাকার
পর,
১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে
খুরশিদ, মালকাজান এবং
গহরজানকে নিয়ে কলকাতার কলুটোলা অঞ্চলে থাকা শুরু করেন।
ইতিমধ্যেই দেশের রাজা-মহারাজাদের দরবারে
গহরজানের ডাক পড়া শুরু হয়। ক্রমে ক্রমে
কলকাতায় তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে, তিনি মেটিয়াবুরুজের নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের দরবার
ডাক পান। এখানে তাঁর সাথে পরিচয় ঘটে কত্থকের প্রবাদপ্রতিম গুরু বিন্দাদিন মহারাজের
সাথে। মহারাজ গহরের নাচের তালিম দেন। একই সাথে তিনি গানের চর্চা চালিয়ে যেতে থাকেন।
দরবারে তাঁর প্রধান পরিচয় ঠুমরী-শিল্পী হলেও, তিনি ধ্রুপদ, খেয়াল গানেও সুখ্যাতি
পেয়েছিলেন। আধাশাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিভাগে ঠুমরি ছাড়াও তিনি হোরি, চৈতি, কাজরি, টপ্পা,
গজক গানে পারদর্শী ছিলেন। এছাড়া কথক নাচেও তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
বাইজি হিসেবে গহরজানের উত্থানের পর, বড় মালকাজান ধীরে ধীরে সঙ্গীতজগত থেকে হারিয়ে
যান।
সূত্র: