মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক
(১৮৬০-১৯৩৩)

প্রসিদ্ধ বাঙালি কবি। পেশাগত দিক থেকে তিনি ছিলেন সাংবাদিক। বাঙালি-মুসলমানদের জন্য সর্বপ্রথম তিনি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেছিলেন।

১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার অন্তর্গত শান্তিপুরের বাউইগাছি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম নাসিরউদ্দিন আহমেদ। অল্প বয়সে পিতাকে হারান। এরপর তার নানা বাড়িতে কাছে শান্তিপুরে তিনি লালিতপালিত হন।

তিনি শান্তিপুরের এক মাইনর স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর শান্তিপুর মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে এই স্কুলের পাঠ অসমাপ্ত রেখেই কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনের শুরুতে  'কলকাতা সাপ্তাহিক সময়' পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন।

১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ তিনি ফারসি ভাষা থেকে বাংলায় শাহনামা অনুবাদ করেন। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জনপ্রিয় উপন্যাস জোহরা রচনা করেন।

১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষার বাংলা ভাষার পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। ১৯১৯ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন।

১৩২৭ বঙ্গাব্দের বৈশাখ (এপ্রিল-মে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ) মাসে
কলকাতা থেকে তাঁর সম্পাদনায় মোসলেম ভারত নামক পত্রিকা প্রকাশনা শুরু হয়েছিল। অবশ্য এই পত্রিকার মূল দায়িত্ব পালন করতেন তাঁর পুত্র আফজালুল হক।

১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর তিনি  শান্তিপুরে মৃত্যুবরণ করেন।

মোজাম্মেল হকের রচনা
কাব্যগ্রন্থ:

কুসুমাঞ্জলি (১৮৮১)
অপূর্ব দর্শন কথা (১৮৮৫)
প্রেমাহার (১৮৯৮)
জাতীয় ফোয়ারা (১৯১২)
তাপস কাহিনী (১৯১৪)
ইসলাম সঙ্গীত (১৯২৩)

উপন্যাস

জোহরা (১৯১৭)
দরফ গাজি খান (১৯১৭)

অন্যান্য রচনা

মহর্ষি মনসুর (১৮৯৬)
ফেরদৌসি চরিত (১৮৯৮)
হজরত মুহাম্মদ (১৯০৩)
শাহনামা (১৯০৯)
খাজা মইনউদ্দিন চিশতি (১৯১৮)
হাতেমতাই (১৯১৯)
টিপু সুলতান (১৯৩১)
শান্তিপুরের রাসলীলা


সূত্র:
বঙ্গগৌরব/জলধর সেন। ম্যাক্‌মিলান এ্যন্ড কোম্পানি লিমিটেড/কলকাতা। ১৯৯২।