সালাউদ্দিন আইয়ুবি
(১১৭৪-১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দ )
মিশর ও সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর পূর্ণ নাম আবু নাসির সালাহুদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব। পাশ্চাত্যে তিনি সালাদিন নামে পরিচিত।

তিনি ছিলেন কুর্দি জাতিগোষ্ঠীর
১১৩ খ্রিষ্টাব্দে মেসোপটেমিয়া'র তিকরিতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম নাজমুদ্দিন আইয়ুব । এঁদের উত্তরপুরুষেরা মধ্যযুগীয় আর্মেনিয়ার ডিভিন শহর থেকে। ।

১১৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর নান নূরউদ্দিন জেনগি তাকে ফাতেমীয় মিশরে প্রেরণ করেন। এই  মিশনে ক্রুসেডারদের বির্ধে যুদ্ধে সাফল্য লাভের সূত্রে তিনি ফাতেমীয় সরকারের উচ্চপদে পৌছান। ফাতেমীয় খলিফা আল আদিদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

১১৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তার চাচা শেরেকোহ মৃত্যুবরণ করলে আল আদিদ সালাহউদ্দীনকে তার উজির নিয়োগ দেন। শিয়া নেতৃত্বাধীন খিলাফতে সুন্নী মুসলিমদের এমন পদ দেয়া সে সময় বিরল ঘটনা ছিল। উজির থাকাকালে তিনি ফাতেমীয় শাসনের প্রতি বিরূপ ছিলেন।  আল আদিদের মৃত্যুর পর তিনি  বাগদাদের আব্বাসীয় খিলাফতের আনুগত্য ঘোষণা করেন। পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি ফিলিস্তিনে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালান, ইয়েমেনে সফল বিজয় অভিযানের আদেশ দেন। এই অভিযানে তিনি উচ্চ মিশরের ফাতেমীয়পন্থি বিদ্রোহ উৎখাত করেন।

১১৭৪ খ্রিষ্টাব্দে নূরউদ্দিনের মৃত্যুর অল্পকাল পরে সালাহউদ্দীন সিরিয়া বিজয়ে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দেন। দামেস্কের শাসকের অনুরোধে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে শহরে প্রবেশ করেন। ১১৭৫ খ্রিষ্টাব্দের  মধ্যভাগে তিনি হামা ও হিমস জয় করেন। এই সময় জেনগি নেতারা তাঁর বিরোধিতা শুরু করেন। তিনি জেনগি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন এবং আব্বাসীয় খলিফা আল মুসতাদি কর্তৃক মিশর ও সিরিয়ার সুলতান ঘোষিত হন। উত্তর সিরিয়া ও জাজিরায় তিনি আরও কিছুদিন অভিযান চালান। এসময় হাশিশীনদের দুটি হত্যাচেষ্টা থেকে তিনি বেঁচে যান।

১১৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মিশরে ফিরে আসেন। ১১৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি  আলেপ্পো জয় করেন। সালাহউদ্দীনের নেতৃত্বে আইয়ুবী সেনারা ১১৮৭ খ্রিষ্টাব্দে হাত্তিনের যুদ্ধে ক্রুসেডারদের পরাজিত করে। এর ফলে মুসলিমদের জন্য ক্রুসেডারদের কাছ থেকে ফিলিস্তিন জয় করা সহজ হয়ে যায়।  কিছুকাল এই আধিপত্য বজায় থাকলেও হাত্তিনের পরাজয় এই অঞ্চলে মুসলিমদের সাথে ক্রুসেডার সংঘাতের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দামেস্কে মৃত্যুবরণ করেন। তার অধিকাংশ সম্পদ তিনি তার প্রজাদের দান করে যান। উমাইয়া মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়। সেখানে তার মাজার অবস্থিত