শোরী মিঞা
টপ্পা গানের জনক হিসেবে পরিচিত।
তাঁর জন্ম তারিখ সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে তেমন কিছু জানা যায় না। তিনি লক্ষ্ণৌর
নবাব বংশের তৃতীয় পুরুষ সুজা-উদ্-দৌল্লার (রাজত্বকাল ১৭৫৩-১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দ)
সমসাময়িক ছিলেন। শোরী মিঞার মূল নাম গোলাম নবী। তিনি তাঁর রচিত এবং পরিবেশিত গানের
ভণিতায় শোরী মিঞা নাম উল্লেখ করতেন। এই কারণে তাঁর গান শোরী মিঞার গান হিসেবে
প্রচলিত হয়। এই সূত্রে শোরী মিঞা নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। অনেকের মতে শোরী মিঞার
অপর নাম ছিল গোলাম নবীর। অবশ্য কেউ কেউ এও বলে থাকেন যে, শোরী ছিলেন গোলাম নবীর
স্ত্রীর নাম।
শোরী মিঞার পিতা গোলাম রসুল ছিলেন সুজা-উদ্-দৌল্লার রাজদরবারের সভাগায়ক। উত্তরাধিকার সূত্রে শোরী মিঞার সঙ্গীত শিক্ষা হয়েছিল পিতার কাছে। কথিত আছে, তাঁর কণ্ঠ পিতার মতো ধ্রুপদ খেয়ালের উপযোগী ছিল না। তাই তিনি রাগাশ্রয়ী চটুল গান করতেন। পাঞ্জাবের লোকগান (উট চালকেদের গান হিসেবে উল্লেখ করা হয়) শুনে, এর সাথে রাগের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন ধরনের সঙ্গীত শৈলী প্রচলন করেছিলেন। তাঁর এই গান ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং টপ্পা নামে পরিচিতি লাভ করে। এই জনপ্রিয়তার সূত্রে নবাব সুজা-উদ্-দৌল্লা তাঁকে গান পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানান। গান শুনে দরবারের সবাই তাঁর প্রশংসা করেন। নবাব নিজেও তুষ্ট হয়ে, তাঁকে পুরস্কৃত করেন। কথিত আছে শোরী মিয়া নবাবের প্রদেয় অর্থ দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। এই সংবাদ পেয়ে পুনরায় তাঁকে অর্থ দান করেছিলেন।
শোরী মিয়ার মৃত্যুকাল ও মৃত্যুস্থান সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। গম্মু নামক তাঁর একজন শিষ্যের নাম পাওয়া যায়। কিন্তু এই শিষ্য সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু জানা যায় না।