সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
(১৮৮২-১৯২২)
প্রখ্যাত বাঙালি কবি। তিনি ছন্দের যাদুকর নামে খ্যাত হয়েছিলেন।
১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নিকটবর্তী নিমতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল বর্ধমানের চুপী গ্রামে। পিতা রজনীনাথ দত্ত
ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং পিতামহ
অক্ষয়কুমার দত্ত ছিলেন
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক।
১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স করে জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ) ভর্তি হন
।
১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে স্কটিশ চার্চ থেকে এফএ পাস
করেন। পরে এই কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি প্রথমে পিতার ব্যবসা
প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন এবং পরে ব্যবসা ছেড়ে কাব্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন।
শুরুর দিকে ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম বিশিষ্ট কবি।
অল্প দিনের মধ্যে কবিতাকে তিনি নানা ধরনের ছন্দের দোলায় নিবদ্ধ করার
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তিনি বাংলা ভাষার নিজস্ব বাগধারা ও ধ্বনি সহযোগে নতুন ছন্দসৃষ্টিও
করেছিলেন। এই সূত্রে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ‘ছন্দের জাদুকর’
নামে।১৯১৮
খ্রিষ্টাব্দে ভারতী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায়
ছন্দ সম্পর্কিত তাঁর প্রসিদ্ধ রচনা ‘ছন্দ-সরস্বতী’ প্রকাশিত হয়। বাংলা শব্দের
সঙ্গে আরবি-ফারসি শব্দের সমন্বিত ব্যবহার দ্বারা বাংলা কাব্যভাষার শক্তি বৃদ্ধির
প্রাথমিক কৃতিত্ব তাঁরই।
এছাড়া তিনি আরবি, ফারসি, চীনা, জাপানি, ইংরেজি
ও ফরাসি ভাষার বহু কবিতা অনুবাদ করেছিলেন।
সত্যেন্দ্রনাথ একাধিক ছদ্মনামে কাব্যচর্চা করতেন। এর ভিতরে
উল্লেখ্যযোগ্য ছিল- নবকুমার, কবিরত্ন,
অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর।
১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জুন (রবিবার
১১ আষাঢ়), রাতে ব্রঙ্কাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যু
বরণ করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা
- সবিতা (১৯০০)
- সন্ধিক্ষণ (১৯০৫)
- বেণু ও বীণা (১৯০৬)
- হোম শিখা (১৯০৭)
- ফুলের ফসল
(১৯১১)
- কুহু ও কেকা (১৯১২)
- তুলির লিখন (১৯১৪),
- অভ্র-আবীর (১৯১৬)
- হসন্তিকা
(১৯১৯)
- বেলা শেষের গান (১৯২৩)
- বিদায়-আরতি (১৯২৪)
- কাব্যসঞ্চয়ন (১৯৩০)
- শিশু-কবিতা (১৯৪৫)।
অনুদিত কাব্য:
- তীর্থরেণু (১৯১০),
- তীর্থ-সলিল (১৯১৮),
- মণিমঞ্জুষা (১৯১৫)
উপন্যাস
প্রবন্ধ
- চীনের ধূপ (প্রবন্ধ ১৯১২)
- ছন্দ-সরস্বতী (প্রবন্ধ, ১৯১৯)
নাট্যানুবাদ
তথ্য সূত্র: