মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী
(১৮৯৬-১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ)
সাংবাদিক, উপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক
১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর (শনিবার
২৮ শে ভাদ্র ১৩০৩) সাতক্ষীরা জেলার বাঁশদহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করে।
তাঁর পিতা মুনশি মোহাম্মদ ইব্রাহিম ছিলেন একজন পল্লিচিকিৎসক।
স্থানীয় গ্রামের ইংরাজী স্কুল হতে বাল্য শিক্ষা সমাপ্ত করে
তিনি নিকটবর্তী বাবুলিয়া উচ্চ ইংরেজী স্কুল
ভর্তি হন। এই স্কুল থেকে বৃত্তি পেয়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করেন।
এরপর তিনি
কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে এফএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। এই
কলেজের ছাত্র থাকাকালীন তিনি অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন।
এই সূত্রে এখানেইতাঁর লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে।
এর পর তিনি
মোহাম্মদী
পত্রিকায় যোগদান করেন। উল্লেখ্য,
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে 'সাপ্তাহিক মোহাম্মদী' আত্মপ্রকাশ করে। ১৯২১
খ্রিষ্টাব্দে
মোহাম্মদ আকরাম
খাঁ-এর সম্পাদিত অপর একটি পত্রিকা ছিল 'দৈনিক
সেবক'। এই পত্রিকার '১০
ডিসেম্বর ১৯২১' সংখ্যায় ‘অগ্রসর’ শীর্ষক সরকার-বিরোধী
সম্পাদকীয় প্রকাশ করায় বাংলার সরকার কর্তৃক পত্রিকাটি নিষিদ্ধ হয়। এই সম্পাদকীয়
লেখার অজুহাতে একই দিনে সরকার
মাওলানা আকরাম
খাঁকে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১২৪-ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ফলে
'সাপ্তাহিক মোহাম্মদী' ও 'দৈনিক
সেবক' (অপর উর্দু দৈনিক 'জামানা')
প্রকাশ-সঙ্গটে পড়ে যায়।
মাওলানা আকরাম
খাঁ মূলত দৈনিক পত্রিকা প্রকাশে বেশি উৎসাহী ছিলেন। তাই 'দৈনিক
সেবক' বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, তিনি
জেলে থেকে সাপ্তাহিক মোহাম্মদীর দৈনিক সংস্করণ হিসেবে দৈনিক মোহাম্মদী
প্রকাশ করার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ
অনুসারে মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক করে
'দৈনিক মোহাম্মদী'-এর প্রকাশনা শুরু হয়।
দৈনিক মোহম্মদী
এবং দৈনিক সেবক ছাড়াও তিনি সাপ্তাহিক সওগাত, সাপ্তাহিক খাদেম, ইংরেজি দি মুসলমান ইত্যাদি পত্রিকায়
কাজ করেছেন। স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি ১৯৩৫খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা ছেড়ে বাঁশদহে ফিরে আসেন এবং সেখানেই ১৯৫৪
খ্রিষ্টাব্দের ৮ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ ও জীবনী প্রভৃতি বিভাগে তাঁর রচনাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্বর্ণা নন্দিনী, মরুভাস্কর, শাহনামা, মহামানব মহসীন ও সিন্দাবাদ হিন্দবাদ ।