১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত
সৈন্যবাহিনীর মধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহের জাগরণ সৃষ্টি করতে অবিরত কাজ করা শুরু করেন যতীন।
তিনি গোপনে গোপনে বিপ্লবীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। দেশ-বিদেশ
থেকে বিপ্লবী গদার পার্টির হাজার হাজার সশস্ত্র সদস্যের অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়।
সংগ্রহ করা হয় বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জার্মান সরকার জানিয়েছিল, অস্ত্র বোঝাই ৩টি জাহাজ ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে পাঠাবে: সেই অনুযায়ী, ম্যাভেরিক, আ্যানি লার্সেন ও হেনরি-এস নামে তিনটে জাহাজ রওনা
দেয়। কৃপাল সিং নামে এক বিশ্বাসঘাতক 'গদর' কর্মীর রাসবিহারী'র প্রচেষ্টার কথা
প্রকাশ করে দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চেকোস্লোভাকিয়া থেকে সমাগত বিপ্লবীরা ইন্দো-জার্মান সহযোগিতার সংবাদ ফাঁস করে দেয়। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের উদ্যোগে জার্মান সরকারের
সঙ্গে জার্মান বিভিন্ন দূতাবাসের পত্র ও তারবার্তা হস্তগত করে। সব মিলিয়ে পুরো
পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যায়। তিনটি জাহাজের একটি
হাতিয়ায়, একটি সুন্দরবনের রায়মঙ্গলে এবং একটি ওড়িশার বালেশ্বর উপকূলে পৌঁছনোর
কথা ছিল।
যতীন্দ্রনাথ সুন্দরবনের রায়মঙ্গলে কাছে তাঁর সহকর্মীদের সাথে সাতদিন অপেক্ষা
করেছিলেন। পরে বিপদবুঝে সেখান থেকে চলে আসেন এবং নেপাল সরকারের চাকরি নিয়ে নেপালে
চলে যান। পরে তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের সাথে যুক্ত হন এবং আজীবন তাঁর এই সম্পর্ক বজায়
ছিল। তিনি বাংলা ভাষায় চিকিৎসা শাস্ত্রের গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলো হলো- এ্যানাটমি ও
ফিজিওলোজি, মেটিরিয়া মেডিকা (অনুবাদ), শিশু ও স্ত্রী চিকিৎসা, ইনজেকশন চিকিৎসা
ইত্যাদি।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।