বিষের বাঁশী
কাজী নজরুল ইসলাম
	
		
	
		
			                   
               
		মরণ-বরণ
             
		[গান]
             এসো এসো এসো ওগো মরণ!
	
	এই        মরণ-ভীতু মানুষ-মেষের ভয় করে গো হরণ॥
	
             না বেরিয়েই পথে যা'রা পথের ভয়ে ঘরে
	
            বন্ধ-করা অন্ধকারে মরার আগেই মরে,
	
	           
তাতা থৈ থৈ তাতা থৈ থৈ তাদের বুকের 'পরে- 
	ভীম      রুদ্রতালে নাচুক তোমার ভাঙন-ভরা চরণ॥ 
                    দীপক রাগে বাজাও জীবন-বাঁশি
	
                    মড়ার মুখেও আগুন উঠুক হাসি'।
	
            কাঁদে পিঠে কাঁদে যথা শিকল জুতোর ছাপ
	
           
নাই সেখানে মানুষ সেথা বাঁচাও মহাপাপ,
		সে        দেশের বুকে শ্মাশান মশান জ্বালুক তোমার শাপ,
	
	সেথা     জাগুক নবীন সৃষ্টি অবার হোক নব নাম-করণ॥
                     হাতের তোমার দণ্ড উঠুক কেঁপে',
	
                    এবার দাসের ভুবন ভবন ব্যেপে'।
	
            মেষগুলোকে শেষ ক'রে দেশ-চিতার বুকে নাচো!
	
            শব ক'রে আজ শয়ন, হে শিব, জানাও তুমি আছ।
	
            মরায় ভরা ধরায়, মরণ! তুমিই শুধু বাঁচো-
	
	এই       শেষের মাঝেই অশেষ তুমি, করছি তোমায় বরণ॥
	
                    জ্ঞান-বুড়ো ঐ বলছে জীবন মায়া,
	
                    নাশ কর ঐ ভীরুর কায়া ছায়া!
	
            মুক্তি-দাতা মরণ! এসো কাল-বোশেখির বেশে;
	
            মরার আগেই মরলো যারা, নাও তাদের এসে।
	
            জীবন তুমি সৃষ্টি তুমি জরা-মরার দেশে,
	
	তাই     শিকল বিকল মাগ্ছে তোমার মরণ-হরণ-শরণ॥ 
প্রকাশ ও রচনাকাল: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।   
গানটি 'বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা'র 'কার্তিক ১৩২৮' সংখ্যায় 
প্রথম 
প্রকাশিত হয়েছিল।