প্রলয়-শিখা
 জাগো       কন্টকে জ্বালা হয়ে, নাগ-মুখে বিষ, 
 
কাজী নজরুল ইসলাম
	
               
বহ্নিশিখা
মেলি
		     শতদিকে শতলেলিহান রসনা
	
		জাগো      বহ্নিশিখা স্বাহা দিগ্-বসনা!
	
		জাগো     রুদ্রের ললাটের রক্ত-অনল,
	
		জাগো     বজ্র-জ্বালা বিদ্যুৎ-ঝলমল!
	
		জাগো     মহেন্দ্র-তপোভঙ্গের অভিশাপ,
	
		জাগো     অনঙ্গ-দাহন নয়নের তাপ।
	
		জাগো     ভাগীরথী-কূলে-কূলে চুল্লি-শ্মশান,
	
		জাগো     অস্ত-গোধূলি-বেলা দিবা-অবসান!
	
		জাগো     উদয়প্রাতের ঊষা রক্তশিখা,
	
		জাগো     সূর্যের টিপ পরি জয়ন্তিকা!
	
		জাগো     ক্রোধাগ্নি অবমানিতের বক্ষে,
	
		জাগো     শোকাগ্নি নিরশ্রু রাঙা চক্ষে!
	
		জাগো     নিশ্চুপ সয়ে-থাকা ধূমায়িত রোষ,
	
		জাগো     বাণী-মূক কন্ঠে অশনি-নির্ঘোষ!
	
		জাগো     খাণ্ডব-দাহন ভীমা দাহিকা,
	
		মরু        বিদ্রূপ-হাসি জাগো হে মরীচিকা।
জাগো     বাড়ব-অনল জ্বলে, বনে দাবানল,
		
			
				জাগো     অগ্নি-সিন্ধু-মন্থন হলাহল!
		
			
				জাগো      বহ্নিরুপী তরু-শুষ্ক-জ্বালা,
		
			
				জাগো      তরলিত অগ্নি গো সুরা-পেয়ালা।
		
			
				জাগো      প্রতিশোধরূপে উৎপীড়িত বুকে,
		             
নামো স্বর্গে অভিশাপ উল্কা-মুখে!
		
			
				এসো      
ধূমকেতু-ঝাঁটা হাতে ধূমাবতী,
		
			
				এসো      
ভস্মের টিপ পরি অশ্রুমতী,
		
			
				জাগো      
আলো হয়ে রবি-শশী-তারকা-চাঁদে,
		
			
				এসো      
অনুরাগ-রাঙা হয়ে নয়ন-ফাঁদে।
		
		
			
				এসো      
		আলেয়ার আলো হয়ে, নিশি-ডাক শিস্।
		
			
				এসো      
		ক্ষুধা হয়ে নিরন্ন রিক্ত ঘরে,
		
			
				লুটো       
		লক্ষ্মীর ভান্ডার হাহাস্বরে
		
			
				জাগো      
		ভীমা-ভয়ংকরী উন্মাদিনী,
		
			
				রাঙা        
		দীপক আগুন সুরে বীণাবাদিনী!