প্রলয়-শিখা
কাজী নজরুল ইসলাম


সমর-সঙ্গীত

        টলমল টলমল পদভরে,
        বীরদল চলে সমরে॥

খরধার তরবার কটিতে দোলে
রন ঝণণ রণ-ডঙ্কা বোলে।
        ঘন তূর্য-রোলে
       
শোক-মত্যু ভোলে
দেয় আশিস সূর্য সহস্র করে

        চলে শ্রান্ত দূর পথে
        রু দুর্গম পর্বতে,
                চলে বন্ধুবিহীন একা।
        মোছে রক্তে ললাট-কলঙ্ক-লেখা।
কাপে মন্দিরে ভৈরবী- এ কি বলিদান!
জাগে নিঃশঙ্ক শঙ্কর ত্যজিয়া শবশান!
        দোলে ঈশান-মেঘে কাল প্রলয়-নিশান !
        বাজে ম্বরু, অন্বর কাঁপিছে ডরে॥

রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এই গানটি 'আলেয়া' গীতিনাট্যে প্রস্তাবনা'র গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। উল্লেখ্য, কল্লোল পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যার 'সাহিত্য-সংবাদ' বিভাগে'  বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়া যায়। তথ্যটি হলো-

'নজরুল ইসলাম একখানি অপেরা লিখেছেন। প্রথমে তার নাম দিয়েছিলেন 'মরুতৃষ্ণা'। সম্প্রতি তার নাম বদলে 'আলেয়া' নামকরণ হয়েছে। গীতি-নাট্যখানি সম্ভবত মনোমহনে অভিনীত হবে। এতে গান আছে ত্রিশখানি। নাচে গানে অপরূপ হয়েই আশা করি এ অপেরাখানি জনসাধারণের মন হরণ করেবে।'

এই বিচারে ধারণা করা যায়, গানটি নজরুল রচনা করেছিলেন, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসের দিকে।

১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে প্রকাশিত 'নজরুল গীতিকা' গ্রন্থে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এই  সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ১ মাস।